সোমবার প্রকাশিত হওয়া এই ভয়াবহ ফুটেজে দেখা যায়, অভিযুক্ত অভিষেক কোষ্টি মেয়েটির গলা কেটে ফেলছে৷ কিন্তু চারপাশের লোকজন, এমনকি হাসপাতালের কর্মীরাও এ সব দেখেও কিছুই করছেন না। কেউ কেউ তো হাসপাতালের মেঝেতে রক্তাক্ত অবস্থায় মেয়েটির মৃত্যুর সময় অবলীলায় পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন।
যা নিরাময়ের জায়গা হওয়া উচিত ছিল, সেই হাসপাতালই খুনের দৃশ্যে পরিণত হয়েছে। মোবাইল ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যাচ্ছে কালো শার্ট পরা অভিষেক সন্ধ্যাকে চড় মারছে, মাটিতে ফেলে দিচ্ছে, বুকে চেপে ধরেছে এবং তার পর ছুরি দিয়ে গলা কেটে ফেলছে। এই সব ঘটনা ঘটেছে প্রকাশ্য দিবালোকে, জরুরি বিভাগের ভেতরে, ডাক্তার এবং রক্ষীদের কাছ থেকে মাত্র কয়েক মিটার দূরে। আক্রমণটি প্রায় ১০ মিনিট স্থায়ী হয়েছিল। এরপর আক্রমণকারী নিজের গলা কেটে ফেলার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়, হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায়, বাইরে পার্ক করা একটি বাইক চালু করে এবং ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
advertisement
তদন্ত শুরু করে পুলিশ জানতে পেরেছে, হত্যাকাণ্ডের সময়, ট্রমা সেন্টারের বাইরে দু’জন নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন ছিলেন। ভিতরে, হাসপাতালের একাধিক কর্মী ছিলেন, যার মধ্যে একজন ডাক্তার, নার্স এবং ওয়ার্ড বয় ছিলেন। কেউ-ই আক্রমণকারীকে থামাতে পারেনি। এই ঘটনায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়ায় রোগী এবং তাদের পরিবার আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। ট্রমা ওয়ার্ডে ভর্তি ১১ জন রোগীর মধ্যে আটজনকে একই দিনে ছেড়ে দেওয়া হয় এবং বাকিরা পরের দিন সকালে চলে যায়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সন্ধ্যা সেদিন দুপুর ২টার দিকে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়৷ তার পরিবারকে বলে যে সে ওই সরকারি হাসপাতালে প্রসূতি ওয়ার্ডে তার এক বন্ধুর শ্যালিকার সাথে দেখা করতে যাচ্ছে। অভিষেক কোষ্টি দুপুর থেকে হাসপাতালের আশেপাশে ঘুরে বেড়াচ্ছিল – সম্ভবত অপেক্ষা করছিল সন্ধ্যার জন্যই। সংঘর্ষ মারাত্মক আকার ধারণ করার আগে তারা ২২ নম্বর ঘরের বাইরে কিছু ক্ষণ কথাও বলে।
আরও পড়ুন : ধরিয়ে দিল লঙ্কার গুঁড়ো! প্রেমিকের সঙ্গে মিলে ঘাড়ে পা দিয়ে চেপে স্বামীকে খুন! পুলিশের জালে ঘাতক স্ত্রী
খুনটা খুব দ্রুত হয়েছিল, রক্তক্ষরণ মারাত্মক ছিল। ফলে সন্ধ্যা ঘটনাস্থলেই মারা যায়। বিকেল সাড়ে ৩টে নাগাদ মেয়েটির পরিবারকে খবর দেওয়া হয়। তাঁরা যখন হাসপাতালে পৌঁছন, তখনও ঘটনাস্থলে রক্তের সাগরেই সন্ধ্যার মৃতদেহ পড়ে ছিল। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে পরিবারটি হাসপাতালের বাইরে রাস্তা অবরোধ করে। রাত ১০:৩০ নাগাদ বিক্ষোভ শান্ত হয়। কিন্তু রাত ২টো পর্যন্ত উত্তেজনা আবারও ছড়িয়ে পড়ে৷ শেষমেশ কর্মকর্তারা এই অপরাধে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত অভিযুক্ত অভিষেক কোষ্ঠীকে গ্রেফতার করা হয়নি৷