এই উদ্যোগ ইউরোপ এবং এশিয়ার ৯টি দেশকেও অন্তর্ভুক্ত করেছে, বৈজ্ঞানিক দক্ষতা বিনিময়কে সহজতর করে তুলেছে। এবং ভারত এই প্রচেষ্টা সম্প্রসারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশগ্রহণকারী হিসেবে কাজ করছে।
ভারত সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগ PERBAS এবং DeCarbFaroe উভয় উদ্যোগের জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদান করছে।
advertisement
‘‘বেসাল্ট গঠনে CCS-এর বিজ্ঞান বোঝার ক্ষেত্রে আমাদের ল্যাব সর্বাগ্রে ছিল’’, এই প্রকল্পের প্রধান গবেষক ড. জ্যোতির্ময় মল্লিক বলেন। ‘‘আমাদের সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে তাপমাত্রা, ছিদ্রতা এবং স্থানীয় খনিজবিদ্যার মতো বিষয়গুলি দ্রুত এবং নিরাপদ CO₂ খনিজকরণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং আমাদের মডেলগুলি ভবিষ্যতের স্টোরেজ প্রকল্পগুলির জন্য সর্বোত্তম স্থান নির্বাচন করতে সহায়তা করে’’, ড. মল্লিক বলেন।
এনার্জি ইনফরমেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (২০০৯) পূর্বাভাস অনুসারে, ২০৩০ সালের মধ্যে উন্নয়নশীল দেশগুলি বিশ্বব্যাপী জ্বালানি বৃদ্ধিতে ৫৯% এবং কয়লার ব্যবহার বৃদ্ধিতে ৯৪% অবদান রাখবে, যার ফলে বিশ্বব্যাপী গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনও ৯১% বৃদ্ধি পাবে।
মূলত জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারের ফলে সৃষ্ট CO₂ নির্গমন জলবায়ু পরিবর্তনের প্রধান চালিকাশক্তি, যা আবহাওয়া এবং জীববৈচিত্র্যের উপর প্রভাব ফেলছে। ভারত বিশ্বব্যাপী তৃতীয় বৃহত্তম কার্বন নির্গমনকারী দেশ হয়ে উঠছে এবং কয়লার উপর উল্লেখযোগ্য নির্ভরতা রয়েছে, তাই কার্বন ক্যাপচার অ্যান্ড স্টোরেজ (CCS) একটি গুরুত্বপূর্ণ সমাধান প্রদান করে, যা ২০৬০ সাল পর্যন্ত কয়লার ব্যবহার অব্যাহত রাখার অনুমতি দেয়। IISER ভোপালের আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস বিভাগের ড. জ্যোতির্ময় মল্লিকের নেতৃত্বে জিওডায়নামিক্স অ্যান্ড পেট্রোলিয়াম জিওলজি ল্যাব ডেকান ট্র্যাপস বেসাল্টে ভারতের প্রথম CO₂ ইনজেকশন ওয়েল স্থাপন করছে।
‘‘সিসিএস প্রযুক্তি বায়ুমণ্ডলে নির্গত হওয়ার আগে শিল্প নির্গমন থেকে CO₂ নিষ্কাশন করে। জলের সঙ্গে মিশ্রিত CO₂ ভূতাত্ত্বিক কাঠামোতে, বিশেষ করে লবণাক্ত জলস্তর বা ডেকান ট্র্যাপ বেসাল্ট শিলায় স্থায়ী সংরক্ষণের জন্য ভূগর্ভস্থ গভীরে প্রবেশ করানো হয়’’, ড. মল্লিক বলেন।
৫০০,০০০ বর্গকিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত ডেকান ব্যাসল্ট, যথেষ্ট গভীরতা-সহ, ভারতে স্বতন্ত্র CCS সুযোগ এনে দিয়েছে। ছিদ্রযুক্ত বেলেপাথরে ঐতিহ্যবাহী সংরক্ষণের তুলনায়, ব্যাসল্ট জলের সঙ্গে মিলিত হয়ে দ্রুত CO₂ খনিজকরণ সক্ষম করে, যা বছরের পর বছর ধরে স্থিতিশীল কার্বনেট খনিজ তৈরি করে।
এই খনিজকরণ সহস্রাব্দ ধরে কার্বন সঞ্চয় নিশ্চিত করে। ডেকান ট্র্যাপের খনিজ গঠন প্লাজিওক্লেজ ফেল্ডস্পার এবং পাইরোক্সিনে সমৃদ্ধ কার্যকর CO₂ রূপান্তরকে সমর্থন করে, যদিও আঞ্চলিক ব্যাসল্ট বৈশিষ্ট্যগুলির বিশদ মূল্যায়ন প্রয়োজন।
প্রসঙ্গত, PERBAS-এর আইসল্যান্ড এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সফল পরীক্ষার কথা না বললেই নয়, যেখানে দুই বছরের মধ্যে CO₂ খনিজকরণ ঘটেছিল, ডেকান ট্র্যাপে সংরক্ষণের পদ্ধতি উন্নত করার জন্য এই জ্ঞান প্রয়োগ করা হবে।
আইআইএসইআর ভোপাল এবং সিএসআইআর-এনজিআরআই ডিকার্বফ্যারোর অধীনে কূপ খনন শুরু করছে, স্কেলেবল কার্বন সিকোয়েস্টেশনের জন্য বেসাল্ট CO₂ খনিজকরণের উপর মনোনিবেশ করছে। ‘‘এই বহুজাতিক অংশীদারিত্ব জ্ঞান বিনিময়কে উৎসাহিত করে এবং পরিষ্কার শক্তি গ্রহণকে সমর্থন করে ভারতকে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে স্থান দেয় ৷’’ জানালেন ড. মল্লিক।