তাই একটু অন্য রকম ভাবনা চিন্তা করার সময় এসেছে। তেমনই ভাবনার প্রতিফলন দেখা গেল রাজস্থানে। গোবরের প্রলেপ যে ঘর ঠান্ডা রাখতে পারে তা ভারতের মতো দেশে অজানা নয়। আগে গ্রামের মাটির দেওয়ালে, মেঝেতে গোবর নিকোনো হত। এবার সেই পদ্ধতির কথা মাথায় রেখেই নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবনের কথা ভাবছেন গবেষক।
আরও পড়ুন: পুরনো গয়নায় কি হলমার্ক করা যাবে? না করা হলে কী হবে ? কোনও দামই কি পাওয়া যাবে না ?
advertisement
গোবর দিয়ে তৈরি ইট, সেই ইটের তৈরি বাড়ি— ভাবতে অবাক লাগলেও, পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে এই নিয়েই। এই গবেষণা সফল হলে বাড়ি পরিবেশবান্ধব হবে, বাঁচবে প্রকৃতি, আবার মানুষের স্বাস্থ্যের উপরও ভাল প্রভাব ফেলবে।
যোধপুরের এমবিএম বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. প্রিয়াঙ্কা মেহতা ২০২০ সালে এই গবেষণা শুরু করেন। যার মূল প্রতিপাদ্যই ছিল গোবর দিয়ে তৈরি ইট এবং সেই ইট ব্যবহার করে বাড়ি তৈরি করা। এর অনেক রকম সুবিধা বলে মনে করা হচ্ছে। প্রথমত, গোবরের ইটের খরচ কম হতে পারে। এগুলি ওজনেও হালকা হবে।
সেই সূত্র মাথায় রেখেই গোবর দিয়ে ইট তৈরি করা শুরু হয়। তার পরে রেডিয়েশন পরিমাপ ও তাপমাত্রা কমানোর কথা ভাবা হয়। এই বিষয়ে গবেষণা করতে গিয়ে দিল্লির টেরি ল্যাবের শংসাপত্রও পাওয়া যায়। তারপরেই শুরু হয় আসল কাজ। বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজস্ব ১০ x ১০ আয়তনের একটি ঘর তৈরি করা হয়। দেখা যায় বৃষ্টিতে ওই কক্ষের কোনও ক্ষতি হয়নি। ঘরটি একেবারে সাধারণ ঘরের মতোই ভার বহন করতে পারে। বৃষ্টি ও ঝড়ের আঘাতও সহ্য করে।
গোবরে তৈরি এসব ইটের নাম দেওয়া হয়েছে ‘ইন্ডিকাউ ইট’। ওজনে হালকা। সেই সঙ্গে ঘরের ভিতরে এবং বাইরে তাপমাত্রার ভারসাম্য বজায় রাখতেও পারে এগুলি। বিশেষত গ্রীষ্মকালে এটি ঘরকে ঠান্ডা রাখে। বৃষ্টিতেও নষ্ট হয় না। মনে করা হয় এতে ঘরের ভিতের অক্সিজেনের মাত্রা ভাল থাকবে। গোবরকে এমনিতেই অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদানে সমৃদ্ধ বলে মনে করা হয়। তাই দূষণের ঝুঁকিও কমবে বলে মনে করা হচ্ছে।