পাকিস্তানের অস্ত্রেই উরি হামলার জবাব দেওয়া হোক ৷ এই নিয়ে প্রায় একমত সেনা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক ও নিরাপত্তা এজেন্সিগুলো। সীমান্ত পেরিয়ে পাক সীমান্তে অভিযান চালানোর দাবিও যথেষ্টই জোরালো। এমনটা হলে তা হবে পুরোদস্তুর যুদ্ধ। তাই একথা কৌশলগতভাবেই প্রচার করতে রাজি নয় কেন্দ্র। তবে সেই সিদ্ধান্ত কেন্দ্র আদৌ নিয়ে উঠতে পারবে কিনা সন্দেহ।
advertisement
এদিন সকাল থেকে প্রথমে নর্থ ব্লকে বৈঠকে বসেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মনোহর পারিক্কর, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল ও আইবি প্রধান ৷ এর পর নর্থ ব্লকের বৈঠক শেষের পর কাশ্মীরের বর্তমান পরিস্থিতি ও উরি হামলার রিপোর্ট নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে যান রাজনাথ সিং ৷ সেখানে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে বসেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং, প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পারিক্কর, অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল ও সেনাপ্রধান দলবীর সিং সুহাগ ৷
দীর্ঘক্ষণ প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে আলোচনা চলে ৷ এই বৈঠক শেষে সমস্ত রিপোর্ট নিয়ে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৷ প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক শেষে আপাতত যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তাতে, আন্তর্জাতিক স্তরে পাকিস্তানকে কূটনৈতিক চালে ‘একঘরে’ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত ৷ তবে অভিযান নিয়ে কোনও সিদ্ধান্তই এদিন ঘোষণা করা হয়নি ৷
জঙ্গি ঠেক ভাঙতে পাক ভূখণ্ডে উঠেছে অভিযানের দাবি ৷ তবে এব্যাপারে ভেবে চিন্তে আন্তর্জাতিক মত নিয়েই এগোবে কেন্দ্র ৷ তবে যদি অভিযানের সিদ্ধান্ত শেষপর্যন্ত নিয়ে উঠতে পারে ভারত তাহলে প্রথমেই উপত্যকাতেই অভিযান চালানো হবে ৷
পাকিস্তানের মাটিতে সেনা অভিযান চালানোর চাপ বাড়াচ্ছে বিভিন্ন মহল। উপত্যকায় মোতায়েন ২৩টি সেনা রেজিমেন্টও চাইছে এবার পাকিস্তানকে দেওয়া হোক খোলাখুলি জবাব। তবে আন্তর্জাতিক সমর্থন না নিয়ে সে পথে হাঁটতে চায় না কেন্দ্র। পরিস্থিতি যাই হোক, পাক ভূখণ্ডে অভিযানের মতো সিদ্ধান্ত নেওয়া মোদি সরকারের পক্ষে কঠিন।
উরি হামলার জবাব কীভাবে দেবে ভারত? সোমবার পিএমও-তে হাইপ্রোফাইল বৈঠকে তার সম্ভাব্য রূপরেখা পেশ করেছেন নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল।
কৌশল ১
পাক অধিকৃত কাশ্মীরের জঙ্গি ঘাঁটিতে প্যারাট্রুপার হামলা
কৌশল ২
ইজরায়েলের মত সীমান্তে আয়রন ডোম থেকে জঙ্গি ঘাঁটি লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়া
কৌশল ৩
মোসাদের ঢংয়ে আউট অফ লাইন অভিযান। সেনা পরিচয় ছাড়াই প্রশিক্ষিত বাহিনী হানা দেবে পাক ভূখণ্ডে
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক, প্রধানমন্ত্রীর দফতরে সোমবার দফায় দফায় বৈঠকের পরও কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়নি। হামলার জবাবে কী করা উচিত. তার ভার প্রধানমন্ত্রীর ওপরই ছেড়েছেন রাজনাথ ও পরিকর। নিজে থেকে সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি কেউই। সোমবার রাতেও প্রধানমন্ত্রীর দফতরে বসে নিরাপত্তা বিষয়ক কোর কমিটি। সেখানেও স্পষ্ট হয়েছে সিদ্ধান্তহীনতা।
চাপ বাড়ছে আর্মি ইনটেলিজেন্স উইংয়ের ওপরও। বুধবার দেশের সবকটি সেনা বিভাগের ভিডিও কনফারেন্সে বসবেন সেনাপ্রধান দলবীর সিং সুহাগ। তারপর সেনার অভিমত জানানো হবে কেন্দ্রকে। সেনা যদি অভিযান চেয়ে চাপ দেয়, তা হলে অস্বস্তি আরও বাড়বে মোদি-রাজনাথদের।