কাশীকে বলা হয় মুক্তি ও মোক্ষ লাভের স্থান। এমন বিশ্বাস রয়েছে, যে ব্যক্তির মৃত্যু কাশীতে হয়, সে সরাসরি বৈকুণ্ঠে চলে যায়। এই কারণেই বহু মানুষ জীবনের অন্তিম সময় কাশীতেই কাটানোর সিদ্ধান্ত নেন।
advertisement
কাশীতে এমন অনেক শ্মশান রয়েছে, যেখানে চিতা ২৪ ঘণ্টা জ্বলে। এখানে চিতার ছাই কখনও ঠান্ডা হয় না। কিন্তু এটা অনেকেই জানেন না যে, কাশীর মাটিতে পাঁচ ধরনের মৃতদেহ কখনওই দাহ করা হয় না। এমন মৃতদেহ শ্মশান থেকেও ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় এক মাঝির ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, যেখানে সে এই রহস্য ফাঁস করেছে। গঙ্গার মাঝ নদীতে দাঁড়িয়ে মাঝি জানায়, কাশীতে এই পাঁচ শ্রেণির মৃতদেহ দাহ করা নিষিদ্ধ।
কোন কোন মৃতদেহ দাহ করা হয় না? সাধু বা সন্ন্যাসী – কাশীতে সাধুদের মৃতদেহ দাহ করা হয় না। তাঁদের জলসমাধি বা থলসমাধি দেওয়া হয়। অর্থাৎ, তাঁদের দেহ গঙ্গায় ভাসিয়ে দেওয়া হয় অথবা মাটিতে সমাধিস্থ করা হয়।
১২ বছরের কম বয়সি শিশু – যদি ১২ বছরের নিচে কোনও শিশুর মৃত্যু হয়, তাহলে তাকে দাহ করা হয় না। কারণ, এই বয়সের শিশুকে ঈশ্বরের রূপ বলে মনে করা হয়। তাই ধর্মীয়ভাবে তাদের দাহে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
গর্ভবতী মহিলা – মাঝি জানায়, গর্ভবতী নারীর মৃতদেহ দাহ করলে তাঁর পেট ফেটে যেতে পারে এবং গর্ভস্থ ভ্রূণ বাইরে বেরিয়ে আসতে পারে, যা অশুভ এবং অমানবিক দৃশ্য। সেই কারণে তাঁদের দেহ দাহ করা হয় না।
সাপের কামড়ে মৃত ব্যক্তি – এমন মৃত্যুর ক্ষেত্রে বিশ্বাস করা হয়, মাথায় ২১ দিন পর্যন্ত প্রাণ বিদ্যমান থাকে। তাই মৃতদেহ কলাগাছের গুঁড়ি দিয়ে বেঁধে গঙ্গায় ভাসিয়ে দেওয়া হয়। এই বিশ্বাসও রয়েছে যে, কোনও তান্ত্রিক চাইলে এই মৃতদেহকে জীবিত করতে পারে। এজন্য দাহ নিষিদ্ধ।
কুষ্ঠ বা চর্মরোগে আক্রান্ত মৃতদেহ – যাদের মৃত্যু এমন রোগে হয়, তাঁদের দেহ দাহ করলে রোগের জীবাণু বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে, যা অন্যদের সংক্রমিত করতে পারে। জনস্বাস্থ্যের কারণেই এই নিষেধাজ্ঞা।
এই পাঁচ ধরনের মৃতদেহ দাহ করা হয় না, এটা শুধু ধর্মীয় রীতির কারণে নয়, কিছুটা বিজ্ঞানসম্মত কারণও জড়িয়ে রয়েছে…