কর্ণাটক হাইকোর্ট বুধবার একটি বড় সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে। কর্ণাটক হাইকোর্টের নির্দেশ র্যাপিডো, ওলা, উবার মতো বাইক ট্যাক্সি কোম্পানিগুলি রাজ্যে কাজ করতে পারবে না যতক্ষণ না সরকার মোটর যানবাহন আইন, ১৯৮৮ এর অধীনে নিয়ম এবং গাইডলাইন তৈরি করে। কোর্ট সরকারকে ৬ সপ্তাহের মধ্যে এই পরিষেবাগুলি বন্ধ করার এবং ৩ মাসের মধ্যে নিয়ম তৈরি করার আদেশ দিয়েছে।
advertisement
আরও পড়ুন: গরমের ‘সুপার ফ্রুট’, তবু সাবধান! এই কয়েকটি রোগ থাকলে ভুলেও ছোঁবেন না তরমুজ, কাদের বারণ? জেনে নিন
বিচারপতি বি এম শ্যাম প্রসাদ বলেছেন যে র্যাপিডো এবং অন্যান্য কোম্পানিগুলিকে ৬ সপ্তাহের মধ্যে তাদের বাইক ট্যাক্সি পরিষেবা বন্ধ করতে হবে। তিনি আরও বলেছেন যে যতক্ষণ না সরকার নিয়ম তৈরি করে, ততক্ষণ পরিবহন বিভাগ মোটরসাইকেলকে পরিবহন যানবাহন হিসাবে নিবন্ধন করতে পারবে না এবং এর জন্য পারমিট দিতে পারবে না।
কর্ণাটকের পরিবহন মন্ত্রী রামলিঙ্গা রেড্ডি জানিয়েছেন, কোর্টের সিদ্ধান্তটি গুরুত্বের সঙ্গেই পর্যবেক্ষণ করবে সরকার। তিনি জানান, ‘‘কোর্ট ৬ সপ্তাহের সময় দিয়েছে, তাই আমরা এখনই কোনও কঠোর পদক্ষেপ নেব না। সরকারকে নিয়ম তৈরি করার জন্য ৩ মাস সময় দেওয়া হয়েছে, আমরা সেই অনুযায়ী কাজ করব।’’
এই প্রসঙ্গে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন র্যাপিডোর একজন মুখপাত্র। তিনি জানিয়েছেন, ‘‘কোর্ট ৬ সপ্তাহ পরে বাইক ট্যাক্সি বন্ধ করতে বলেছে এবং পরিবহন বিভাগকে এখনই কোনও পদক্ষেপ না নিতে বলেছে। র্যাপিডো কর্ণাটকের কোম্পানি এবং আমরা আমাদের লক্ষ লক্ষ বাইক ট্যাক্সি ড্রাইভারদের নিয়ে উদ্বিগ্ন। আমরা পুরো সিদ্ধান্তটি দেখার পরে আইনি পদক্ষেপ নেব।’’
কোর্টে শুনানির সময় আইনজীবী অরুণ কুমার জানিয়েছেন যে ওলা এপ্রিল ২০২৪ থেকে বাইক ট্যাক্সি শুরু করেছিল। আদালত ২০১৯ সালের একটি কমিটির রিপোর্টের উল্লেখ করেছে, যেখানে বাইক ট্যাক্সির ট্রাফিক এবং নিরাপত্তার উপর প্রভাবের কথা বলা হয়েছিল। কোর্টের মতে, নিয়ম ছাড়া এই পরিষেবাগুলি চলতে পারবে না। বাইক ট্যাক্সি সংক্রান্ত এই নির্দেশ মানতে হবে সমস্ত কোম্পানিগুলিকে।
র্যাপিডোর মালিক কোম্পানি রোপ্পেন ট্রান্সপোর্টেশন ২০১৬ সালে কর্ণাটকে বাইক ট্যাক্সি শুরু করেছিল। এটি সস্তা এবং দ্রুত পরিষেবার জন্য বিখ্যাত হয়েছিল। কিন্তু পরিবহন বিভাগ এটিকে অবৈধ বলেছিল, কারণ সাদা নম্বর প্লেটের বাইক (ব্যক্তিগত যানবাহন) বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার করা যায় না।
এরপর ২০১৯ সালে ২০০ এর বেশি বাইক এবং ২০২১ সালে ১২০ বাইক আটক করা হয়। অটো এবং ক্যাব ইউনিয়নগুলিও এর বিরোধিতা করেছিল, কারণ তাদের রোজগারও এতে প্রভাবিত হচ্ছিল।
র্যাপিডো হাইকোর্টে একটি আবেদন দায়ের করেছিল যে সরকার তাদের পরিষেবায় হস্তক্ষেপ না করে এবং বাইককে পরিবহন যানবাহন হিসাবে নিবন্ধন করার অনুমতি দেয়। ২০২১ সালে সরকার কর্ণাটক ইলেকট্রিক বাইক ট্যাক্সি স্কিম শুরু করেছিল, যেখানে শুধুমাত্র ইলেকট্রিক বাইককে অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। সেই বছর কোর্ট র্যাপিডোর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপে স্থগিতাদেশ দিয়েছিল। এখন এই নতুন সিদ্ধান্ত বাইক ট্যাক্সি কোম্পানিগুলির কাছে বড় ধাক্কা।