মারাঠি ভাষায় কথা না বলতে পারার কারণে এক কর্ণাটক বাস কন্ডাক্টরকে মারধর করা হয়েছে। আক্রান্ত কন্ডাক্টর মহাদেব হুক্কেরি অভ্যন্তরীণ চোট পেয়েছেন। এই ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং এক নাবালককে আটক করেছে পুলিশ।
advertisement
একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে, যেখানে দেখা গেছে, একদল লোক বাসের ভেতর ওই কন্ডাক্টরকে শারীরিক ও মৌখিকভাবে লাঞ্ছিত করছে।
কীভাবে ঘটল সংঘর্ষ? – কর্ণাটক স্টেট রোড ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশন (KSRTC)-এর কন্ডাক্টর মহাদেব হুক্কেরি সংবাদ সংস্থা ANI-কে জানিয়েছেন, ঘটনাটি ঘটে বেলগাভিতে যখন এক ব্যক্তি ও এক মহিলা বাসে উঠেন।
“কর্ণাটকে মহিলাদের জন্য বাসযাত্রা বিনামূল্যে। ওই মহিলা দুটো ফ্রি টিকিট চাইলেন। আমি তাকে একটি টিকিট দিলাম এবং জিজ্ঞাসা করলাম দ্বিতীয় টিকিট কার জন্য। তিনি পাশে বসে থাকা ব্যক্তির দিকে ইঙ্গিত করলেন। তখন আমি কান্নাড় ভাষায় বললাম, পুরুষদের জন্য বাসযাত্রা বিনামূল্যে নয়,” বলেন হুক্কেরি।
তিনি আরও জানান, “তারা আমাকে মারাঠিতে কথা বলতে বললেন, কিন্তু আমি মারাঠি জানি না। আমি তাদের বললাম, আমার সঙ্গে কান্নাড় ভাষায় কথা বলুন। এরপর বাসের মধ্যে ৬-৭ জন ব্যক্তি আমাকে আক্রমণ করল। বাস থামানোর পর আরও প্রায় ৫০ জন এসে আমাকে মারধর করল।”
পুলিশের আশ্বাস – পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এই ঘটনা ঘটেছিল দুপুর ১২:৩০ নাগাদ, একটি সেমি-আরবান CBT-সুলেভাভি বাসে। অভিযুক্ত দম্পতি কন্ডাক্টরকে মারাঠিতে কথা বলতে বাধ্য করার চেষ্টা করেন এবং পরে তাদের সঙ্গীদের ডেকে তাকে আক্রমণ করেন।
পুলিশ ইতিমধ্যে অভিযুক্ত মারুতি তুরুমুরি, রাহুল নাইডু এবং বলু গোজাগেকারকে গ্রেফতার করেছে। বেলগাভির BIMS হাসপাতালে গিয়ে ডেপুটি কমিশনার অফ পুলিশ (DCP) রোহন জগদীশ কন্ডাক্টরের স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নেন এবং জানান যে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শুক্রবার অভিযুক্তদের আদালতে পেশ করা হলে তাদের ১৪ দিনের বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠানো হয়।
গত কয়েক মাস ধরে কর্ণাটকে ভাষা নিয়ে বিতর্ক ক্রমশ বাড়ছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া সম্প্রতি জনগণকে কান্নাড় ভাষার সুরক্ষা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন। এর পর থেকেই ভাষা সংক্রান্ত বিষয়কে কেন্দ্র করে একাধিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে, যেখানে লোকজনকে স্থানীয় ভাষা না জানার কারণে আক্রমণের মুখে পড়তে হয়েছে।