পাথর হোক বা পোড়ামাটি, দেশের নানা স্থানের শতাব্দীপ্রাচীন মন্দিরগুলো এখনও দর্শককে আহ্বান জানায়। কিন্তু বিহারের ছাপড়ায় এমন একটি মন্দির রয়েছে যার নকশা ভারতের মধ্যে অতুলনীয়। গর্খা ব্লকের বাংরা পাথরা গ্রামে অবস্থিত এই মন্দিরটি দূর থেকে দেখলে মনে হয় ঠিক যেন গঙ্গার ঢেউয়ে নৌকা ভাসছে, যার উপরে একটি দুর্দান্ত মন্দির নির্মিত হয়েছে। এর অনন্য নকশা এটিকে কেবল স্থানীয়দের জন্যই নয়, অন্যান্য রাজ্যের ভক্তদের জন্যও আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করেছে।
advertisement
থাইল্যান্ডের একটি অনন্য প্ল্যান
এই মন্দিরের গল্পটি এর নকশার মতোই আকর্ষণীয়। স্থানীয় বাসিন্দা সুরেশ রাই ব্যাখ্যা করেছেন যে, এই মন্দিরের প্ল্যানটি থাইল্যান্ডে বসবাসকারী একজন ইঞ্জিনিয়ার আঁকেন, যাঁকে দায়িত্ব বৈদ্যনাথ সাহ নামে একজন ব্যক্তি দিয়েছিলেন। প্রাথমিকভাবে বৈদ্যনাথ সাহ নিজের খরচে নির্মাণ শুরু করেছিলেন, কিন্তু এর জাঁকজমক এবং অনন্য নকশা দেখার পর আশেপাশের গ্রামের লোকেরাও অবদান রাখতে এগিয়ে এসেছিলেন। সকলের প্রচেষ্টায় এই দুর্দান্ত এবং অনন্য মন্দিরটি ১৯৯৫ সালে সম্পন্ন হয়।
একই ক্যাম্পাসে শিব এবং হনুমান
স্থানীয় বাসিন্দা মন্টু প্রসাদ যাদব বলছেন যে, মন্দির কমপ্লেক্সের দুটি প্রধান অংশ রয়েছে। নৌকা আকৃতির এই কাঠামোর এক প্রান্তে ভগবান শিবের একটি লিঙ্গ স্থাপিত, অন্য দিকে, সঙ্কটমোচন হনুমানজির একটি দুর্দান্ত মূর্তি রয়েছে। দুটি গ্রামের মাঝখানে নির্মিত এই মন্দিরটি সম্প্রীতি ও ঐক্যের প্রতীক। মন্দিরের শান্ত ও আধ্যাত্মিক পরিবেশ দর্শনার্থীদের এক অনন্য শান্তির অনুভূতি প্রদান করে।
দূর-দূরান্ত থেকে ভক্তরা আসেন
এই মন্দিরের খ্যাতি এখন বিহারের প্রতিটি কোণে ছড়িয়ে পড়েছে। মানুষ এখানে কেবল পূজা করতেই নয়, এর অনন্য স্থাপত্য দুই চোখ ভরে দেখতেও আসে। এই মন্দিরটি প্রমাণ যে বিশ্বাস এবং সৃজনশীলতা কীভাবে একত্রিত হয়ে একটি বিস্ময় তৈরি করতে পারে, যা শতাব্দী ধরে মানুষকে অনুপ্রাণিত করবে। দাবি করা হয় যে এই নৌকার মতো নকশাটি ভারতে কেবল এই মন্দিরেরই রয়েছে, যা এটিকে আরও বিশেষ করে তুলেছে।
