প্রতিরক্ষামন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, এই মহড়ায় পাহাড়ি ও দুর্গম এলাকার বাস্তব পরিবেশে যুদ্ধের অনুশীলন করা হবে। উচ্চ উচ্চতার কারণে মেচুকা অঞ্চলে লজিস্টিক ও পরিবহন ব্যবস্থা অত্যন্ত কঠিন, ফলে এমন পরিস্থিতিতে দ্রুত মোতায়েন, সরবরাহ ও সমন্বিত আক্রমণ পরিচালনার দক্ষতা বাড়ানোই এর অন্যতম উদ্দেশ্য। তিন বাহিনী একসঙ্গে কীভাবে সংযুক্ত কমান্ড সেন্টারের মাধ্যমে কাজ করবে, তা নিয়েও থাকবে বিশেষ প্রশিক্ষণ।
advertisement
আরও পড়ুন : ‘বিহার ভোট থেকে নজর ঘোরানোর কৌশল,’ রাহুল গান্ধির ভোটচুরির অভিযোগে প্রতিক্রিয়া বিজেপির
মহড়ায় অংশ নেবে সেনার বিশেষ বাহিনী, বায়ুসেনার বিভিন্ন হেলিকপ্টার ও পরিবহন বিমান, এবং নৌবাহিনীর আধুনিক পর্যবেক্ষণ ইউনিট। থাকবে আধুনিক ড্রোন বা ফ্রি ফ্লাইং আনম্যানড সিস্টেম, নির্ভুল নিশানাযুক্ত অস্ত্র এবং উন্নত যোগাযোগ প্রযুক্তি। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি ভারতের “থিয়েটার কম্যান্ড” নীতির বাস্তব অনুশীলন, যেখানে তিন বাহিনী একই কমান্ড কাঠামোর অধীনে কাজ করে।
অরুণাচল প্রদেশের মেচুকা উপত্যকা চিন সীমান্তের খুব কাছেই অবস্থিত, ফলে এই মহড়া ভূ-রাজনৈতিক দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ। কঠিন পার্বত্য এলাকা, ঘন জঙ্গল, সীমিত অবকাঠামো— এমন পরিবেশে বাহিনীগুলির সমন্বিত অভিযানের প্রস্তুতি এক বড় চ্যালেঞ্জ। এই মহড়ার মাধ্যমে বাহিনীর অভিযানের গতি, সংযোগব্যবস্থা ও লজিস্টিক সক্ষমতা বাস্তবে যাচাই করা হবে।
প্রতিরক্ষা দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ‘পূর্বী প্রচণ্ড প্রহার’ মহড়া চলাকালীন বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে প্রযুক্তিনির্ভর যুদ্ধপরিকল্পনা এবং রিয়েল টাইম তথ্য বিনিময় ব্যবস্থায়। এতে অংশ নেবে বিভিন্ন ড্রোন ও নজরদারি সিস্টেম, যা সীমান্ত পর্যবেক্ষণ ও লক্ষ্য নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। পাশাপাশি উচ্চপর্যায়ের সিমুলেটেড যুদ্ধ পরিস্থিতিতে বিমান হামলা, স্থল অভিযান ও রসদ সরবরাহের সমন্বয়ও পরীক্ষা করা হবে।
এই মহড়ার আগে পশ্চিম সীমান্তে ‘ত্রিশূল’ নামের অনুশীলন সম্পন্ন হয়েছে। এরপর পূর্ব সীমান্তে এই মহড়া শুরু হওয়ায়, প্রতিরক্ষা মহল মনে করছে যে ভারত এখন সীমান্তের দুই প্রান্তেই সমানভাবে প্রস্তুতি জোরদার করছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি শুধু সামরিক অনুশীলন নয়, বরং একটি প্রতিরক্ষামূলক বার্তা — ভারত তার পূর্ব সীমান্তেও যে কোনও পরিস্থিতির মোকাবিলায় সম্পূর্ণ প্রস্তুত।
‘পূর্বী প্রচণ্ড প্রহার’-এর মাধ্যমে ভারতীয় বাহিনীর প্রযুক্তিগত সক্ষমতা, তথ্য ভাগাভাগির কাঠামো এবং সমন্বিত যুদ্ধকৌশল আরও পরিশীলিত হবে। কঠিন ভৌগোলিক অবস্থায় যুদ্ধক্ষেত্রের অনুকরণে প্রশিক্ষণ ভারতের পূর্ব সীমান্তের প্রতিরক্ষা প্রস্তুতিকে এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেবে।
