কিন্তু কেউ কেউ সেই ভয়ানক স্মৃতি চেষ্টা করেও ভুলতে পারছেন না। বাহানাগার মিল কলোনির বাসিন্দারা রোজই আতঙ্কে কাটাচ্ছেন। কারণ দুর্ঘটনার পর দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া বগি রাখা যেখানে, সেখান থেকে ৫০ ফিট দূরত্বে তাঁদের বাড়ি।
ট্রেনের বগি যেখানে রাখা সেখান থেকে বাড়ি মাত্র ২০ ফুট দূরে। জীবন বোস ও তাঁর মা সুমতি বোস থাকেন মিল কলোনিতে। সন্ধ্যে হতেই নেমে আসে যেন ভয়।
advertisement
আরও পড়ুন- বাহানাগা বাজার স্টেশনে দুর্ঘটনা, এখনও বাতিল একাধিক ট্রেন! দেখুন তালিকা
সুমিতা দেবী জানান, “বাড়ির জানালা খুললে দেখা যায় দোমড়ানো মোচড়ানো ট্রেনের বগি। বাড়িতে ভেসে আসে পচা গন্ধ। আমাদের বাড়ি একদম শেষের দিকে। এদিকটা পুরো অন্ধকার। সন্ধের পর বেরোতে ভয় করে। বগির দিকে চোখ গেলেই ভয়ানক স্মৃতি। একের পর এক সারি সারি লাশ সেসব মনে পড়ে। ভয়ে সিঁটিয়ে থাকি। বাড়ি বেঁচে চলে যাওয়ার উপায় নেই।”
সুমিতার ছেলে জীবন কলেজে ফার্স্ট ইয়ার স্টুডেন্ট। জীবন জানান, “বগি থেকে এখনও পচা মাংসের গন্ধ বেরোচ্ছে। ভয় করছে। কিছুতে ওই ভয়ঙ্কর স্মৃতি ভুলতে পারছি না। বাড়ির জানালা খুললেই দেখা যায় ওই ট্রেনের বগি।
গৌড়ি রায়ের অশোক নগরে বাড়ি। কিন্তু বিয়ের পর ৩২ বছর ধরে নাতি নাতনিকে নিয়ে আছেন বাহানাগায় মিল কলোনিতে। গৌরী দেবী বলেন, “জানালা খুললেই ভাঙা চোরা বগি দেখতে হয় রোজ। বেদনাদায়ক ভয়ার্ত স্মৃতি। গন্ধে বমি পায়। ভুলতে পারছি না। কারণ দুমড়ানো বগি থেকে বাড়ির দূরত্ব মাত্র ৫০ ফিট। রাতে ঘুমোতে পারি না।
আরও পড়ুন- কী এমন ঘটছে করমণ্ডল দুর্ঘটনার সেই বাহানাগা বাজার স্টেশনে? বড় সিদ্ধান্ত নিল রেল
কল্পিতা পন্ডা ( মা ) ও মেয়ে শোভাময়ী পন্ডা। কল্পিতা ছেলে, মেয়ে শোভাময়ী, স্বামীকে নিয়ে ভাড়া থাকেন মিল কলোনিতে। স্বামী খান্তা পাড়ার নাচিন্দা প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষকতা করেন। বাড়ি থেকে মাত্র 40 ফুট দূরে পড়ে আছে দুমড়ানো ট্রেনের বগি। দেখলে সেই স্মৃতি মনে পড়ে তাঁদের।
কল্পিতা জানান, “কিছুতেই ওই ভয়ংকর স্মৃতি ভুলতে পারছি না। ওই বিকট আওয়াজ এখনও মনে হচ্ছে ভেসে আছে। বগি দেখলেই মানুষের হাহাকার কান্না কথা মনে পড়ছে। সারি সারি লাশ বগিতে এদিক ওদিকে পড়ে থাকার দৃশ্য, এখনো ভুলতে পারছিনা।”
কল্পিতারমেয়ে শোভাময়ী বালেশ্বর হোস্টেলে থাকেন, শোভা বলেন, “বাড়ি থেকে দেখা যায় ট্রেনের বগি। এখনো গা ছম ছম করে রাতে।” আল্পনা রানা, মিল কলোনিতে স্বামী সনাতন রানাকে নিয়ে ভাড়া বাড়িতে থাকেন। প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে বাহানাগা মিল কলোনিতে ভাড়া থাকেন। আল্পনা বলেন, “বাড়ি থেকে বেরোলেই দেখতে হচ্ছে দুমড়ে যাওয়া বগি রাখা। বিকট আওয়াজ এখনো কানে বাজছে।
ARPITA HAZRA