এবার শোকের বছর। কিন্তু তাই বলে তো আরাধনা বন্ধ হতে পারে না? সেকারণেই, ৫০০ বছরের ঐতিহ্য মেনে এবারও পুজো হবে রাজবাড়িতে। পাঁচশো আট বছরে পা দিল জলপাইগুড়ির বৈকুন্ঠপুর রাজবাড়ির পুজো। এই পুজো শুরু করেছিলেন রাজা শিশু সিংহ। কোনও প্রতিবন্ধকতাই পুজোর পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। এমনকি রাজপরিবারে মৃত্যুর ঘটনাতেও। না।
advertisement
রাজবাড়ির ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করছেন উমেশ শর্মা। তিনিই জানাচ্ছেন, উনিশশো ছেচল্লিশ সালেও এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। সে বছর মারা যান মহারাজ প্রসন্নদেব রায়কত। কিন্তু পারিবারিক পুজো যাতে বন্ধ না হয় সে কারণে সেবার পুজোর দায়িত্ব নেন প্রসন্নদেবের কন্যা প্রতিভা বসু, যিনি সম্পর্কে ছিলেন জ্যোতি বসুর বৌদি।
বর্তমানে রাজবাড়ির পুজোর দায়িত্ব পালন করেন প্রতিভা বসুর পুত্র প্রণত বসু। সম্প্রতি তাঁর স্ত্রী স্বপ্না বসু মারা গিয়েছেন। ফলে রাজ পরিবারে শোকের আবহ। কিন্তু পুজোর ধারাবাহিকতায় কোনও ছেদ পড়ছে না। এবারও পরিবারের মেয়ের নামেই পুজোর সংকল্প হয়েছে। রাজ পরিবারের কুল পুরোহিতের দাবি, গোত্র বদল করে পুজো হলে কোনও সমস্যা নেই।
রাজবাড়ির এই সময়ের পুজোর অন্যতম আয়োজক ছিলেন স্বপ্না বসু। তাঁর মৃত্যুতে পুজো ঘিরে একটা শূন্যতা তৈরি হলেও নিয়ম মেনেই জন্মাষ্টমীর সকালে হয়েছে কাঠামো পুজো। কাদাখেলার মধ্যে দিয়ে দেবী আরাধনার সূচনা হয়েছে। মনসা পুজোর সকাল থেকে তৈরি হয়েছে প্রতিমা তৈরির কাজ।
রাজবাড়ির পুজোয় যোগ দিতে এবারও বিভিন্ন জায়গা থেকে আসবেন আত্মীয় পরিজন বন্ধুরা। এবারও মেতে উঠবেন উৎসবে। শুধু রাজবাড়ির দুর্গা এবার পুজো পাবেন গোত্রান্তরিত এক রাজকন্যার হাতে।