শুধু তাই নয়, সংস্থার সঙ্গে সেতুর মেরামতির চুক্তি থাকলেও একশো বছর পুরনো এই সেতুর সংস্কারে কোনওরকম মনোযোগই দেয়নি সংশ্লিষ্ট সংস্থা। দাবি করছে রিপোর্ট। তাহলে কি এই সংস্থার গাফিলতিরই মাসুল দিয়েছে ১৪০টা তরতাজা প্রাণ?
৩রা অক্টোবর। তখন সন্ধে। গুজরাতের মোরবিতে মচ্ছু নদীর উপরে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়েছিল ঝুলন্ত সেতু। ব্রিজ ভাঙার সেই ভিডিও দেখে শিউরে উঠেছিলাম আমরা। সামনেই গুজরাত বিধানসভার ভোট। তার আগে এমন দুর্ঘটনায় খুব স্বাভাবিক ভাবেই অস্বস্তি বেড়েছিল রাজ্যের বিজেপি সরকারের। এই দুর্ঘটনা খুব স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন তুলেছিল প্রশাসনিক নজরদারির উপরে। পরিস্থিতি সামলাতে ষড়য়ন্ত্রের তত্ত্ব ফাঁদতেও ছাড়েনি গুজরাত বিজেপির একাংশ। তবে, প্রাথমিক তদন্তে মোরবি সেতু বিপর্যয়ের পিছনে ওরেভা গ্রুপের গাফিলতির তত্ত্বই স্পষ্ট হয়ে ওঠে। ঘটনার পরপরই গ্রেফতার করা হয় সংস্থার ৯ আধিকারিককে। তাঁদের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা রুজু করেছে গুজরাত পুলিশ।
advertisement
আরও পড়ুন: Murshidabad News: পারিবারিক বিবাদের জের! ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হল এক ব্যক্তিকে!
আরও পড়ুন: Darjeeling Orange: টান পড়েছে দার্জিলিংয়ের কমলালেবুতে! দুধের স্বাদ ঘোলে মেটাচ্ছে নাগপুরের কমলা
ঠিক কী কারণে ঘটেছিল এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা? তার কারণ খতিয়ে দেখতে ফরেন্সিক পরীক্ষা করা হয়েছিল প্রশাসনের তরফেই। এবার সেই রিপোর্ট জমা পড়ল গুজরাতের এক জেলা আদালতে। সরকারপক্ষের এক আইনজীবী এই জেলা আদালতের সামনে এই রিপোর্ট পেশ করেছে বলে সূত্রের খবর। আর সেই রিপোর্ট থেকেই জানতে পারা যাচ্ছে একের পর এক তথ্য।
ফরেন্সিক পরীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী, শতাব্দীপ্রাচীন এই সেতুর ধারণ ক্ষমতা বর্তমানে কত, তা যাচাই না করেই হরির লুটের মতো টিকিট বিক্রি করেছিল সেতুর দেখভালকারী সংস্থা। আর তাতেই ঘটে বিপত্তি। একসঙ্গে সেতুতে উঠে পড়েন কয়েকশো মানুষ। জং ধরে যাওয়া ঝুলন্ত সেতুর কেবলওয়্যার সেই ভার সামলাতে পারেনি। হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়েছিল মচ্ছু নদীতে। তাছাড়া, নতুন করে তৈরি করা সেতুর ভারী মেঝের ভারও পুরনো কেবলওয়্যারের পক্ষে সহ্য করা সম্ভব হয়নি। এমনকী, যে বোল্টগুলির মাধ্যমে অ্যাঙ্করের সঙ্গে কেবল জোড়া ছিল সেগুলোতেও মরচে পড়ে গিয়েছিল।
মোরবি পুরসভা অবশ্য আগেই গুজরাত হাইকোর্টকে জানিয়েছিল, মোরবি সেতু পুনরায় পর্যটকদের জন্য খোলার আগে পুরসভার কাছ থেকে কোনও ফিট সার্টিফিকেট নেয়নি সংশ্লিষ্ট সংস্থা। সাম্প্রতিক রিপোর্টেও গোটা বিষয়ে সেই সংস্থার দিকেই যাবতীয় অভিযোগের আঙুল উঠছে বলে মনে হয়।