অসমের মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, যদিও কোনও ভাবে বাংলাদেশ ভারতের চিকেনস নেক-এর দিকে হাত বাড়ানোর দুঃসাহস দেখায়, তাহলে ভারতেরও পাল্টা বাংলাদেশের দুটি চিকেনস নেক দখল করে নিতে বেশি সময় লাগবে না৷
শিলিগুড়ির কাছে ২২ কিলোমিটার চওড়া চিকেনস নেক-এর মাধ্যমে ভারতের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত উত্তর পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলি৷ উত্তর পূর্ব ভারতের এই অঞ্চলের ভৌগলিক অবস্থান যে খুব সুবিধাজনক নয়, বিদেশের মাটিতে সাম্প্রতিক সময়ে বার বার সেকথা মনে করিয়ে দিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছেন বাংলাদেশের অন্তবর্তী সরকারের প্রধান মহম্মদ ইউনূস৷ এমন কি, চিন সফরে গিয়েও এই প্রসঙ্গ তোলেন তিনি৷
advertisement
অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা বাংলাদেশের নেতৃত্বকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ‘আমাদের একটি চিকেনস নেক রয়েছে৷ কিন্তু বাংলাদেশের দুটি চিকেনস নেক রয়েছে৷ বাংলাদেশ যদি আমাদের একটি চিকেনস নেক-কে আক্রমণ করে, তাহলে আমরা ওদের দুটি চিকেনস নেক-কে আক্রমণ করব৷ এর মধ্যে প্রথম চিকেনস নেক রয়েছে মেঘালয়ের একদম পাশে৷ যার মাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দরের সঙ্গে গোটা বাংলাদেশের যোগাযোগ রক্ষা হয়৷ এই চিকেনস নেক ভারতের চিকেনস নেকের থেকেও সরু৷ আর ওই জায়গাটি অসম থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে রয়েছে৷’
এর পাশাপাশি বাংলাদেশকে ভারতের সামরিক শক্তির কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন হিমন্ত বিশ্বশর্মা৷ কটাক্ষের সুরে তিনি বলেন, ভারতকে আক্রমণ করার আগে ‘বাংলাদেশকে চোদ্দ বার জন্মগ্রহণ করতে হবে৷’
চট্টগ্রাম বাংলাদেশের সবথেকে বড় বন্দর শহর৷ বাংলাদেশের নব্বই শতাংশ রফতানি ব্যবসাই এই চট্টগ্রাম বন্দরের উপরে নির্ভরশীল৷
স্থলপথে দক্ষিণ ত্রিপুরার সবরুম থেকে বাংলাদেশের মিরশরাই উপজেলার দূরত্ব ৩০ কিলোমিটার৷ এই মিরশরাই উপজেলার ভিতরে থাকা চিকেনস নেক-এর মাধ্যমেই বাংলাদেশের বাকি অংশের সঙ্গে সংযুক্ত চট্টগ্রাম বন্দর৷
অন্যদিকে মেঘালয়ের দক্ষিণ পশ্চিম গারো পাহাড় এবং পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার মধ্যবর্তী জায়গায় রয়েছে বাংলাদেশের রংপুর করিডর৷ এই করিডরটি প্রায় ৯০ কিলোমিটার বিস্তৃত৷ যার মাধ্যমে রংপুরের সঙ্গে বাংলাদেশের বাকি প্রশাসনিক এলাকাগুলি যুক্ত৷
সম্প্রতি জানা গিয়েছে, বাংলাদেশের লালমণিরহাটে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার একটি বায়ুসেনা ঘাঁটিকে নতুন করে চালু করার চেষ্টা করছে চিন৷ শিলিগুড়ি থেকে বাংলাদেশের এই লালমণিরহাটের দূরত্ব মাত্র ১০০ কিলোমিটার মতো৷ স্বভাবতই এই খবর ভারতের কাছে উদ্বেগের৷ কারণ, সত্যিই এই বায়ুসেনা ঘাঁটির নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে থাকলে সহজেই ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চল তো বটেই, ওই এলাকায় ভারতীয় সেনা এবং বায়ুসেনার যাবতীয় পরিকাঠামো এবং গতিবিধির উপরেও সহজে নজরদারি চালাতে পারবে চিন৷ ফলে, বাংলাদেশকে সমঝে দিতে অসমের মুখ্যমন্ত্রীর এই চিকেনস নেক নিয়ে সতর্কবার্তা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ৷
