স্বামী রবীন্দর কুমার দক্ষিণ দিল্লির বাসিন্দা ছিলেন। দক্ষিণ দিল্লির রাজাকরির বাসিন্দা রবীন্দ্র কুমারের বয়স হয়েছিল ৫৬ বছর। জুনের শুরুর দিকে তিনি আচমকাই নিখোঁজ হয়ে যান। তার অবস্থান সম্পর্কে কারও কাছে কোনও খবর ছিল না। তবে রহস্যের সমাধান হয় যখন পুলিশ ৫ জুন উত্তরাখণ্ড থেকে একটি মৃতদেহ উদ্ধার করে। পরে দেহ নিখোঁজ রবীন্দ্র কুমারের বলে শনাক্ত হয়। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে স্ত্রী রিনা সিন্ধু এবং তার প্রেমিক পরিতোষ এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন।
advertisement
টাইমস অফ ইন্ডিয়ার একটি প্রতিবেদন অনুসারে, উত্তরাখণ্ড পুলিশ প্রেমের সম্পর্ক, সম্পত্তি সংক্রান্ত বিবাদ এবং বৈবাহিক কলহের সঙ্গে জড়িত ষড়যন্ত্রের পর্দাফাঁস করার পরে অভিযুক্ত স্ত্রী এবং তার প্রেমিককে গ্রেফতার করে। রবীন্দ্র কুমারের লাশ কোটদ্বারের কাছে একটি খাদে পাওয়া যায়। তখনই তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের গোপন কথা ফাঁস হয়য। এফআইআর অনুযায়ী, রবীন্দ্র কুমারের সঙ্গে স্ত্রীর বয়সের পার্থক্য ছিল ২০ বছর। তবে সম্প্রতি স্ত্রী অন্য একজনের প্রেমে পড়েন।
অভিযুক্ত স্ত্রী সিন্ধু ফিজিওথেরাপি সেন্টার চালান। কয়েক বছর আগে চিকিৎসার জন্য এই কেন্দ্রে আসা পরতোষ নামের এক যুবকের প্রেমে পড়েন তিনি। মৃত স্বামী রবীন্দ্র কুমার চেক বাউন্স মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে ছ’মাসের জন্য জেলে গেলে সিন্ধুর জীবন বদলে যায়। তিনি তার ১৮ লক্ষ টাকার ঋণ শোধ করার জন্য একটি সম্পত্তি বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন।
আরও পড়ুনঃ রাতে জমকালো রিসেপসন, বিয়ের সকালে আচমকা হানা দিল পুলিশ! তুলে নিয়ে গেল কনেকে, ঠিক কী ঘটেছিল? তোলপাড়
গত বছর থেকে বিভিন্ন ইস্যুতে বারবার অশান্তিতে জড়িয়ে পড়েন রবীন্দ্র কুমার ও সিন্ধু। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত স্ত্রী সিন্ধু ও পরিতোষ কুমারকে খুনের ছক কষে। ৩১ মে পার্টি করার নাম করে কুমারকে উত্তরপ্রদেশের নাগিনায় প্রেমিক পরিতোষের বাড়িতে আমন্ত্রণ জানান। এরপর স্বামী রবীন্দর কুমারকে যথেচ্ছ মদ্যপান করানো হয় এবং তারপরে দু’জনে মিলে তাঁর ঘাড়ে ও বুকে আঘাত করে খুন করে।
তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, দেহটি প্রথমে একটি এসইউভিতে করে রামনগর এবং পরে উত্তরাখণ্ডের কোটদ্বারে নিয়ে যাওয়া হয়। ভোরের অন্ধকারে দুগড্ডার কাছে রাস্তায় দেহ ফেলে দিয়ে পালিয়ে যায় অভিযুক্তরা। পরে নয়ডার একটি মোড়ে গাড়িটি ফেলে রেখে পালিয়ে যায় সিন্ধুরা। পুলিশ যখন তদন্ত শুরু করে, তখন মনে হচ্ছিল এটি একটি সড়ক দুর্ঘটনা। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে কুমারের দুটি পাঁজর ভাঙা ছিল, যা খুনের ইঙ্গিত দেয়। কোটদ্বার পুলিশ জানতে পেরেছিল সিন্ধু একই সময়ে কোটদ্বারে ছিল এবং কুমারের এসইউভি নিখোঁজ ছিল। প্রযুক্তিগত ইনপুট এবং সিসিটিভি ফুটেজ ব্যবহার করে, কিছু সূত্র পুলিশকে স্থানীয় পার্কিং লটে নিয়ে যায়, যেখানে এসইউভিটি পড়েছিল।
সিন্ধু নিজেকে অন্য কোথাও বলে দাবি করলেও জানা গিয়েছে, ২৬ মে হরিদ্বারের একটি গেস্টহাউসে উঠেছিলেন তারা দু’জনে। কুমার ৩১ মে নাগিনায় এক বন্ধুর বাড়িতে গিয়েছিলেন। কুমারের পকেটে পাওয়া একটি স্লিপ থেকে চূড়ান্ত প্রমাণ পাওয়া যায়। এই গুরুত্বপূর্ণ সূত্রটি কোটদ্বার পুলিশকে সিন্ধু এবং পরিতোষকে শনাক্ত করতে সহায়তা করেছিল, যার ফলে তাদের গ্রেফতার করা হয়।