শেষবার দেখা হয়েছিল ১৯৯৯ সালে। আঠেরো বছর পর ফের একবার আন্তর্জাতিক আদালতে মুখোমুখি দুই চির প্রতিদ্বন্দ্বী ভারত ও পাকিস্তান। এবার নয়াদিল্লির লক্ষ্য, পাকিস্তানে বন্দি কুলভূষণ যাদবের প্রাণদণ্ড রদ করা। আর তা নিয়েই আন্তর্জাতিক কোর্টে ভারতকে কোনঠাসা করতে উদ্যোগি হয়ে উঠল পাকিস্তান ৷ আন্তর্জাতিক আদালতে ভারতের সঙ্গে প্রশ্ন যুদ্ধে নেমে পড়ে পাকিস্তান ৷
advertisement
ভারতের প্রশ্ন - কুলভূষণকে ইরান থেকে অপহরণ করা হয়। সেই নথি জমা দিয়েছে ভারত। পাকিস্তানের মাটিতে গ্রেফতার নিয়ে মিথ্যে বলছে পাকিস্তান
পাক জবাব - বালুচিস্তান থেকে গ্রেফতার করা হয়। তবে গ্রেফতারি নিয়ে কোনও প্রমাণ দেয়নি পাকিস্তান
ভারতের প্রশ্ন -- কুলভূষণের বিরুদ্ধে কী অভিযোগ তা এতদিনেও স্পষ্ট নয়
পাক জবাব -- পাকিস্তানে সন্ত্রাসে জড়িত কুলভূষণ। যদিও কোথায় ও কীভাবে সন্ত্রাসে যুক্ত ছিল কুলভূষণ তা নিয়ে কোনও তথ্য প্রমাণ পেশ করেনি পাকিস্তান
ভারতের প্রশ্ন -- কুলভূষণকে আটকের তথ্য ভারতকে দেওয়া হয়নি। এমনকি চার্জশিটও ভারতকে দেয়নি পাক সরকার
পাক জবাব - প্রসঙ্গ কার্যত এড়ালেন পাক আইনজীবী
ভারতের প্রশ্ন -- ২০১৬ থেকে একবারও কুলভূষণ যাদবের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ দেওয়া হয়নি। বিদেশমন্ত্রক ১২ বার আবেদন করলেও লাভ হয়নি।
পাক জবাব -- কুলভূষণের কনসুলার অ্যাকসেস পাওয়ার অধিকার নেই। কেন তার ব্যাখ্যা দেয়নি ইসলামাবাদ
ভারতের প্রশ্ন -- ভিয়েনা কনভেনশনকে বুড়ো আঙুল দেখানো। কুলভূষণের ফাঁসি হলে কনভেনশনের ৩৬ নম্বর ধারা লঙ্ঘিত হবে
পাক জবাব- কুলভূষণ ‘চর’। তাঁর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ রয়েছে। তাই ভিয়েনা চুক্তি প্রযোজ্য নয়।
ভারতের প্রশ্ন -- কোথায় ও কীভাবে রাখা হয়েছে কুলভূষণকে
পাক জবাব - আন্তর্জাতিক আদালেত প্রসঙ্গ তুললেনই না পাক আইনজীবী
ভারতের দাবি
- ভিয়েনা চুক্তি অগ্রাহ্য করে কুলভূষণের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে
- ভারতীয় দূতাবাস কুলভূষণের সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করে
- কিন্তু, সেই আবেদনে কান দেয়নি পাকিস্তান
- কূটনৈতিক স্তরে ব্যর্থতার পর ৮ মে আন্তর্জাতিক আদালতে আবেদন করে ভারত
- ভারতের দাবি, ভুয়ো অভিযোগে একজন নির্দোষকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হচ্ছে
নয়াদিল্লির সেই আবেদনের ভিত্তিতে সোমবার নেদারল্যান্ডসের হেগে, দ্য গ্রেট হল অব জাস্টিসে এনিয়ে শুনানি শুরু হতে চলেছে। আন্তর্জাতিক আদালতে কীভাবে চলে বিচার?
কীভাবে শুনানি?
- আন্তর্জাতিক আদালত সাধারণত ২ ধরনের মামলার বিচার করে
- প্রথমত, দুটি দেশের মধ্যে বিতর্কিত কোনও বিষয় নিয়ে আবেদন করা যেতে পারে আন্তর্জাতিক আদালতে
- এছাড়া, কোনও দেশ আইনি পরামর্শ দেওয়ার অনুরোধ করতে পারে ওই আদালতে
- এই আদালতে শুনানি কয়েক মিনিট থেকে কয়েক ঘণ্টাও চলতে পারে
- পরবর্তী শুনানির দিনক্ষণ ওয়েবসাইটে দিয়ে দেওয়া হয়
- এই ধরনের পাবলিক হেয়ারিংয়ে যে কেউ হাজির হতে পারেন
এর আগে, ১৯৯৯ সালে কচ্ছের রানে ভারতের সীমানার মধ্যে ঢুকে পড়ে পাকিস্তানি নৌসেনার একটি বিমান। তা গুলি করে নামায় ভারতীয় সেনা। সেই ঘটনায় ১৬ জন পাক অফিসারের মৃত্যু হয়। তাতে আন্তর্জাতিক আদালতে যায় ইসলামাবাদ। সেই মামলায় চার দিনের মাথাতেই অবশ্য জয় পায় ভারত।