কিন্তু সেই বিয়ের স্বপ্ন দ্রুত দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়। বিয়ের এক মাস কাটতে না কাটতেই শুরু হয়েছিল নির্যাতন। স্বামী রামবাবু, যিনি পেশায় একজন গ্রাম সার্ভেয়ার, প্রতিদিন রাতে মদ্যপ অবস্থায় বাড়ি ফিরে শ্রীবিদ্যাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে অত্যাচার করতেন।
আরও পড়ুন: খাবার পরেই চা খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে? ক্ষতি করছেন শরীরের, কেন জানুন…
advertisement
এই নির্যাতন ছিল অসহনীয়। রামবাবু শুধু মারধর করেই ক্ষান্ত হতেন না, তিনি শ্রীবিদ্যাকে নানাভাবে অপমানও করতেন। একবার অন্য এক মহিলার সামনে তাকে “অযোগ্য” বলে অভিহিত করেছিলেন, যা শ্রীবিদ্যার মনে গভীর আঘাত হেনেছিল।
নোটে শ্রীবিদ্যা লিখে গেছেন সেইসব ভয়ঙ্কর রাতের কথা, যখন রামবাবু তাকে নৃশংসভাবে মারধর করতেন, এমনকি বিছানায় তার মাথা ঠুকে দিতেন।
প্রতিদিনকার এই নিরন্তর অত্যাচার শ্রীবিদ্যার জীবনকে নরকে পরিণত করেছিল। তার পক্ষে এই যন্ত্রণা আর সহ্য করা সম্ভব হচ্ছিল না। হয়তো তাই, এই চরম পদক্ষেপ নেওয়ার আগে তার শেষ আশ্রয় ছিল কলম আর কাগজ।
তার সুইসাইড নোটে তিনি তার এই অবস্থার জন্য স্বামী রামবাবু এবং শ্বশুরবাড়ির লোকেদের দায়ী করে গেছেন। তার শেষ আবেদন ছিল, “তাদের কোনো পরিস্থিতিতেই রেহাই দেওয়া উচিত নয়।”
সবচেয়ে হৃদয়বিদারক ছিল তার ভাইয়ের জন্য লেখা শেষ কয়েকটি লাইন। সামনেই রাখিবন্ধন, ভাই-বোনের ভালোবাসার উৎসব। কিন্তু শ্রীবিদ্যা জানতেন, এইবার তিনি আর তার ভাইকে রাখি পরাতে পারবেন না। তাই তার শেষ বার্তা ছিল, “ভাই, নিজের খেয়াল রেখো। এইবার হয়তো আমি তোমাকে রাখি পরাতে পারব না।” এই কথাগুলো যেন শুধু একটি সুইসাইড নোটের অংশ নয়, বরং একজন নির্যাতিতার অন্তরের গভীর কষ্টের প্রতিচ্ছবি।