ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের আইসি ৪২১ বিমান হাইজ্যাক করেছিল খালিস্তানি জঙ্গিরা। পরিস্থিতি মোকাবিলায় তরুণ অফিসার হিসাবে তাঁকে পাঠানো হয়। পরে জানতে পারেন বিমানে তাঁর বাবাও রয়েছেন। সুইৎজারল্যান্ডের জেনেভায় প্রবাসী ভারতীয়দের সম্মেলনে অংশ নিয়ে এ কথা জানান জয়শঙ্কর।
advertisement
১৯৯৯ সালে কাঠমান্ডু থেকে দিল্লিগামী বিমান হাইজ্যাক করেছিল জঙ্গিরা। সেই নিয়েই নেটফ্লিক্সে তৈরি হয়েছে ওয়েব সিরিজ। হাইজ্যাকারদের ‘কোড নেম’ দেখানো হলেও আসল নাম উল্লেখ করেননি সিরিজ নির্মাতারা। এই নিয়ে বিতর্ক চলছে। জয়শঙ্কর বলেন, “সিনেমায় সরকারকে কখনওই ভালভাবে দেখানো হয় না। কিন্তু নায়ককে ভাল দেখানোটা জরুরি।“
এরপরেই ১৯৮৪ সালের ঘটনার কথা জানান জয়শঙ্কর। একদিকে সরকারের হয়ে হাইজ্যাকারদের সঙ্গে মোকাবিলা, অন্য দিকে, এক পণবন্দীর পরিবারের সদস্য হিসাবে সরকারের কাছে তদ্বির। জয়শঙ্কর বলেন, “১৯৮৪ সালেও এরকমই একটা হাইজ্যাকিং হয়েছিল। আমি তখন তরুণ অফিসার। পরিস্থিতি মোকাবিলায় টিম তৈরি করে সরকার। আমিও ছিলাম ওই টিমে। হাইজ্যাকিংয়ের ৩-৪ ঘণ্টা মা-কে পর ফোন করে বলি, আজ ফিরতে পারব না। এরকম একটা ঘটনা ঘটেছে। তখনই জানতে পারি, আমার বাবাও ওই ফ্লাইটে রয়েছেন।’’
ফ্লাইটটিকে দুবাই নিয়ে গিয়েছিল জঙ্গিরা। জয়শঙ্কর বলছেন, “সৌভাগ্যবশত, কোনও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু খারাপ কিছু হতে পারত। তবে আমার কাছে গোটা ব্যাপারটাই চমকপ্রদ। কারণ একদিকে আমি হাইজ্যাকিংয়ের উপর কাজ করা দলের অংশ। অন্য দিকে, সেই সব পণবন্দীদের পরিবারের সদস্যদের একজন ছিলাম যাঁরা সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করছিল।’’
প্রসঙ্গত ১৯৮৪ সালের ২৪ অগাস্ট দিল্লি বিমানবন্দর থেকে শ্রীনগরের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিল ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট আইসি ৪২১। চণ্ডীগড়ে বিমানটি হাইজ্যাক করে ৭ খালিস্তানি জঙ্গি। প্রত্যেকেই তরুণ এবং নিষিদ্ধ ‘অল ইন্ডিয়া শিখ স্টুডেন্টস ফেডারেশন’-এর সদস্য। তাদের দাবি ছিল, জার্নেইল সিং ভিন্দ্রাওয়ালাকে মুক্তি দিতে হবে। ৩৬ ঘণ্টা পর সরকারের কাছে আত্মসমর্পণ করে তারা। ৬৮জন যাত্রী ও ৬ জন ক্রু মেম্বারকে মুক্তি দেওয়া হয়। ওই বিমানেই ছিলেন জয়শঙ্করের বাবা কে সুব্রক্ষণ্যম। তিনি ছিলেন আইএএস অফিসার এবং প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধির অন্যতম আস্থাভাজন।