কোদাইকানাল, তামিলনাডু: দেশের যে সব জায়গায় পর্যটন কেন্দ্র একেবারে বনের গা-ঘেঁষা, প্রায় সেই সব জায়গাতেই একটা দৃশ্য খুব চোখে পড়ে। ছোট ছোট টেবিল বা বাঁশের মাচায় বা ঝুড়িতে করে মধু বিক্রি। বাজারে ব্র্যান্ডের মধু যে ভাবে বিক্রি হয় বা সরকারের তরফে খাদির দোকানে যে ভাবে বিক্রি হয়, এই সব মধুর বোতলে সেরকম কোনও সংস্থার নাম লেখা কাগজ থাকে না, থাকে না পণ্যের বিশদ বিবরণ, এক্সপায়ারি ডেটের খবর। স্রেফ মিনারেল ওয়াটারের ফাঁকা বোতলে ভরে তা বিক্রি করা হয়। দাবি করা হয়, জলের বোতলে ভরা হালকা সোনালি, প্রায় ট্যালটেলে ওই তরল না কি খাঁটি বনজ মধু। সুন্দরবনে যাঁরা বেড়াতে গিয়েছেন, তাঁরা এমন ভাবে মধু বিক্রি দেখে থাকবেন। সেই মধু কতটা আসল আর কতটা নকল, তা বিতর্কের বিষয়। তবে, তামিলনাডুর কোদাইকানালে যা বিক্রি করা হচ্ছে একই ভাবে, তা নকল মধু বলে এবার অভিযোগ উঠেছে !
advertisement
কোদাইকানালে এবার খাদ্য নিরাপত্তা বিভাগের তরফে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠেছে। বলা হচ্ছে যে এখানে বিশেষ করে মহিলা এবং অন্যান্য স্থানীয়রা এক লিটার প্লাস্টিকের জলের বোতলে নকল মধু ভরে তা পাহাড়ি মধু বলে দাবি করছেন এবং পর্যটকদের গাড়িতে লুকিয়ে লুকিয়ে বিক্রি করছেন।
ডিন্ডিগুল জেলার কোদাইকানালে প্রতিদিন পর্যটকরা মনোরম ও শীতল আবহাওয়া উপভোগ করতে আসেন। বেচাকেনার এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে, পর্যটকদের লক্ষ্য করে, গত কয়েকদিন ধরে, পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে যাওয়ার প্রধান রাস্তা গোশান রোডে, বনাঞ্চলের কাছে দাঁড়িয়ে থাকা একদল মহিলা পর্যটকদের গাড়িতে লুকিয়ে লুকিয়ে এক লিটার প্লাস্টিকের জলের বোতলে আসল বনজ মধু বলে চিনির শরবত ভরে বিক্রি করছেন। পর্যটকদের কাছে তারা বোতলবন্দি তরলটিকে পাহাড়ি মধু বলে উপস্থাপিত করছেন, বলছেন যে তাঁরা এটি বনাঞ্চল থেকে নিয়ে এসেছেন।
যাঁরা এই বিষয়ে অবগত নন, তাঁরা এটি আসল পাহাড়ি মধু ভেবে কিনে পরে হতাশ হচ্ছেন। যখন লোকালয়ে ফিরে আসছেন, তখন তাঁরা জানতে পারছেন যে এটি আসলে চিনির সিরাপ। জনসাধারণের মধ্যে দাবি উঠেছে যে খাদ্য সুরক্ষা বিভাগের এবার এই বিষয়ে মনোযোগ দেওয়া উচিত এবং পর্যটকদের শারীরিক ক্ষতি হওয়ার আগেই এই নকল মধু বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
অবশ্য, খাদ্য নিরাপত্তা বিভাগ একেবারে চুপ করে বসে নেই। দুই মাস আগে নকল মধু বিক্রির বিক্রেতাদের সতর্ক করা হয়েছিল, তবে তার পরেও এই চক্রের পাহাড়ি মধু বলে নকল মধু বিক্রি থামানো যাচ্ছে না।