উপনির্বাচন থেকে আপনাদের প্রত্যাশা কী?
ফল তো সবাই জানেন৷ বিজেপি পরাজিত হবে৷ ওরা বড় বড় কথা বলে৷ তৃণমূল তো জিতবেই, কিন্তু প্রশ্ন হল মোদি এবং শাহ কোথায়? এবার তাঁরা প্রচার না করে পালিয়ে গেলেন কেন? এই প্রশ্নের উত্তরেই ভবানীপুরের উপনির্বাচনের ফল স্পষ্ট৷ যে কাউকে প্রশ্ন করে দেখুন নরেন্দ্র মোদির মোকাবিলা কে করতে পারেন? উত্তর হল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ এটাই বাস্তব৷ আমি গোয়ায় প্রায় এক সপ্তাহ ধরে রয়েছি, আরও কয়েক সপ্তাহ এখানেই থাকব৷ কিন্তু গোয়াতেও এই ধারণা তৈরি হয়েছে৷
advertisement
আপনারা গোয়াকে বাছলেন কেন?
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে আমরা এখন অন্যান্য রাজ্যেও সংগঠন বিস্তার করতে চাইছি৷ তাই আমাদের ভাবনাটা অন্যরকম৷ ত্রিপুরায় আমাদের লড়তেই হত৷ কারণ ত্রিপুরা ছোট রাজ্য এবং আমাদের রাজ্যের মতোই সেখানকার মানুষ মূলত বাংলা ভাষায় কথা বলেন৷ গোয়াও ছোট রাজ্য৷ উত্তর প্রদেশে আমরা অনেক আসনে লড়ব, এমন দাবি আমরা করছি না৷ তার জন্য সময় লাগবে৷ তার জন্য লোকবল, সংগঠনের প্রয়োজন হয়৷ উত্তর প্রদেশে হয়তো আমরা ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচন বা তার পরে লড়ব৷ তার আগে ২০২৩ সালে ত্রিপুরার বিধানসভা নির্বাচন, আগামী বছর গোয়ার বিধানসভা নির্বাচনে আমরা লড়াই করব৷ আমরা ছোট দু'টি রাজ্যকে বেছে নিয়েছি৷ আর সেখানে মোদি, শাহ, বিজেপি-কে পরাজিত করতেই হবে৷
আরও পড়ুন: মমতার প্রশংসা করে ইস্তফা লুইজিনহোর, তালিকায় গোয়ার আরও অনেক নাম, দাবি তৃণমূলের
লুইজিনহো ফেলেইরো কি তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন? উনি তো ইস্তফা দিয়ে বলেছেন গোয়ার একজন স্ট্রিট ফাইটারকে প্রয়োজন৷
এই প্রশ্নের উত্তর উনি নিজের মুখেই দেবেন৷ আমার পক্ষে এখন এ বিষয়ে কিছু বলা উচিত হবে না৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একজন স্ট্রিট ফাইটার এ কথা ঠিক৷ তিনি তিন বারের মুখ্যমন্ত্রী৷ শুধু রাস্তার লড়াকু নেত্রী নন, উনি সুশাসন করেছেন৷ যার সম্মিলিত ফল এটা৷ আমানুষের জীবনে অবদান রাখলে এবং সংবিধান মেনে চললে মানুষ আপনাকেই বেছে নেবে৷
অনেক কংগ্রেস নেতাই দলবদল করতে চান৷ আপানারা কেন কংগ্রেসকেই টার্গেট করছেন?
