নিজের স্বামীকে পথের কাঁটা হিসেবে দেখেছিল সৌরভের স্ত্রী মুসকান৷ আর সেই পথের কাঁটাকে সরিয়ে দিতে গিয়ে নিজেদের ছ বছরের একমাত্র মেয়েকে কার্যত অনাথ করে দিয়েছে সে৷ এবার সেই ছোট্ট শিশুটিকে নিয়েই সম্ভবত আইনি লড়াই শুরু হতে চলেছে সৌরভ এবং মুসকানের পরিবারের মধ্যে৷
advertisement
সৌরভের মৃত্যুর পর নিজেদের মেয়ের কঠোর শাস্তি চেয়ে সরব হন মুসকানের বাবা-মা৷ এমন কি, জামাই হিসেবে সৌরভকেও প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছিলেন তাঁরা৷ সৌরভের মৃত্যু এবং মুসকান গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে তাদের ৬ বছরের মেয়ে মুসকানের বাবা-মায়ের কাছেই ছিল৷ কিন্তু নাতনিকে নিজেদের কাছে রাখার ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলেন সৌরভের মা৷ একই দাবি জানিয়েছিলেন সৌরভের দাদাও৷ এবার শিশুটির হেফাজত চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হতে চলেছে সৌরভ এবং মুসকানের পরিবার৷
জানা গিয়েছে, নাতনি যাতে তাঁদের কাছেই থাকে, সেই আর্জি জানিয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন মুসকানের বাবা-মা৷ আবার সৌরভের দাদা রাহুলও পুলিশের কাছে একই দাবি জানিয়েছেন৷ এই পরিস্থিতিতে শিশুটি কোন পরিবারের কাছে থাকবে, তা সম্ভবত আদালতই নির্ধারণ করে দেবে৷
মুসকানের বাবা প্রমোদ রাস্তোগি জানিয়ে দিয়েছেন, সৌরভের সম্পত্তি অথবা ব্যাঙ্ক ব্যালান্স নিয়ে তাঁদের কোনও আগ্রহই নেই৷ কিন্তু কোনওভাবেই তাঁরা নাতনির হেফাজত ছাড়বেন না৷ কারণ তাঁদেরও বেঁচে থাকার একমাত্র রসদ ছ বছরের নাতনিই৷
সৌরভের বাবা আরও দাবি করেন, ‘সৌরভের পরিবার হয়তো এখন শিশুটির হেফাজত চাইছে কারণ সৌরভ ওর মেয়ের নামে গত বছর মেরঠে একটা ছোট জমি কিনেছিল৷ সৌরভের মেয়েকে নিয়ে ওরা এখন থেকে নিজেদের কাছে রাখতে পারলে ওই জমির অধিকারও হয়তো ওরা পেয়ে যাবে বলে ভাবছে৷’
অন্যদিকে সৌরভের দাদাও ভাইঝিকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন৷ তিনি বলেন, ‘আমার কোনও মেয়ে নেই৷ আমি ওই শিশুটির কাকা৷ আমি ওকে বড় করতে পারব৷ ও আমাদের সঙ্গে থাকলে আমাদের মনে হবে সৌরভই আমাদের সঙ্গে রয়েছে৷ ওর হেফাজত পাওয়ার জন্য আমরা আদালতের দ্বারস্থ হব৷’
এ দিকে যাকে নিয়ে এত টানাপোড়েন, সেই ছোট্ট শিশুটি এখনও জানে না তার জীবনে কত বড় বিপর্যয় ঘটে গিয়েছে৷ বাবার নৃশংস পরিণতিরও আঁচ পায়নি সে৷ ছোট্ট মেয়েটি জানে, বাবা মা লন্ডনে বেড়াতে গিয়েছে৷ বাবা মা কবে তার কাছে ফিরবে, মাঝেমধ্যেই দাদু-দিদাকে সেই প্রশ্ন করছে ছোট্ট শিশুটি৷
প্রসঙ্গত, নিজের ছ বছরের মেয়ের জন্মদিন পালন করতেই লন্ডন থেকে ফিরে এসেছিলেন সৌরভ৷ তার পরই গত ৩ মার্চ তাঁকে খুন করে মুসকান এবং সাহিল৷