গত শুক্রবার গভীর রাতে অন্ধ্রপ্রদেশের কুর্নুলে একটি বেঙ্গালুরুগামী একটি বাসে আগুন ধরে যায়৷ সেই ঘটনায় বাসের ভিতরে আটকে পড়ে ১৯ জন যাত্রীর মৃত্যু হয়৷ দুর্ঘটনার সময় বাসে মোট ৪৪ জন যাত্রী ছিলেন৷ বাকিরা কোনওক্রমে বাসের জানলা ভেঙে বাইরে বেরিয়ে আসেন৷
পুলিশ আগেই দাবি করেছিল, ভয়াবহ এই বাস দুর্ঘটনার জন্য দায়ী একটি মোটরসাইকেল৷ দুর্ঘটনার ঠিক আগের একটি সিসিটিভি ফুটেজও গতকাল সামনে আসে৷ তাতে দেখা গিয়েছিল, দুর্ঘটনার আগে একটি পেট্রোল পাম্পে তেল ভরাতে যাওয়ার সময়ই বেপরোয়া ভাবে চলছিল ওই মোটরসাইকেলটি৷ মোটরসাইকেলের চালক এবং আরোহীও যে মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন, তাও স্পষ্ট হয়ে যায়৷
advertisement
পুলিশ জানিয়েছে, মোটরসাইকেলটি চালাচ্ছিলেন শঙ্কর নামে এক যুবক৷ পিছনের আসনে ছিলেন স্বামী নামে আর একজন৷ পুলিশ জানিয়েছে, দুর্ঘটনার আগে একটি ধাবায় খাওয়া দাওয়া এবং মদ্যপান করেছিল দু জন৷ দুর্ঘটনায় শঙ্করের মৃত্যু হলেও বেঁচে যায় স্বামী নামে পিছনের আসনে থাকা যুবক৷ গ্রেফতারির পর সে নিজেই পুলিশকে গোটা ঘটনার বিবরণ দেয়৷
তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, ২৪ অক্টোবর রাত ২ টো নাগাদ কুর্নুলের লক্ষ্মীপুরম গ্রাম থেকে তুগ্গালি গ্রামে পৌঁছে দিতে স্বামীকে নিয়ে মোটরসাইকেলে রওনা দেন শঙ্কর৷ রাত ২.২৪ মিনিটে তাঁরা একটি পেট্রোল পাম্পে তেল ভরাতে ঢোকে৷ কিন্তু সেখানে কাউকে না পেয়ে মদ্যপ অবস্থায় চিৎকার, চেঁচামেচি করেন শঙ্কর৷ তখনই বেপরোয়া ভঙ্গিতে মোটরসাইকেল চালাতে দেখা যায় তাঁকে৷ শঙ্কর যে অপ্রকৃতস্থ অবস্থায় ছিল, সিসিটিভি ফুটেজে তাও স্পষ্ট হয়ে যায়৷
ওই পেট্রোল পাম্প থেকে বেরনোর পরই দুর্ঘটনার কবলে পড়ে মোটরসাইকেলটি৷ গত কয়েকদিন অন্ধ্রপ্রদেশে বৃষ্টি হচ্ছিল৷ ফলে পিচ্ছিল রাস্তায় বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেল চালাতে গিয়ে সেটি পিছলে যায়৷ মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়েন শঙ্কর এবং স্বামী৷ পিছনের আসনে থাকা স্বামী প্রাণে বাঁচলেও শঙ্করের মাথা ডিভাইডারে গিয়ে ধাক্কা খায়৷ ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়৷
আহত অবস্থায় উঠে প্রথমে শঙ্করের কাছে যায় স্বামী৷ তখনই তিনি বুঝতে পারেন, শঙ্করের মৃত্যু হয়েছে৷ এর পর রাস্তার মাঝখানে পড়ে থাকা মোটরসাইকেলটি সরানোর চেষ্টা করে ওই যুবক৷ কিন্তু তখনই বেঙ্গালুরুগামী ওই এসি বাসটি ঘটনাস্থলে এসে পড়ে৷ মোটরসাইকেলটির উপর দিয়েই চলে যায় বাসটি৷ ফলে মোটরসাইকেলটি বাসের নীচে আটকে যায়৷ ওই অবস্থাতেই ঘষটাতে ঘষটাতে মোটরসাইকেলটিকে বেশ কিছুটা পথ নিয়ে যায় এসি বাসটি৷ যার ফলে সম্ভবত মোটরসাইকেলের ফুয়েল ট্যাঙ্ক লিক হয়ে পেট্রোল ছড়িয়ে পড়ে রাস্তার ঘর্ষণ থেকে আগুন ধরে যায়৷ মুহূর্তে সেই আগুন গোটা বাসটিকে গ্রাস করে নেয়৷ এই সবকিছু চোখের সামনে দেখে ঘাবড়ে যান স্বামী নামে ওই যুবক৷ ঘটনাস্থল ছেড়ে নিজের গ্রামের দিকে চলে যান তিনি৷ পরে সিসিটিভি ফুটেজের সূত্র ধরে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে৷
