পুলিশ জানিয়েছে ছাত্রের সুইসাইড নোটে লেখা আছে, ‘স্যরি মা, এত বার আপনার হৃদয় ভেঙেছি, এখন শেষ বার আপনার হদয় চূর্ণ করব৷ স্কুলের শিক্ষকরা এখন এরকমই হন, কী আর বলব!’ বুধবার দায়ের করা এফআইআর-এ ওই কিশোরের বাবা বলেছেন যে তাঁর ছেলে মঙ্গলবার সকাল ৭.১৫ মিনিটে স্কুলের উদ্দেশে রওনা হয়েছিল। দুপুর ২.৪৫ মিনিট নাগাদ বাবা ফোন পান যে মধ্য দিল্লির রাজেন্দ্র প্লেস মেট্রো স্টেশনের কাছে তাঁর ছেলে আহত অবস্থায় পড়ে আছে। যে ফোন করেছিল, তাঁকে তাঁর ছেলেকে বিএল কাপুর হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন কিশোরের বাবা৷ এর পর পরিবার ওই হাসপাতালে পৌঁছলে জানানো হয় যে তাঁদের সন্তান মারা গিয়েছে। কিশোরের বাবা অভিযোগ, তাঁর ছেলের বন্ধুরা তাঁকে বলেছে যে একজন শিক্ষক গত চার দিন ধরে হুমকি দিচ্ছেন যে তাকে স্কুল থেকে বের করে দেওয়া হবে এবং একটি ট্রান্সফার সার্টিফিকেট জারি করা হবে।
advertisement
বাবা বলেন যে মঙ্গলবার একটি নাটকের ক্লাস চলাকালীন তাঁর ছেলে পড়ে যায় এবং একজন শিক্ষক তাঁকে অপমান করেন এবং তাকে উপহাস করে বলেন যে সে অতিরিক্ত অভিনয় করছে। তাকে এতটাই তিরস্কার করা হয়েছিল যে সে কাঁদতে শুরু করে। তখন শিক্ষক বলেন যে সে যত খুশি কাঁদতে পারে এবং এতে তার কোনও লাভ নেই। বাবা বলেন, যখন এই সব ঘটছিল তখন অধ্যক্ষও উপস্থিত ছিলেন, কিন্তু এটি বন্ধ করার জন্য তিনি কিছুই করেননি। ওই ব্যক্তি বলেন, তাঁদের ছেলে শিক্ষকদের দ্বারা মানসিক হয়রানির কথা বলেছিল৷ এই মর্মে তাঁরা স্কুলে অভিযোগও দায়ের করেছিলেন৷ কিন্তু কোনও লাভ হয়নি।
নিহত কিশোরের বাবা সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছেন যে দশম শ্রেণীর পরীক্ষা শীঘ্রই অনুষ্ঠিত হতে চলেছে বলে তাঁরা স্কুলের বিরুদ্ধে আরও কঠোর পদক্ষেপ করা থেকে এড়িয়ে গিয়েছেন। তাঁরা কিশোরকে আশ্বস্ত করেছিলেন যে পরীক্ষা শেষ হলে তাঁকে অন্য কোনও স্কুলে ভর্তি করা হবে।
সুইসাইড নোট
ছেলেটির ব্যাগে পাওয়া একটি সুইসাইড নোটে আর্জি রাখা হয়েছে, সেই চিঠি যে পাবে তাঁকে একটি নির্দিষ্ট নম্বরে ফোন করতে হবে৷ এর পর সে তার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দান করতে বলে, যদি সেগুলো “কাজ করার মতো অবস্থায়” থাকে। “যদি আমার শরীরের কোন অংশ কাজ করে বা কাজ করার মতো অবস্থায় থাকে, তাহলে দয়া করে এটি এমন কাউকে দান করুন যার সত্যিই এটির প্রয়োজন,” আত্মঘাতী কিশোর লিখে গিয়েছে সুইসাইড নোটে।
আরও পড়ুন : ‘যত খুশি কাঁদো,আমার কিছু যায় আসে না…’ শিক্ষকের তিরস্কার! যে অপমানে চরম সিদ্ধান্ত ছাত্রের
অধ্যক্ষ এবং দুই শিক্ষকের নাম উল্লেখ করে সে বলে, তার শেষ ইচ্ছা হল তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক যাতে অন্য কোনও ছাত্র বাধ্য হয়ে আত্মহনন না করে। ছেলেটি তার ২০ বছর বয়সি দাদার কাছে ক্ষমা চায়, তার সঙ্গে অভদ্র আচরণের জন্য৷ এবং তার বাবার কাছে ক্ষমা চায় তাঁর মতো ভাল মানুষ হতে পারেনি বলে। মাকে ধন্যবাদ জানিয়েছে সব সময় তার পাশে থাকার কথা মনে রেখে৷ মায়ের কাছে তার শেষ অনুরোধ, বাবা আর দাদাকে দেখে রাখার জন্য৷
If you or someone you know needs help, call any of these helplines: Aasra (Mumbai) 022-27546669, Sneha (Chennai) 044-24640050, Sumaitri (Delhi) 011-23389090, Cooj (Goa) 0832- 2252525, Jeevan (Jamshedpur) 065-76453841, Pratheeksha (Kochi) 048-42448830, Maithri (Kochi) 0484-2540530, Roshni (Hyderabad) 040-66202000, Lifeline 033-64643267 (Kolkata)
