মেরামতের সময় মডিফায়েড উইন্ডশিল্ড দিচ্ছে বোয়িং। ফলে নতুন উড়োজাহাজ ড্রিমলাইনারে উইন্ডশিল্ডে ফাটল ধরার ঘটনায় বোয়িংয়ের নির্মাণ ত্রুটি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। বোয়িংয়ের ড্রিমলাইনার সিরিজে তিনটি মডেল রয়েছে। এগুলো হচ্ছে ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার, ৭৮৭-৯ ড্রিমলাইনার, ৭৮৭-১০ ড্রিমলাইনার। এ তিনটি মডেলের উড়োজাহাজের প্রযুক্তিগত বৈশিষ্ট্য প্রায় একই ধরনের হলেও আকার-আয়তনে ভিন্ন। ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনারের দৈর্ঘ্য ১৮৬ ফুট। ৭৮৭-৯ ড্রিমলাইনারের দৈর্ঘ্য ২০৬ ফুট এবং ৭৮৭-১০ ড্রিমলাইনারের দৈর্ঘ্য ২২৪ ফুট।
advertisement
প্রযুক্তিগত উন্নয়নের কারণে সারা বিশ্বে ড্রিমলাইনারের জনপ্রিয়তা রয়েছে। কম্পোজিট ম্যাটেরিয়াল দিয়ে তৈরি হওয়ায় এ উড়োজাহাজ ওজনে হালকা। দীর্ঘ সময় ভ্রমণেও যাত্রীরা যেন ক্লান্তিতে না ভোগেন, সে জন্য ড্রিমলাইনারের ভেতরের এয়ার কম্প্রেসার সিস্টেম অন্যান্য উড়োজাহাজের তুলনায় উন্নত।বেশ কয়েক বছর ধরে ইউরোপ, আমেরিকা, এশিয়ার বিভ্ন্নি এয়ারলাইনের ‘বোয়িং ড্রিমলাইন ৭৮৭’ সিরিজের উড়োজাহাজে ককপিট উইন্ডো ও উইন্ডশিল্ড ক্র্যাক হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।২০২৪ সালের ২০ জানুয়ারি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজের উইন্ডশিল্ড ক্র্যাক হয় মাঝ আকাশে।
ঢাকা থেকে দাম্মামগামী ফ্লাইটের ককপিটের উইন্ডশিল্ডে (সামনের অংশের কাচ) ফাটল দেখা দেয়। ঢাকা থেকে ওড়ার দুই ঘণ্টা পর উড়োজাহাজটি আবারও হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফিরে আসে। বোয়িং ৭৮৭-৯ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজটিতে ২৮৫ জন যাত্রী ও ১২ জন ক্রু ছিলেন।এর আগে ২০২২ সালে আগস্টে কাতারের দোহাগামী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটকে (বিজি ৩২৫) ভারতের আকাশ থেকে ঢাকায় ফিরে আসতে হয়েছিল উইন্ডশিল্ড ক্র্যাক (ফাটল) হওয়ার কারণে। বিমানের ওই উড়োজাহাজটি ছিল বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার, যার নাম ‘আকাশবীণা’। ভারতের দিল্লির আকাশসীমায় গেলে সেটির উইন্ডশিল্ডে ক্র্যাক (ফাটল) হয়।ভিয়েতনাম এয়ারলাইন্সের একটি ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজের ককপিটের জানালায় ফাটল ধরে ২০২৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর। ভিয়েতনামের টান সন নাট ইন্টারন্যাশনাল বিমানবন্দর থেকে ওই ফ্লাইটটি উড্ডয়ন করেছিল জাপানের নারিতা ইন্টারন্যাশনাল বিমানবন্দরের উদ্দেশে।
উড়োজাহাজটি ছিল বোয়িংয়ের তৈরি ৭৮৭-৯ ড্রিমলাইনার (রেজিস্ট্রেশন ভিএন-এ৮৬৭)। ভূমি থেকে ৪১ হাজার ফুট উচ্চতায় উড়ে যাওয়ার সময় সেটির ককপিটের বাম পাশের জানালার ফাটল ধরে। পরে পাইলট বাতাসের উচ্চচাপ থেকে সুরক্ষার জন্য উড়োজাহাজটিকে নিচে নামিয়ে ৩১ হাজার ফুটে নিয়ে আসেন।২০১৮ সালের আগস্টে কলকাতা থেকে দিল্লি যাওয়ার পথে এয়ার ইন্ডিয়ার একটি ড্রিমলাইনারের উইন্ডশিল্ডে ফাটল দেখা দেয়। ২০১৯ সালের নভেম্বরে মাঝ আকাশে এয়ার কানাডার একটি ড্রিমলাইনারের উইন্ডশিল্ডে ফাটল ধরলে পাইলট গন্তব্যে না গিয়ে দ্রুত নিকটবর্তী বিমানবন্দরে ফ্লাইটটি অবতরণ করান। ২০২৩ সালের জুনে এয়ার নিউজিল্যান্ডের একটি ড্রিমলাইনারের ককপিটের জানালা ক্র্যাক হয়।