মধ্যপ্রদেশ বন বিভাগের পক্ষ থেকে বিবৃতিতে জানা যায়, মঙ্গলবার সকাল ৭টা নাগাদ মৃত্যু হয় চিতা শাবকটির। সকালে পর্যবেক্ষক দল দেখে, মা চিতা জ্বলা তার চারটি বাচ্চা নিয়ে বসে আছে। কিছুক্ষণ বাদে সে বাচ্চাদের নিয়ে চলে যায়। তার পিছু নেয় তিনটি বাচ্চা, একটি বাচ্চা সেখানেই পড়ে থাকে। আরও খানিক বাদে পর্যবেক্ষক দল শাবকটিকে পরীক্ষা করতে যায়। তখনও সে মাথা তোলার চেষ্টা করছে। পশু চিকিৎসক সবেমাত্র চিকিৎসা শুরু করবেন, তার আগেই মৃত্যু হয় শাবকটির।
advertisement
ভারতে চিতা অবলুপ্ত হওয়ার পর প্রায় ৭০ বছর ভারতে কোনও চিতা শাবকের জন্ম হয়নি। এই প্রথম ভারতে ফের জন্ম নিয়েছিল চিতা। বন দফতর জানিয়েছে, চিতা শাবকের মৃত্যু ডারউইনের তত্ত্ব ‘সারভাইভাল অফ দ্য ফিটেস্ট’ মনে করায়। যে প্রাণী আশপাশের পরিবেশ ও আবহাওয়ার সঙ্গে দ্রুত মানিয়ে নিতে পারবে, সেই শেষ পর্যন্ত বেঁচে যাবে এবং পরবর্তী প্রজন্মর জন্ম দেবে।
এর আগে চলতি বছরের মার্চ মাসে কুনো জাতীয় উদ্যানে একটি চিতার মৃত্যু হয়েছিল। ফের এপ্রিলে আরেকটি চিতা মারা যায়। ২৭ মার্চ মৃত্যু হয় ‘সাশা’ নামে এক চিতার। কিডনি সংক্রান্ত অসুস্থতার জেরেই এই পরিণতি, জানিয়েছিলেন কুনো জাতীয় উদ্যান কর্তৃপক্ষ। তাঁদের আরও দাবি, ভারতে আনার আগে থেকেই অসুস্থ ছিল সাশা। পরবর্তীতে তার ডিহাইড্রেশনেও হয়েছিল। এপ্রিল মাসে মৃত্যু হয় উদয় নামে চিতার। দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে প্রথম দফায় যে ১২টি চিতা (৭টি পুরুষ, ৫টি মাদি) ভারতে আনা হয়েছিল, তার অন্যতম ‘সদস্য’ ছিল উদয়।
১৯৪৭ সালে ভারতের শেষ চিতাটির মৃত্যু হয়। এর পর ১৯৫২ সালে চিতাকে দেশের মধ্যে বিলুপ্ত প্রাণী বলে ঘোষণা করা হয়। এর পর, বছর তিনেক আগে ফের ভারত চিতার বাসযোগ্য করে তোলার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে কেন্দ্র। সেই মতো গতবছর দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে প্রথম দফায় ১২টি চিতা আনা হয়, যা কিনা পৃথিবীর মধ্যে প্রথম আন্তঃমহাদেশীয় স্থানান্তরণ প্রকল্প ছিল। ২০২০ সালে সুপ্রিম কোর্টও এর পক্ষেই রায় দিয়েছিল। পরীক্ষামূলক ভাবে দেশের কিছু জায়গায় আফ্রিকা থেকে আনা চিতা রাখার অনুমতি দেওয়া হয়। চিতার বংশবিস্তারের জন্য প্রাথমিক পর্যায়ে পাঁচ বছরে লক্ষ্যমাত্রা রাখে কেন্দ্র।