আমরা কংগ্রেসকে টার্গেট করছি এটা সত্যি নয়৷ কোনও না কোনও কংগ্রেস নেতা আজ নয় কাল আমাদের দলে যোগ দেবেনই, কিন্তু আমরা কোনও রাজনৈতিক দলকে নিশানা করছি না৷ আমরা একমাত্র বিজেপি-কেই টার্গেট করছি৷ বিজেপি প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেনি৷ আমরা অন্য রাজ্যে ছড়িয়ে পড়তে চাই৷ আমাদের দলে হাইকম্যান্ড সংস্কৃতি নেই, যেটা বিজেপি-তে রয়েছে৷ গোয়াতে আমাদের দলের ভাবনা পরিষ্কার- এটা গোয়ার মানুষের দল, গোয়ার মানুষের জন্য একটা দল৷
গোয়া বাস্তবে আপনাদের শক্তি কতটা?
গোয়ায় মাত্র এক সপ্তাহ আগে তৃণমূলের সাংসদরা এসেছেন৷ কিন্তু এখানে আমরা জুন মাস থেকে নিচুতলায় সংগঠন তৈরির কাজ করছি৷ এর দু' মাস পর দলের মনে হয়েছে গোয়ায় সত্যিই আমাদের এগনো উচিত৷ আমরা গোয়ায় নির্বাচনে লড়ব৷ গোয়ায় নাগরিক সমাজের বিশিষ্ট জনদের সঙ্গে আমরা দেখা করছি৷ তার মধ্যে লেখক, নাট্যকার, শিল্পী অনেকেই আছেন৷ তাঁরা আমাদের দলে যোগ দিন বা দিন, প্রত্যেকেই বলেছেন, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলবেন যে আমরা বাংলার ফলে খুব খুশি এবং উনি লক্ষ্যে পৌঁছতে পারবেন৷'
কিন্তু আপনারা বিরোধী দলগুলি যদি পরস্পরের বিরুদ্ধে লড়াই করেন তাহলে জাতীয় স্তরে ঐক্যের কী হবে?
তৃণমূল বলছে যাঁরা দেশের সম্পদ বিক্রি করে দিচ্ছে তাঁদের ক্ষমতা থেকে সরাতে হবে৷ এতদিন কংগ্রেস সেই চেষ্টা করেছে৷ কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেখিয়ে দিয়েছেন যে বিজেপি-কে কীভাবে হারানো যায়৷ তাই এটাই আমাদের কাছে সবথেকে ভাল সুযোগ৷ বাংলায় নির্বাচনের আগেও সবাই জোটের কথা বলেছিল৷ কিন্তু অন্যরা শূন্য পেয়েছে৷ গোয়াতেও সেই একই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে৷
তৃণমূলকেই কি আপনারা একমাত্র বিরোধী শক্তি হিসেবে তুলে ধরতে চাইছেন?
আমরা কোনও বড় রাজ্যে লড়াই কথা বলছি না৷ আমরা বড় বড় দাবি করি না৷ আমরা সঠিক রণকৌশল নিয়ে এগোচ্ছি৷ আমরা ধীরে ধীরে এগোতে চাই৷ বিশ্বাসযোগ্যতার নিরিখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সবার থেকে এগিয়ে৷ নোট বাতিলের সময় কংগ্রেস কোথায় ছিল? শিবসেনা আমাদের সমর্থন করেছিল৷ ওমর আবদুল্লাহ আমাদের সঙ্গে ছিলেন৷ আম আদমি পার্টিও আমাদের সঙ্গে ছিল না৷ কৃষক আন্দোলনের দিকেও তাকিয়ে দেখুন তৃণমূল কী করেছে!
তাহলে ২০২৪ সালে জাতীয় স্তরে কী হবে?
কেন্দ্র থেকে বিজেপি-কে বিদায় নিতেই হবে৷ দেখুন ওরা দেশের অবস্থা কী করেছে৷ আরএসএস-এর মতাদর্শ বদলাতে হবে৷ ২০২৪-এ বিরোধী ঐক্য থাকবে না বা ভাগ হয়ে যাচ্ছে, এ কথা ঠিক নয়৷ আসল ঘটনা হল আমরা যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলান তা রক্ষা করেছি৷ বিজেপি গণতন্ত্রকে দুর্বল করছে৷