২২ বছরের ওই মহিলার নাম পিঙ্কি। তিনি সংবাদ সংস্থাকে জানান, পুলিশ গ্রেফতার করার পর তাঁকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। তার পরে পেটে ব্যথা শুরু হলে তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে ওষুধ চান। কিন্তু পিঙ্কির পেটে ব্যথা তাঁদের ‘নাটক বলে মনে হয়। এ ছাড়াও মোরদাবাদের সরকারি হোমের চিকিৎসকেরা তাঁর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছেন বলে অভিযোগ করেন পিঙ্কি। রক্তক্ষরণ শুরু হওয়ার পর তাঁকে একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ডাক্তাররা ট্যাবলেট ও ইনজেকশন দিয়েছিলেন। কিন্তু এর পরেও পিঙ্কির শরীরের অবনতি ঘটে।
advertisement
যদিও জেলা আধিকারিক খবরটিকে ‘ভুয়ো’ বলে দাবি করেছেন এবং জানিয়েছেন, ‘’ওই মহিলা এখানে আসার পর আমরা তাঁকে রক্তপাত বন্ধ করার ওষুধ দিয়েছিলাম। আলট্রাসাউন্ড পরীক্ষা করতে বলা হয়। তবে আমরা তাঁর গর্ভের সন্তানের কোনও হার্টবিট শুনতে পাচ্ছিলাম না, সেই জন্য তাঁকে অন্য একটি হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। পিঙ্কির গর্ভের সন্তান কেমন আছে, সেই বিষয়ে এখনই কোনও তথ্য দেওয়া সম্ভব নয়।‘’
লকডাউনের মধ্যেই জুলাইয়ে পিঙ্কি এবং রশিদ বিয়ে করেন। কিন্তু পিঙ্কির বাড়ি থেকে এই বিয়েতে সম্মতি ছিল না। পিঙ্কির মা তাঁকে মারধরও করেছিলেন বলে দাবি করে ওই মহিলা। এমনকী মায়ের বিরুদ্ধে পুলিশে রিপোর্ট করেছিলেন পিঙ্কি।
মুসলিম ছেলেকে বিয়ে করার জন্য ‘লভ-জিহাদ’ আইন প্রয়োগ করে দম্পতিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। রশিদের পরিবার থেকেও এই বিয়ে নিয়ে খুব একটা সম্মতি ছিল না। রশিদের মা নসিম জাহান জানিয়েছেন, তাঁরা আইন কানুন বেশি বোঝেন না। উত্তরপ্রদেশের এই নয়া আইন ‘লভ-জিহাদ’ আসার পর দেশের বর্তমান পরিস্থিতি যেভাবে উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে, তাতে তাঁদের আতঙ্ক আরও বেড়ে গিয়েছে। কাগজে কলমে এই বিয়ে যাতে স্বীকৃতি পায় সেই জন্য নসিম ছেলে আর বউকে রেজিস্ট্রি করতে বলেন এবং একজন উকিলের সঙ্গে কথা বলেন।
রশিদের পরিবার মনে করেন যে উকিল হয়তো এই বিয়ের কথা কাউকে বলেছিলেন। যার জন্যই শনিবার ১০-১২ জন লোক রশিদকে এবং তাঁর ভাইকে মারধর করে ও পুলিশের কাছে নিয়ে যায়।
পুলিশের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, পিঙ্কির মা থানায় অভিযোগ করেন, তাঁর মেয়েকে জোর করে ধর্মান্তর করানোর চেষ্টা করা হয়েছে। তারপরেই পুলিশ তাঁদের গ্রেফতার করেন। বিষয়টি এখন আদালতের বিচার্য এবং এর তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছেন মোরদাবাদের পুলিশ অফিসার প্রভাকর চৌধুরী।
তবে পিঙ্কির বক্তব্য তিনি একজন সাবালিকা, তাঁকে বিয়ে করার জন্য কেউ জোর করেননি। সজ্ঞানে তিনি এই বিয়ের জন্য সম্মতি দিয়েছিলেন এবং তাঁর স্বামীকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য আর্জি জানিয়েছেন পুলিশের কাছে।