ঠিক কী হয়েছিল? পুলিশ জানিয়েছে, স্কুলের অনুষ্ঠানের জন্য স্বাধীনতা যোদ্ধা ভগৎ সিংয়ের ফাঁসির দৃশ্যের মহড়া চলাকালীন গলায় ফাঁস লেগে মৃত্যু হয়েছে সঞ্জয় গৌড়া নামে এক ছাত্রের। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার ৷ সন্ধেবেলায় কর্ণাটকের চিত্রদুর্গ জেলায় এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে। তবে স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, তেমন কোনও চরিত্র দেওয়াই হয়নি সঞ্জয়কে। এই দাবি অবশ্য মানতে নারাজ সঞ্জয়ের অভিভাবকরা। তাদের অভিযোগ, স্কুল থেকেই ওই চরিত্রটি দেওয়া হয়েছিল সঞ্জয়কে। তার বাবা নাগারাজা জানান, তিনি ও তাঁর স্ত্রী মিলে ডিসি-র অফিসের কাছে একটি চায়ের দোকান চালান। প্রতিদিন সেখানেই আসত সঞ্জয়। তবে শনিবার সে আসেনি। ফলে তাঁরা রাত ৮টা নাগাদ বাড়ি ফিরে যান। ঘরে ঢুকে দেখেন সিলিং ফ্যান থেকে ফাঁস লাগিয়ে ঝুলছে সঞ্জয়। সঙ্গে সঙ্গে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ঘটনার পরেই চিত্রদুর্গ এক্সটেনশন পুলিশের তরফে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
advertisement
পুলিশ সূত্রে খবর, এসএলভি স্কুলে সপ্তম শ্রেণির ছাত্র ছিল সঞ্জয়। তার স্কুলে কন্নড় রাজ্যোৎসব দিবস পালিত হওয়ার কথা ছিল। সেই অনুষ্ঠানের মহড়া দিতে গিয়েই সে এমন কাণ্ড ঘটিয়েছে। গত কয়েক দিন ধরেই চলছিল তার মহড়া। কিন্তু শনিবার সন্ধেবেলায় যখন মা-বাবা বাড়িতে ছিল না, সেই সময়ই ভগৎ সিংয়ের ফাঁসির দৃশ্যটির মহড়া দিচ্ছিল সে। সিলিং ফ্যানে দড়ির ফাঁস ঝুলিয়ে সেই মহড়া চলছিল। এর জন্য সে একটি কালো রঙের হুডও পরে নিয়েছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত দড়ির ফাঁস শক্ত হয়ে চেপে বসে ওই ছাত্রের গলায়। ফলে শ্বাসরোধ হয়ে মৃত্যু হয় তার।
আরও পড়ুন- শুভেন্দুর গড়ে কুণালের গৃহপ্রবেশ, পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় পেলেন বিশেষ দায়িত্ব
ছাত্রের এ-হেন মর্মান্তিক পরিণতিতে শোকস্তব্ধ স্কুল কর্তৃপক্ষও। ওই স্কুলের প্রিন্সিপাল কোট্টুরেশ কেটি-র কথায়, “সঞ্জয় খুবই মেধাবী ছাত্র ছিল। এমনকী স্কুলে ক্লাসে এবং এক্সট্রা ক্যারিকুলার কার্যকলাপে বরাবরই প্রথম স্থানটা বাঁধা থাকত তার জন্যই। আর যে অনুষ্ঠানের জন্য প্রস্তুতি চলছিল, সেটা আমাদের কন্নড় সংস্কৃতির সঙ্গে যুক্ত। আর এই অনুষ্ঠানে সন্তানদের আগ্রহের বিষয়গুলো সংশ্লিষ্ট শ্রেণী শিক্ষক বা শিক্ষিকাকে জানানোর জন্য অভিভাবকদের কাছে আর্জি জানিয়েছিলাম আমরা। তবে ভগৎ সিং কিন্তু আমাদের অনুষ্ঠানের অংশ ছিল না।” এমনকী প্রিন্সিপাল এ-ও দাবি করেছেন যে, এই অনুষ্ঠানের জন্য সঞ্জয়কে কোনও চরিত্র দেওয়া হয়নি স্কুলের তরফে। সে-নিজেই নিজের মতো করে ভগৎ সিংয়ের চরিত্র করার চেষ্টা করেছে।
আরও পড়ুন- কয়েক মাস পর রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন, তার আগে ‘ছাই’ আর ‘লালমাটি’-র বিশেষ চাহিদা
যদিও বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ডিডিপিআই রবিশঙ্কর রেড্ডি জানিয়েছেন, তিনি স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সমস্ত তথ্য সংগ্রহ করেছেন। তবে স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, তাঁরা কখনওই সঞ্জয়কে ভগৎ সিংয়ের চরিত্রে অভিনয় করতে বলেননি। আগে সে সাঙ্গোলি রায়ান্না-সহ অন্যান্য চরিত্রে অভিনয় করেছে।
কিন্তু স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি উড়িয়ে দিয়ে সঞ্জয়ের বাবা নাগারাজের অবশ্য বক্তব্য, “আমার ছেলে পড়াশোনা থেকে শুরু করে এক্সট্রা ক্যারিকুলার কার্যকলাপে খুবই ভাল ছিল। স্কুল থেকেই ওকে ভগৎ সিংয়ের চরিত্র করতে বলা হয়েছিল। ওই ভূমিকায় অভিনয়ের জন্য আমার ছেলে পোশাক এবং জরুরি জিনিসপত্রেরও ব্যবস্থা করেছিল।”