যুদ্ধের এই আবহে অনেক প্রাক্তন সৈনিক আছেন, যাঁরা অবসর গ্রহণের পরেও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে লড়াই করতে প্রস্তুত। আর তাঁরা সরকারের কাছে সীমান্তে যাওয়ার জন্য আবেদন জানাচ্ছেন। এমনই একজন সৈনিক হলেন নায়েক রাজ বাহাদুর পাল, যিনি উত্তরপ্রদেশের জৌনপুরের একটি ছোট্ট গ্রাম থাকেন। তিনি ১৯৯৯ সালের কার্গিল যুদ্ধে অসাধারণ সাহসিকতা প্রদর্শন করেছিলেন। যুদ্ধের সময় তিনি প্রায় ২০০টি গুলি খেয়েছিলেন, কিন্তু তাঁর মনোবল কখনও ভেঙে পড়েনি।
advertisement
আরও পড়ুন- ঘুম- বাথরুম বন্ধ, পাকিস্তানে বন্দিদশায় অকথ্য অত্যাচার! এখনও আতঙ্কে বিএসএফ জওয়ান পূর্ণম
উল্লেখ্য, রাজ বাহাদুর পাল ১৯৮৪ সালে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। সেনাবাহিনীতে থাকাকালীন তিনি বিভিন্ন ফ্রন্টে দায়িত্ব পালন করেছিলেন, কিন্তু কার্গিল যুদ্ধের সময় তিনি সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছিলেন। ১৯৯৯ সালের জুলাই মাসে, যখন পাকিস্তানি অনুপ্রবেশকারীরা কার্গিলের শৃঙ্গগুলি দখল করে, তখন ভারতীয় সেনাবাহিনী অপারেশন বিজয়ের অধীনে তাদের তাড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করে। এই অভিযানে, নায়ক রাজ বাহাদুর পাল সামনের সারিতে ছিলেন। শত্রুর বাঙ্কার থেকে প্রচণ্ড গুলিবর্ষণের মধ্যেও, তিনি তাঁর সহযোদ্ধাদের যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি এগিয়ে যাওয়ার সাহস দেখিয়েছিলেন। গুলি বর্ষণ এতটাই প্রচণ্ড ছিল যে, তাঁর শরীরে প্রায় ২০০টি গুলি লেগেছিল, তবুও তিনি হাল ছাড়েননি।
একজন সৈনিক অবসর গ্রহণ করেন, তাঁর দেশপ্রেম নয় –
আজও, যখন নায়েক রাজ বাহাদুর পাল সেই দিনগুলোর কথা স্মরণ করেন, তিনি বলেন, “আমাদের গুলি করা হয়েছিল, কিন্তু তেরঙ্গাকে নত হতে দেওয়া হয়নি। আজও, যদি দেশের আমার প্রয়োজন হয়, আমি আবার বন্দুক তুলতে প্রস্তুত।” সেনাবাহিনীও তাঁর সাহসিকতাকে সম্মানিত করেছিল। কিন্তু রাজ বাহাদুর পাল বিশ্বাস করেন যে, দেশ যখন নিরাপদ থাকে তখনই প্রকৃত সম্মান আসে। তিনি বিশ্বাস করেন যে “সৈনিক অবসর নেয়, কিন্তু তাঁর দেশপ্রেম নয়”।
‘জিন্দা শের’ গ্রামবাসীদের জন্য একটি উদাহরণ –
গ্রামবাসীরা বীর রাজ বাহাদুর পালকে ‘জিন্দা শের’ বলে ডাকেন। রাজ বাহাদুর পালের জীবন এই উদাহরণ দেয় যে, যদি উদ্দেশ্য দৃঢ় হয়, তাহলে কোনও ক্ষতই মানুষকে দুর্বল করতে পারে না। আজ, যখন দেশের আবার ঐক্যের প্রয়োজন, তখন রাজ বাহাদুর পালের মতো বীরদের গল্প আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, ভারতমাতার পুত্ররা দেশকে রক্ষা করার জন্য সর্বদা প্রস্তুত, সে তাঁরা চাকরিতে থাকুন বা অবসরপ্রাপ্তই হন না কেন!