TRENDING:

দুর্গা প্রতিমা গড়ে নয়, এখানে পুজো হয় পাথরের।

Last Updated:

দুর্গা প্রতিমা গড়ে নয়। এখানে পুজো হয় পাথরের। কোনও পুরোহিত নন, এখানে দেবীর পুজো করেন শবর সম্প্রদায়ের মানুষরা।

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
#ঝাড়গ্রাম: দুর্গা প্রতিমা গড়ে নয়। এখানে পুজো হয় পাথরের। কোনও পুরোহিত নন, এখানে দেবীর পুজো করেন শবর সম্প্রদায়ের মানুষরা। প্রায় সাড়ে চারশো বছরের পুরনো রীতি মেনেই আজও পুজো হয় ঝাড়গ্রামের গুপ্তমনি মন্দির। দেওয়া হয় বলিও।
advertisement

এ এক অন্যপুজোর গল্প। কেউ বলেন বনদেবী। কেউ বলেন বনদূর্গা। তবে বেশি পরিচিতি গুপ্তমনি নামেই। কথিত আছে উমা এই জঙ্গলে গুপ্ত অবস্থায় ছিলেন। গোপন পথ পাহারায়। মহারাজ মল্লদেব অথবা শবর অধিপতি দেবীর নাম দেন গুপ্তমনি। অনেকটা গল্প আর কিছু ইতিহাস যেমন মিলে মিশে যায়। এখানেও তারই পুনরাবৃত্তি।

জঙ্গলে ঘেরা রাজপ্রাসাদ। সুরক্ষার কারণেই গুপ্তপথ। রাজা, রাজস্ব আর রাজ্য রক্ষায় বানিয়েছিলেন মল্লদেব। সেই পথে অতর্কিত হামলায় বহু যুদ্ধ জয়ও করেছিলেন। তবে যাদের হারিয়ে মল্লদেবের এত প্রতিপত্তি। সেই শবরপতি নন্দ ভুক্তা আবিষ্কার করে ফেলেন সেই পথ।

advertisement

আর ঠিক তখনই তৈরি করা হয় গল্পটা। রাজার হাতির হারিয়ে যাওয়া। হদিশ মেলে সেই গুপ্তপথের সামনে। গাছের লতাপাতা দিয়ে বাঁধা রাজহস্তি। মল্লদেব বুঝতে পারেন, যে শবরপতি নন্দ ভুক্তা হদিশ পেয়ে গেছেন গুপ্তপথের খোঁজ। যেই পথে রাজস্ব আর রাজবাহিনীর যাতায়াত। তখনই সন্ধির পথ। শবরপতি আর রাজা মল্লদেবের। আসলে আত্মসমর্পণ।

কিন্তু ইতিহাস লেখা হয় অন্য খাতে। মল্লরাজ দরবারে রাজকবি লেখেন গল্প। বাঁধেন গান। রচিত হয় রাজার বীরগাথা। সাজানো হয় রূপকথা। হারানো রাজহস্তির খোঁজ দিতে দেবীর স্বপ্ন মল্লদেবকে। আবার সেই দেবীই স্বপ্ন দেখায় শবরপতিকে। জল-তুলসির পুজো চেয়ে...।

advertisement

তারপর আর কী...! বুদ্ধিমান রাজা জঙ্গলের ওই গোপন পথ রক্ষার দায়িত্ব দেন শবরদেরই। মোক্ষম চাল। বীর শবররাই বুক দিয়ে আগলে রাখেন রাজমহল। রুখে দেন আক্রমণ। রক্ষা পায় রাজ ঐশ্বর্য। রাজ প্রাসাদ, রাজত্ব। আর এখানেই শুরু হয় দুর্গা আরাধনা। কোনও প্রতিমা নয়। পুজো হয় একটা পাথরের। যে পাথর আড়াল রেখেছে গুপ্তপথের। ওই পাথরের উপরই ঘট বসিয়ে আরাধনা। আজো পুরনো রীতি মেনে। এখনও রাজবাড়ি থেকে আসে শাড়ি, পলা, ফুল।

advertisement

সে কারণেই কোনও পুরোহিত নন। গুপ্তমনি পুজো পান শবরের হাতে। মন্দিরের সর্বত্রই বিদ্যুতের আলো থাকলেও, গর্ভগৃহে শুধুই মোমবাতি আর প্রদীপ। সেখানে কোনও নকল আলোর ব্যবস্থা নেই। স্থানীয়দের দাবি বহুবার আলোর ব্যবস্থা করা হলেও, তা টেকেনি। প্রাচীন এই মন্দিরের গায়ে রয়েছে বিভিন্ন পৌরানিক ছবি আঁকা। আজো শবরের দুর্গা গুপ্তমনি নামে পুজো পান।

advertisement

বাংলা খবর/ খবর/দেশ/
দুর্গা প্রতিমা গড়ে নয়, এখানে পুজো হয় পাথরের।