নির্মলার দাবি, প্রসব হাসপাতালের লেবার রুমে হয়েছিল এবং যমজ সন্তান জন্মের পরেই মারা যায়। অভিযোগ, অভিভাবকের অনুমতি ছাড়াই নবজাতকদের কবর দিয়ে দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। মহিলার শাশুড়ি এবং অন্যান্য আত্মীয়রা দাবি, তাদের বাচ্চাদের ছবিও দেখানো হয়, যা পরে চিকিৎসকরা মুছে ফেলেন। পরিবারের সদস্যরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে নথি গোপন করার এবং এমনকি তাদের নাম নথিভুক্ত না করার অভিযোগ করেন।
advertisement
আরও পড়ুনঃ রাতে জমকালো রিসেপসন, বিয়ের সকালে আচমকা হানা দিল পুলিশ! তুলে নিয়ে গেল কনেকে, ঠিক কী ঘটেছিল? তোলপাড়
পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করে যখন পুলিশ ও হাসপাতাল প্রশাসন যৌথভাবে তদন্ত শুরু করে, যেখানে পুলিশ হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে, যেখানে নির্মলা ও তাঁর স্বামী তেজেন্দ্রকে সকাল দশ’টা নাগাদ হাসপাতালে ঢুকতে দেখতে যায়। দু’জনেই কোনও রকম চিকিৎসা প্রক্রিয়া ছাড়াই হাসপাতালের বিভিন্ন ফ্লোরে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন। মহিলাকে কোনও ডাক্তারের কাছে যাননি, কোনও ওয়ার্ডে ভর্তিও করা হয়নি তাঁকে, লেবার রুম বা অপারেশন থিয়েটারেও যেতে দেখা যায়নি। সিসিটিভিতে নির্মলাকে স্বাভাবিক অবস্থায় হাঁটতে এবং একটি ভারী নীল ব্যাগ বহন করতেও দেখা গিয়েছে, যা গর্ভবতী মহিলার অবস্থানের সঙ্গে মিলছে না।
কমলা নেহরু হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপারিনটেনডেন্ট ডাঃ সুরেন্দ্র নেগি জানিয়েছেন, শুক্রবার হাসপাতালে কারও যমজ সন্তান জন্মগ্রহণ করেনি। কোনও শিশুর মৃত্যুর খবরও পাওয়া যায়নি। নির্মলার প্রস্রাবের গর্ভাবস্থা পরীক্ষাও নেতিবাচক এসেছে এবং তার স্বামী তেজেন্দ্রও বন্ধ্যাত্বের জন্য হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন, যা পুরো গল্পটিকে আরও সন্দেহজনক করে তুলেছে। ডাঃ নেগি আশঙ্কা প্রকাশ করেন, হাসপাতালের মানহানির লক্ষ্যে এটি সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র হতে পারে। তিনি বলেন, হাসপাতাল দম্পতির বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করবে। তিনি বলেন, ওই মহিলা এবং তাঁর স্বামীর কোনও সন্তান না হওয়ায়, তারা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত।
এদিন টানা ১২ ঘণ্টা ধরে চলে নাটক, স্বজনরাও জানতেন না। এই পুরো নাটকে চমকপ্রদ বিষয় নির্মলা এবং তার স্বামী নিজের পরিবারের সদস্যদেরও সঙ্গেও প্রতারণা করেন। নির্মলার শাশুড়ি, দেওর এবং অন্যান্য আত্মীয়দেরও জানানো হয়েছিল তিনি গর্ভবতী ছিলেন এবং এখন প্রসব হয়েছে। কমলা নেহরু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই মিথ্যা ঘটনার জন্য কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। হাসপাতালের বদনাম করার চেষ্টার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে সংশ্লিষ্ট দম্পতির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পুলিশি তদন্ত চলছে এবং মেডিক্যাল রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা কছে পুলিশ।