আরও পড়ুন: 'টিপু' লড়বেন কোথা থেকে? মতামত দেবে আজমগড়ের জনতা
মামলার নিষ্পত্তিকালে কর্নাটক হাইকোর্টের বিচারপতি বি বীরপা এবং বিচারপতি কে এস হেমলেখার(Justice B Veerapa and Justice K S Hemalekha) ডিভিশন বেঞ্চ বলেছে, স্বামী-স্ত্রী এক বার আলাদা হয়ে গেলে মামলা দীর্ঘকাল পর্যন্ত চলতে থাকে। তবে নির্দিষ্ট এই মামলাটি পর্যবেক্ষণ করে বিচারপতিদ্বয় এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যে, দীর্ঘ ২১ বছর আলাদা থাকার কারণে এই বিবাহের সম্পর্কটি মৃতপ্রায় হয়ে গিয়েছে (Marriage Is Totally Dead)। তবুও দু' পক্ষকে জুড়ে দেওয়ার চেষ্টা করা উচিত বলে মন্তব্য করেন দুই বিচারপতি। তবে স্বামী- স্ত্রীর সম্পর্কটি যদি তিক্ত হয়ে যায় এবং তা যদি বিবাহ সংরক্ষণ আইনের পরিপন্থী হয়, সেই সঙ্গে দীর্ঘকাল যাবৎ মামলায় চলে, তা অতি দুঃখজনক বলে আখ্যা দেন তাঁরা।
advertisement
আরওপড়ুন:দেশে আজও উর্দ্ধমুখী করোনা-গ্রাফ! দৈনিক আক্রান্ত ছাড়াল ৩ লক্ষ ১৭ হাজার
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, নিম্ন আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ৫৬ বছর বয়সী স্বামী উচ্চ আদালতে আবেদন জানান। মূলত ২১ বছর ধরে নিজের স্ত্রী-র সঙ্গে চলতে থাকা বিবাহ বিচ্ছেদের মামলার পাকাপাকি নিষ্পত্তি দাবি করে উচ্চ আদালতে আবেদন জানিয়েছিলেন ওই ব্যক্তি।
আবেদনকারী স্বামীর আইনজীবী উচ্চ আদালতে (high court) জানান, ১৯৯৯ সালে ওই ব্যক্তি বিবাহ সূত্রে আবদ্ধ হন। বিবাহের বছরেই তাঁর স্ত্রী স্বামীর সংসার ছেড়ে বাপের বাড়িতে চলে যান। একাধিক বার অনুরোধ করা সত্ত্বেও বাপের বাড়ি থেকে শ্বশুর বাড়িতে স্বামীর সংসারে ফিরতে চাননি তাঁর স্ত্রী। কয়েক বছর একাকী (alone) থাকার পর বহু বার বোঝানোর চেষ্টা করেও কোনও লাভ না-হওয়ায় অবশেষে ২০০৩ সালে স্ত্রী-র কাছে বিবাহ বিচ্ছেদ চেয়ে নিম্ন আদালতে মামলা (petition) করেন আবেদনকারী স্বামী।
জানা গিয়েছে, দায়ের হওয়া ওই মামলার এক বছরের মধ্যে নিম্ন আদালত আবেদনে সাড়া দিয়ে বিবাহ বিচ্ছেদের আবেদন মঞ্জুর করে। আদালতের রায়ের পর ওই ব্যক্তি দ্বিতীয় বিবাহ করেন। বর্তমানে তাঁর দুটি সন্তানও রয়েছে বলে দাবি করেছেন আবেদনকারীর আইনজীবী।
এরই মধ্যে নিম্ন আদালতের ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ওই ব্যক্তির স্ত্রী পুনরায় উচ্চ আদালতে আবেদন করেন বিবাহ বিচ্ছেদের রায়টি পুনর্বিবেচনার জন্য। কয়েক বছর মামলা আদালতে চলার পরে অবশেষে ২০১২ সালে উচ্চ আদালত নিম্ন আদলতের রায়কে (order) খারিজ করে দেয়। এর পর ওই মামলা চলতে থাকে কর্নাটক হাইকোর্টের (karnataka high court) ডিভিশন বেঞ্চে।
জানা গিয়েছে, এই মামলায় অপর পক্ষের আইনজীবী আদালতে দাবি করেন এই বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য দায়ী ওই ব্যক্তি। কারণ হিসেবে তিনি আদালতে জানিয়েছেন, ওই ব্যক্তি বিবাহের পর তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে অমানবিক আচরণ করতেন। এমনকী মানসিক অত্যাচারের পাশাপাশি স্ত্রী-র উপর শারীরিক অত্যাচার পর্যন্ত চালাতেন। দীর্ঘদিন স্বামীর সংসারে না-খেয়েই তাঁকে কাটাতে হয়েছিল সেই স্ত্রী, এমনটাই আদালতকে জানান ওই মহিলার আইনজীবী। সেই কারণেই তাঁর স্ত্রী শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে বাপের বাড়ি চলে যেতে বাধ্য হন। তাতেও যে তাঁর স্বামী তাঁকে রেহাই দেননি, তা-ও আদালতে জানিয়েছেন ওই মহিলার আইনজীবী। তিনি বলেন, শ্বশুরবাড়িতে লোকজন পাঠিয়ে স্ত্রীকে ক্রমাগত হুমকি দিতে থাকেন তাঁর স্বামী।
আবেদনকারী ও বিপক্ষের আইনজীবীদের দীর্ঘ সওয়াল-জবাবের পর কর্নাটক হাইকোর্টের দুই বিচারপতি বি বীরপা এবং কে এস হেমলেখার ডিভিশন বেঞ্চ নিম্ন আদালতের দেওয়া বিবাহ বিচ্ছেদের রায়ে পাকাপাকি ভাবে সম্মতি দেয়। পাশাপাশি ভরণপোষণের জন্য স্ত্রীকে ৩০ লক্ষ টাকা আগামী চার মাসের মধ্যে দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছে আবেদনকারী স্বামীকে।