জম্মুর ঘারোটা এলাকার বাসিন্দা মুনির ২০১৭ সালে সিআরপিএফ-এ যোগ দেন৷ তিনি জানিয়েছেন, চাকরি থেকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্তকে তিনি চ্যালেঞ্জ করবেন৷ মুনিরের আশা, তিনি ন্যায়বিচার পাবেন৷
মুনিরের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তথ্যগোপন করে তিনি একজন পাকিস্তানি নাগরিককে বিয়ে করেছেন৷ শুধু তাই নয়, স্ত্রীর ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও নিজের স্ত্রীকে ভারতে রেখে দেন তিনি৷ তিনি যা করেছেন, তা জাতীয় নিরাপত্তা এবং চাকরির শর্তের পরিপন্থী বলেই দাবি করে সিআরপিএফ৷
advertisement
আরও পড়ুন: জগন্নাথ ধাম নামকরণে আপত্তি, পুরীর নিম কাঠেই দিঘায় বিগ্রহ? তদন্তের নির্দেশ ওড়িশা সরকারের
যদিও সংবাদসংস্থা পিটিআই-কে মুনির জানিয়েছেন, ‘সংবাদমাধ্যমে খবর থেকেই চাকরি থেকে বরখাস্ত হওয়ার কথা জেনেছি৷ তার পরে একটি সংক্ষিপ্ত চিঠির মাধ্যমে আমাকে সিআরপিএফ-এর পক্ষ থেকে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়৷ চাকরি হারানোর কথা জেনে আমি এবং আমার পরিবার স্তম্ভিত৷ কারণ সদর দফতর থেকে অনুমতি পাওয়ার পরই আমি পাকিস্তানি নাগরিককে বিয়ে করেছি৷’
মুনির আরও জানিয়েছেন, চাকরি থেকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে এবার আইনি সাহায্য নেবেন তিনি৷ আদালতেও মামলা করবেন৷ আত্মবিশ্বাসী মুনির বলেন, ‘ন্যায়বিচার পাওয়ার বিষয়ে আমি নিশ্চিত৷’
গতকালই সিআরপিএফ-এর পক্ষ থেকে মুনির আহমেদকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার কথা জানানো হয়৷ অনলাইনে পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশের বাসিন্দা মেনাল খানের সঙ্গে প্রায় দু বছর আগে পরিচয় হয় মুনিরের৷ এর পর সম্পর্ক তৈরি হয় তাঁদের মধ্যে৷ গত বছর ২৪ মে ভিডিও কলের মাধ্যমে তাঁদের নিকাহ সম্পন্ন হয়৷
এ বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি ওয়াঘা-আটারি সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন মুনিরের স্ত্রী মেনাল৷ গত ২২ মার্চ তাঁর ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যায়৷ যদিও মেনালের স্ত্রী দীর্ঘমেয়াদি ভিসার আবেদন করায় জম্মু কাশ্মীর হাইকোর্ট তাঁকে পাকিস্তানে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়ার উপরে স্থগিতাদেশ জারি করে৷ দীর্ঘমেয়াদি ভিসার আবেদন করে মুনির এবং তাঁর স্ত্রী যাবতীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন৷ ইন্টারভিউও দেন তাঁরা৷
মুনিরের দাবি, বিয়ের পর যাবতীয় নথি, তাঁর এবং তাঁর বাবা-মায়ের হলফনামা, স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধানের হলফনামা, জেলা উন্নয়ন পর্ষদের হলফনামা যথাযথ নিয়ম মেনে তিনি সিআরপিএফ কর্তৃপক্ষকে জমা দিয়ে বিয়ের কথা জানান৷ তখন তাঁকে ঊর্ধবতন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, বিয়ের জন্য এনওসি বা নো অবজেকশন সার্টিফিকেট দেওয়ার কোনও সংস্থান সিআরপিএফ-এ নেই৷ কিন্তু যেহেতু তিনি সব নথি জমা দিয়েছিলেন, তাই মুনির ভেবেছিলেন পাকিস্তানি নাগরিককে বিয়ে করলেও কোনও সমস্যা নেই৷
মুনিরের দাবি, ‘২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর প্রথমবার আমি বিয়ে করার পরিকল্পনার কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাই৷ তখন আমাকে পাসপোর্ট, বিয়ের কার্ড, হলফনামা সহ কিছু নথি জমা দিতে বলা হয়৷ আমি সে সমস্ত কিছু জমা দেওয়ার পর ২০২৪ সালের ৩০ এপ্রিল আমাকে সদর দফতর থেকে বিয়ের করার জন্য অনুমতি দেওয়া হয়৷’
গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় ২৬ জনের মৃত্যুর পর সমস্ত পাকিস্তানি নাগরিকদের ভারত ছাড়ার নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় সরকার৷ তখনই মুনিরের বিয়ের বিষয়টি সামনে আসে৷