গোয়াতে প্রতিবছরই পর্যটকরা ভিড় জমায়। তাদের এই উপকূলীয় রাজ্যের অভূতপূর্ব সংস্কৃতির ইতিহাসের গল্প শোনাতেই এই প্রচেষ্টা। এই জাদুঘর বানানোর পেছনে রয়েছেন একজন ব্যবসায়ী যিনি নিজে একজন সংগ্রাহক।
গোয়ার অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র ক্যান্ডোলিমে এই ‘সুরাঘর’ খোলা হয়েছে। ক্যান্ডোলিম নারকেল ও কাজু দিয়ে তৈরি স্থানীয় মাদক পানীয় ‘ফেনি’র (Feni) জন্য বিখ্যাত।
ক্যান্ডোলিমের এই বিশেষ এবং অনন্য জাদুঘরে ১৯৫০-এর দশকের সময়ের পুরনো সুরা, ফেনির শতাব্দী প্রাচীন বোতল, কাচের আসবাব, পুরনো কাঠের ডিসপেনসার এবং মদ পরিমাপের সরঞ্জাম প্রদর্শন করা হবে। পর্যটকরা এই প্রদর্শনীর মাধ্যমে স্থানীয় সংস্কৃতি এবং ইতিহাসের সঙ্গে পরিচিত হবে।
advertisement
এই সুরাঘরের প্রতিষ্ঠাতা নন্দন কুড়চাড়কর (Nandan Kudchadkar) সংবাদ সংস্থা ANI-কে বলেন, “এই জাদুঘর শুরুর পেছনে মূল উদ্দেশ্য ছিল গোয়ার সমৃদ্ধ ঐতিহ্য, বিশেষ করে ফেনির ইতিহাস এবং স্থানীয় সংস্কৃতির একটি চিত্র পর্যটকদের সামনে তুলে ধরা।”
পেশায় ব্যবসায়ী নন্দন প্রত্ন সংগ্রাহক। তিনি ক্যান্ডোলিমের ক্লাব এলপিকে (LPK)-র মালিক। তিনি আরও বলেন মদ খাওয়ার অভ্যাস বা মদের নেশাকে তিনি প্রশ্রয় দেন না। স্থানীয় পানীয় ‘ফেনি’ তৈরির অনন্য প্রক্রিয়া এবং যারা প্রতিনিয়ত এই সুরা উৎপাদনের পেছনে রয়েছে তাদেরকে বিশ্বমঞ্চে তুলে ধরা এই জাদুঘরের অন্যতম উদ্দেশ্য।
“২০১৬ সালে সরকার ফেনিকে হেরিটেজ ড্রিঙ্ক হিসেবে ঘোষণা করেন। এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ কাণন অনেকেই তাদের বিশেষ পানীয়র ঐতিহ্যকে তুলে ধরেছেন যেমন ভদকা বা শ্যাম্পেন,” অ্যালকোহল মিউজিয়ামের প্রধান নির্বাহী (CEO) আরমান্দো দুয়ার্তে (Armando Duarte) বলেন।
গোয়ার পানাজি শহর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে উত্তরের সমুদ্র সৈকতে সিনকুরিম এবং ক্যান্ডোলিমের পর্যটন কেন্দ্রের মাঝখানের একটি ব্যস্ত গলিতে অবস্থিত এই সুরাঘর।
জাদুঘরের ওপরে ‘অল অ্যাবাউট অ্যালকোহল’ লেখা বোর্ড দেখেই চিনে নেওয়া যাবে এই সুরাস্থলকে। জাদুঘরের ভেতরে চারটি কক্ষে প্রদর্শিত হবে বিভিন্ন প্রাচীন মাটির পাত্র, রয়েছে ষষ্ঠদশ শতাব্দীর মাদক পরিমাপ যন্ত্র যা ফেনি পরিবেশন করার সময় ব্যবহৃত হয়েছিল। এছাড়াও রয়েছে পুরনো মদের বোতল সহ সুরা পরিবেশনে ব্যবহৃত একটি প্রাচীন কাঠের শট ডিসপেন্সার, ফেনির পরিমাপের জন্য ব্যবহৃত 'গার্ভ' (স্কেল) এবং একটি বিরল অস্ট্রেলিয়ান বিয়ার গ্লাস যা রাশিয়া থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে।