ঘরের ভিতরে, দৃশ্যটি ছিল ভয়াবহ। ত্রিশ বছর বয়সি শিবানী তাম্বে, ওরফে নেহাকে বিছানায় মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়৷ আর তাঁর স্বামী রাজ তাম্বেকে সিলিং ফ্যান থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। কিন্তু পুলিশকে আরও বেশি অবাক করে দিয়েছিল দেয়ালে লিপস্টিক দিয়ে লেখা বার্তাগুলি -যা সম্পর্কে দোষ, হৃদয় ভেঙে যাওয়া এবং হতাশার ইঙ্গিত দেয়।
advertisement
দেওয়ালে লিপস্টিক-লিখনের মধ্যে ছিল রাজেশ বিশ্বাস নামে একজনের নাম এবং মোবাইল নম্বর। লেখায় তাঁকে দম্পতির দাম্পত্য জীবনে অশান্তি সৃষ্টি করার জন্য অভিযুক্ত করা হয়েছিল। একটি লাইনে লেখা ছিল, “রাজেশ বিশ্বাসের কারণে আমরা মারা যাচ্ছি,” এবং আরও একটি আবেগঘন নোটে লেখা ছিল, “বাচ্চারা, আমি তোমাদের ভালবাসি।” বার্তাটিতে স্ত্রীর ফোনকল নিয়ে ঘন ঘন ঝগড়া এবং রাজের ক্রমবর্ধমান সন্দেহের কথাও প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রেমের বিয়ের পর প্রায় এক দশক ধরে একসঙ্গে বসবাস করা এই দম্পতি একটি বেসরকারি কোম্পানিতে সাফাইকর্মী হিসেবে কাজ করতেন এবং তিনটি ছোট বাচ্চা লালন-পালন করতেন। প্রতিবেশীরা প্রকাশ করেছেন যে তাদের মধ্যে ঝগড়া নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছিল৷ প্রায়ই অবিশ্বাস এবং বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগের কারণে তাঁদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হত।
২৪শে নভেম্বর, যখন রাজ বা নেহা কেউই বিকেল পর্যন্ত ঘর থেকে বার হননি, তখন নেহার মা, রীনা চিন্না, উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন এবং তাঁদের খোঁজ নিতে যান। তবে দরজাটি ভিতর থেকে বন্ধ ছিল। শেষ পর্যন্ত যখন তিনি দরজাটি খোলা সম্ভব হয়, তখন দেখা যায় এক ভয়াবহ দৃশ্য৷ রীনা দেখেন তাঁর মেয়ে বিছানায় নিথর৷ পাশাপাশি ঝুলন্ত অবস্থায় মিলল তাঁর জামাইকে৷
ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা নেহার ঘাড়ে আঁচড়ের চিহ্ন খুঁজে পেয়েছেন, যা দৃঢ় সন্দেহ জাগিয়েছে যে রাজ আত্মহত্যা করার আগে স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে। ঘর থেকে উদ্ধার হওয়া একটি সুইসাইড নোটে দেওয়ালে লেখা একই অভিযোগ প্রতিধ্বনিত রয়েছে, যা এই ঘটনায় হত্যা-আত্মহত্যা তত্ত্বকেই শক্তিশালী করে। তবে তদন্তকারীরা কোনও দিকই উড়িয়ে দিচ্ছেন না। লেখা, সুইসাইড নোট, আঘাত এবং ঘটনার সময়রেখা-সবকিছুই নিশ্ছিদ্র তদন্তের অধীনে রয়েছে।
আরও পড়ুন : ‘যত খুশি কাঁদো,আমার কিছু যায় আসে না…’ শিক্ষকের তিরস্কার! যে অপমানে চরম সিদ্ধান্ত ছাত্রের
নগর পুলিশ সুপার (সিএসপি) নিমিতেশ সিং নিশ্চিত করেছেন যে দু’টি মৃতদেহ একই ঘরে পাওয়া গিয়েছে এবং একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। “সকল দিক তদন্ত করা হচ্ছে,” তিনি বলেন৷ তাম্বে পরিবারের ভিতরে আসলে কী ঘটেছিল, তা নির্ধারণ করার ক্ষেত্রে ফরেনসিক রিপোর্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে বলে ধারণা পুলিশের।
If you or someone you know needs help, call any of these helplines: Aasra (Mumbai) 022-27546669, Sneha (Chennai) 044-24640050, Sumaitri (Delhi) 011-23389090, Cooj (Goa) 0832- 2252525, Jeevan (Jamshedpur) 065-76453841, Pratheeksha (Kochi) 048-42448830, Maithri (Kochi) 0484-2540530, Roshni (Hyderabad) 040-66202000, Lifeline 033-64643267 (Kolkata)
