স্থানীয় অটল কমিউনিটি হলে এই ‘সম্পর্ক থেকে সমর্থন’ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। আগামী বছরই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে লোকসভা নির্বাচন। লোকসভা নির্বাচন এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা মাত্র। সেদিক থেকে হাতে আর বেশি সময় নেই। আর এই মহারণকে সামনে রেখে রাজ্যের ক্ষমতাসীন দল ভারতীয় জনতা পার্টি অনেক আগে থেকেই ময়দানে নেমে পড়েছে। ইতিমধ্যে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় দলীয় কার্যকর্তাদের নিয়ে সাংগঠনিক সভা, বৈঠক, সমাবেশ সেরে নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ড. মানিক সাহা।
advertisement
আরও পড়ুন: প্রবল বেগে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড়! কাল থেকেই বাংলার আবহাওয়ায় ভোলবদল, কোন কোন জেলা ভাসবে
এই অবস্থায় রামচন্দ্রঘাট মণ্ডলের উদ্যোগে আয়োজিত সাংগঠনিক সভায় অন্যতম বক্তা হিসেবে অংশ নেন তিনি। এই সাংগঠনিক সভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, জনজাতি অংশের মানুষের আর্থ সামাজিক অবস্থার উন্নয়নে বিশেষ অগ্রাধিকার দিয়েছে বর্তমান সরকার। শুধু আর্থিকভাবে নয়, তাদের মানোন্নয়ন করাও সরকারের অন্যতম লক্ষ্য। সেই দিশা নিয়েই কাজ করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে শুধু কথায় নয়, কাজের মাধ্যমে প্রমাণ করতে চায়।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ”এডিসিতে ১৯টি জনজাতি সম্প্রদায়ের বিভিন্ন গোষ্ঠী থেকে যাতে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পায় তার জন্য এডিসির আসন সংখ্যা ৫০টি করতে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে রাজ্য সরকার। এডিসিকে ‘তিপ্রা টেরিটোরিয়াল কাউন্সিল’ করার জন্যও কেন্দ্রের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। এতদিন আমরা শুনেছি মহারাজারা নাকি ত্রিপুরার জন্য কিছুই করেননি। আর এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর মহারাজাদের অবদান মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। আগরতলার সিঙ্গারবিল এয়ারপোর্ট মহারাজা বীর বিক্রম কিশোর মানিক্যের জন্য হয়েছে। অথচ সেই প্রাপ্য সম্মান তাঁকে দেওয়া হয়নি। কিন্তু ভারতীয় জনতা পার্টির সরকার ক্ষমতায় এসে মহারাজাকে সম্মান জানাতে উদ্যোগ নিয়েছে। তাই প্রধানমন্ত্রী নিজে এসে মহারাজা বীর বিক্রম কিশোর মানিক্যের নামে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ঘোষণা করে গিয়েছেন। মহারাজার জন্মদিন ১৯ আগস্টকে সরকারি ছুটি হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, কামান চৌমুহনী সংলগ্ন চৌমুহনীতে মহারাজা বীর বিক্রম কিশোর মানিক্যের মর্মর মূর্তির স্থাপন করা হয়েছে এবং মহারাজার নামে এই চৌমুহনীর নামকরণ করা হয়েছে। আগে গড়িয়া পুজোর সময়ে শুধু একদিন ছুটি দেওয়া হত। কিন্তু এই সরকার আসার পর গড়িয়া পুজোর ছুটি দু’দিন করা হয়েছে। যাতে পুজো ভালভাবে পালন করা যায়। জনজাতি অংশের ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদানের বন্দোবস্ত করা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাদের বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য কোচিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।”
মুখ্যমন্ত্রী ডা: সাহা বলেন, এই সরকার কাজে বিশ্বাস করে। কাজের মাধ্যমেই মানুষের বিকাশ ঘটাতে চায়। আগে রাজ্যে বিভাজনের রাজনীতি প্রত্যক্ষ হতো। এই বিভাজনের রাজনীতি করেই উন্নয়নের ক্ষতি করা হয়েছে। এতে রাজ্যের অনেক ক্ষতিসাধন হয়েছে। এজন্য রাজ্যের প্রজন্ম নষ্ট হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এই সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর জাতি জনজাতি সকল অংশের মানুষকে নিয়ে এক ত্রিপুরা শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত গড়ে তোলার স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে। জনজাতিদের সার্বিক কল্যাণে প্রধানমন্ত্রী খুবই আন্তরিক। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশিত দিশায় কাজ করছে রাজ্য সরকারও। এর আগে রামচন্দ্রঘাটের ধুপছড়ায় সুরজিত দেববর্মার বাড়িতে স্থানীয় সমাজপতিদের নিয়ে একটি বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন সাংগঠনিক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিজেপি প্রদেশ সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য, জনজাতি কল্যাণ মন্ত্রী বিকাশ দেববর্মা, বিধায়ক পিনাকী দাস চৌধুরী সহ জেলা ও মণ্ডল স্তরের নেতৃত্ব। পরে পূর্ব রামচন্দ্রঘাট গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান তপজিৎ দেববর্মার বাসভবনে ভারতীয় জনতা পার্টির প্রদেশ সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্যের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজন করেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যের ঐতিহ্যমণ্ডিত কলাপাতায় খাবার পরিবেশনার মাধ্যমে এই পরিবারের আতিথেয়তায় মুগ্ধ হন মুখ্যমন্ত্রী।