ত্রিপুরার শান্তির বাজারে সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এই কথা বলেন ভারতীয় জনতা পার্টির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা। পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নয় বছরের শাসনে দেশের মানুষের ছবি ও ভাগ্য দুটির পরিবর্তন হয়েছে।
২০১৪ সালের আগের ভারতের নাম দুর্নীতিগ্রস্ত দেশগুলোর তালিকার মধ্যে ছিল। তখন প্রায় প্রতিদিনই নতুন নতুন দুর্নীতির খবর প্রকাশ হত। আকাশ থেকে শুরু করে জমি ও পাতাল সব জায়গাতেই দুর্নীতি করেছে পূর্বতন ইউপিএ সরকার।
advertisement
আরও পড়ুন- একটা ট্রেন তৈরি করতে কত টাকা খরচ হয় রেলের? অবাক করে দেবে ট্রেনের দাম
তৎকালীন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সীমান্তে সড়ক নির্মাণ করার বিপক্ষে ছিলেন। অথচ চীন তাদের সীমান্তে উন্নত সড়ক স্থাপন করে রেখেছে। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর নরেন্দ্র মোদি সীমান্ত এলাকায় ১৩হাজার কিলোমিটারের বেশি নতুন সড়ক নির্মাণ করে দেশকে সুরক্ষিত করেছেন।
সেই সঙ্গে দেশকে দুর্নীতি থেকে টেনে তুলে উন্নয়নের শিখরে নিয়ে এসেছেন। বংশবাদ থেকে বের করে উন্নয়নের ধারায় নিয়ে এসেছেন দেশকে। এখন ভোট ব্যাংকের রাজনীতি থেকে সরিয়ে উন্নয়ন ও রিপোর্ট কার্ডের শিবিরে এসেছে দেশ।
তাই নরেন্দ্র মোদির আসার সঙ্গে সঙ্গে সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে কাজের ধারা পরিবর্তন এনেছেন। আগে দৈনিক গড়ে ১২কিমি জাতীয় সড়ক তৈরী হতো, এখন গড়ে প্রতিদিন প্রায় ২৯কিমি জাতীয় সড়ক তৈরী হচ্ছে, তাই গত ৯ বছরে দেশে ৫৪হাজার কিমি জাতীয় সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে।
ত্রিপুরায় গত ৬ বছরে তিনশো কিমি জাতীয় সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। এই সময় মোট ৬টি জাতীয় সড়ক নির্মাণ করা হচ্ছে রাজ্যে। একই ভাবে দেশে নতুন করে ৩৭হাজার কিমি রেললাইনকে বৈদ্যুতি করণ করা হয়েছে। আগরতলা থেকে বাংলাদেশের আখাউড়া পর্যন্ত রেলপথ ভারত সরকারের টাকায় নির্মাণ করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন- গল্প হলেও সত্যি! আকাশ ছোঁয়ার উড়ান দিল দুই কৃষক পরিবারের মেয়ে
এই রেলপথ দিয়ে খুব দ্রুত ত্রিপুরা থেকে কলকাতা যাওয়ার সম্ভাব্য হবে। স্বাধীনতা সত্তর বছরে সারা ভারতের ৭০টি বিমানবন্দর তৈরি হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নয় বছরের দেশে ৭৪টি নতুন বিমানবন্দর তৈরি হচ্ছে। এর মধ্যে নতুন ছয়টি বিমানবন্দর নির্মাণ করা হচ্ছে উত্তর পূর্বাঞ্চলে।
একই ভাবে গ্রামীন এলাকাগুলি থেকে শহরে সহজেই যোগাযোগ করা যায়। তার জন্য নতুন নতুন রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে। এক দেশের মধ্যে দুটি আলাদা আলাদা পতাকা এবং নিয়মকানুন চলতে পারে না। তাই জম্মু-কাশ্মীর থেকে ধারা ৩৭০ সরিয়ে জম্মু-কাশ্মীরকে দেশের মূল স্রোতের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে।
এখন আত্মনির্ভর দেশ গড়ে তোলার কাজ চলছে, এর অংশ হিসেবে সামরিক অস্ত্র এবং সরঞ্জামের ৯০শতাংশ এখন ভারতেই তৈরী হচ্ছে। চীন ডুকলাম সীমান্তে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করলে দেশের সেনাবাহিনী সামনে দাঁড়িয়ে শক্ত হাতে তাদের আটকে দিয়েছে। দেশে এখন সুশাসন চলছে।
পূর্বতন প্রধানমন্ত্রী প্রায়ত রাজীব গান্ধী বলতেন, দিল্লী থেকে ১ টাকা পাঠালে ৮৫পয়সা কে বা কারা নিয়ে যায় শুধু ১৫পয়সা সুবিধা প্রকৃত মানুষের হাতে পৌঁছায়। কিন্তু এখন সরাসরি মানুষের একাউন্টে টাকা পৌঁছে যাচ্ছে।
এভাবেই প্রায় ২২লক্ষ ৫০হাজার কোটি টাকা মানুষের একাউন্টে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। কমন সার্ভিস সেন্টারের মাধ্যমে ২২লক্ষ গ্রামে কাজের সংস্থান হয়েছে এবং সরকারি সুবিধার তথ্য জানা যাচ্ছে। খেলনা থেকে শুরু করে গাড়ী তৈরীর ক্ষেত্রে জাপানের মতো দেশকে পেছনে ফেলে ভারত এগিয়ে যাচ্ছে।
পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম এক সঙ্গে সাড়ে চারশো বিমান কেনার অর্ডার দিয়েছে ভারত। দেশের এই উন্নতি দেখে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বলছেন, ২০৫০সালের মধ্যে ভারত বিশ্বের তৃতীয় শক্তিশালী অর্থনীতির দেশে পরিণত হবে।
নাড্ডা বামেদের তীব্র সমালোচনা করে বলেন, তারা যেখানেই দাঁড়ায় সেখানেই বলতে থাকে ভারত গরিব দেশ। তিনি তাদের উদ্দেশ্য প্রশ্ন করেন যদি ভারত গরিব হয় তবে এত উন্নতি হচ্ছে কী করে! অস্ট্রেলিয়া, জার্মানি, আমেরিকার মতো দেশকে পেছনে ফেলে দেশের অর্থনীতি প্রথম স্থানে দাঁড়িয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় সারা দেশে চার কোটি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। এর মধ্যে সাড়ে তিন লক্ষ ঘর ত্রিপুরার নির্মাণ করা হয়েছে।