মনোনয়নের জন্যে প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে ৪'টি সেট। যেখানে তৃণমূলের ১০ জন করে বিধায়ক প্রস্তাবক হিসাবে সম্মতি জানিয়েছেন। ইতিমধ্যেই জহর সরকার জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিভিন্ন নীতির বিরোধিতা করে তিনি মেয়াদ ফুরনোর আগেই প্রসার ভারতীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন। সেটা ছিল সংসদের বাইরে থেকে প্রতিবাদ৷ এবার সংসদের ভিতরে থেকেই তিনি মোদী বিরোধিতা করতে চান। আর তাই মমতা বন্দোপাধ্যায়ের প্রস্তাব তিনি মেনে নিয়েছেন। জহর সরকারের নাম ঘোষণা হতে হতেই অভিনন্দন জানিয়েছেন একাধিক ব্যক্তি৷
advertisement
রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও'ব্রায়ান জানিয়েছেন, "জহর দা, তাড়াতাড়ি দিল্লি চলো এসো৷ খেলা হবে।" ন্যানো সেকেন্ডের মধ্যে উত্তর দিয়েছেন জহর সরকার৷ তিনি সম্মতিসূচক থাম্বস আপ দিয়েছেন। রাজ্যসভায় তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ জানিয়েছেন, ''রাজ্যসভায় যাচ্ছেন জহর সরকার। একজন কৃতী ছাত্র, দেশের সর্বোচ্চ মহলে দক্ষতার সঙ্গে কাজ করা অন্যতম সেরা ও অভিজ্ঞ আমলা, একজন রুচিশীল অসাধারণ জ্ঞানী, সুপটু লেখক ও বাগ্মীকে মনোনয়ন দিল তৃণমূল কংগ্রেস। দিল্লিতে স্পষ্ট হচ্ছে আগামী বিকল্পের পদধ্বনি।"
রাজনৈতিক মহল এই কথার রেশ ধরেই বলছে, মিশন ২৪-এর লক্ষ্যেই মমতা বন্দোপাধ্যায় তাঁর ঘুটি সাজাচ্ছেন। ২০২০ সালের ৩ এপ্রিল রাজ্যসভায় তৃণমূলের সাংসদ নির্বাচিত হন দীনেশ ত্রিবেদী। তার মেয়াদ ছিল ২০২৬ সালের ২ এপ্রিল অবধি। কিন্তু বাংলার নির্বাচনের আগেই সংসদ কক্ষে দাঁড়িয়ে তিনি পদত্যাগ করেন। যোগ দেন বিজেপিতে। সেই ফাঁকা আসনেই এবার জহর সরকারকে পাঠানোর তোড়জোড় শুরু করে দিল জোড়া ফুল শিবির।
দীর্ঘ দিন ধরেই মমতা বন্দ্যোধ্যায়ের সঙ্গে সুসম্পর্ক জহর সরকারের। তৃণমূলের এক বর্ষীয়ান নেতা বলছেন, দাদা-বোনের সম্পর্ক যেমন হয় ঠিক তেমনই ছিল এই সম্পর্ক। আলাপন বন্দোপাধ্যায়কে নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের টানাপোড়েনের সময় আলাপন বন্দোপাধ্যায়ের হয়ে গলা ফাটিয়েছিলেন জহর সরকার। ''মোদী-শাহ কি পাগল হয়ে গিয়েছেন? পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দোপাধ্যায়ের অবসর নিতে আর একদিন বাকি। এখন তাঁকে দিল্লিতে বদলি করা হচ্ছে?'' ট্যুইটারে মুখ খুলে বলেছিলেন জহর সরকার। দীর্ঘ দিন ধরেই দিল্লির অলিন্দে মোদি-শাহের গুডবুকে জহর সরকার ছিলেন না৷ দীর্ঘ ৪২ বছরের জন পরিষেবার সাথে যুক্ত থাকা অভিজ্ঞতা সম্পন্ন সেই আমলাকেই এবার রাজ্যসভায় নিয়ে যাচ্ছেন মমতা বন্দোপাধ্যায়। প্রশাসনিক মহলের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়েই রাজনৈতিক মহলে বাজিমাত করতে চাইছেন জহর সরকার।