আগামী ৭ জানুয়ারি দুদিনের সফরে রাজ্যে আসার কথা ছিল বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডার। এই সফরকালে তিনি পূর্ব মেদিনীপুরের চণ্ডীপুরে এটি জনসভা করতেন। এছাড়া, কলকাতায় জাতীয় গ্রন্থাগারে একটি সাংগঠনিক পর্যালোচনা বৈঠকেও যোগ দেওয়ার কথা ছিল তাঁর।
আরও পড়ুন : খুব তাড়াতাড়ি কার্ডিও ভাসক্যুলার অ্যান্ড থোরাসিক সার্জারি চালু হতে চলেছে বর্ধমান মেডিক্যালে
advertisement
অন্যদিকে, চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের একাধিক রাজ্যে আগামী ৫ থেকে ২৯ জানুয়ারি দলীয় প্রবাস কর্মসূচি শুরু করতে চলেছে বিজেপি। সেই কর্মসূচিরই অঙ্গ হিসাবে আগামী ১৭ জানুয়ারি রাজ্যে আসার কথা ছিল শাহের। ১৭ জানুয়ারি তারাপীঠে পুজো দিয়ে অনুব্রত মণ্ডলের গড় বীরভূমের সিউড়িতে এবং হুগলির আারামবাগে সভা করতেন তিনি। শাহের সেই কর্মসূচিও আপাতত হচ্ছে না বলেই বিজেপি সূত্রে জনা গিয়েছে।
কিন্তু, পর পর কেন এভাবে দুই হেভিওয়েট নেতার বঙ্গ সফর বাতিল হয়ে গেল? তা নিয়ে দলেরই অন্দরে শুরু হয়েছে গুঞ্জন। তবে প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, আগামী ১৬ এবং ১৭ জানুয়ারি দিল্লিতে বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠক ডাকা হয়েছে। এই বৈঠক নানা দিক থেকেই বিজেপির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তাই আপাতত সেদিকেই মন দিতে চাইছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
এর আগে বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠক হয়েছিল গত বছরের ২ এবং ৩ জুলাই। সাধারণত, এক বছর অন্তর এই বৈঠক হয়। কিন্তু, এবার নির্ধারিত সময়ের বেশ কিছুটা আগেই এই বৈঠক ডাকা হয়েছে। এর অন্যতম কারণ, চলতি মাসের শেষেই শেষ হতে চলেছে বিজেপির বর্তমান সভাপতি হিসাবে জে পি নাড্ডার মেয়াদ।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ায় আচমকাই দলের সভাপতি পদ থেকে সরে দাঁড়াতে হয়েছিল অমিত শাহকে। সেই সময়, তড়িঘড়ি সভাপতি পদে বসানো হয়েছিল নাড্ডাকে। এবার, সামনে চব্বিশের লোকসভা ভোট। নাড্ডার নেতৃত্বে দল বিগত উপ নির্বাচনে বিজেপি মোটের উপর ভাল ফল করেছে। তাছাড়া, সভাপতি হিসাবে নাড্ডা মোদির অত্যন্ত কাছের লোক বলেও পরিচিত। সঙ্ঘেরও পূর্ণ সমর্থন রয়েছে তাঁর উপরে। তাই জল্পনা, এবারের কর্ম সমিতির বৈঠকে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি হিসাবে জে পি নাড্ডার মেয়াদ বাড়ানোর ঘোষণা হতে চলেছে। আপাতত, এই বৈঠকের দিকেই নজর দেওয়ার জন্য অন্যান্য দলীয় কর্মসূচি বাতিল রাখছেন শাহ এবং নাড্ডা।
আরও পড়ুন : সরোবরের পাশে ফুলের মেলা, আকাশে আতশবাজির খেলা, বর্ধমানে শুরু হল কৃষ্ণসায়র উৎসব
পরপর এভাবে হেভিওয়েট নেতৃত্বের সব কর্মসূচি স্থগিত হয়ে যাওয়ায় জল্পনা শুরু হয়েছে বিজেপির অন্দরে। রাজ্য বিজেপির এক নেতার মতে, '' জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকের দিন অনেক আগেই নির্ধারিত হয়েছিল। তা সত্ত্বেও, শাহ, নাড্ডার সফর নিয়ে গত মঙ্গলবার পর্যন্ত রাজ্যের কাছে কোনও নির্দেশিকা এসে পৌঁছল না! গতকালও, দলের বীরভূমের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংসদ ও রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক লকেট চট্টোপাধ্য়ায় সিউড়ির মাঠ পরিদর্শন করতে গিয়েছিলেন। আরামবাগ জেলা পার্টিকেও শাহের সভার জন্য প্রস্তুত হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। পূর্ব মেদিনীপুরে নাড্ডার সভা নিয়েও দলীয় স্তরে প্রস্তুতি চলছিল। কলকাতায় নাড্ডার কর্মসূচির জন্য জাতীয় গ্রন্থাগার কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে অবহিত করা হয়েছিল। তারপরে হঠাৎ এই খবর।
রাজ্যে হেভিওয়েট নেতাদের আসা নিয়ে আশায় বুক বাঁধছিলেন কর্মী থেকে নেতারা। কিন্তু তারপর, প্রথমে বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নরেন্দ্র মোদির না আসতে পারা, আর তারপরে শাহ-নাড্ডার সফর বাতিলের খবর। রাজনৈতিক মহলের মতে, সফর বাতিলের কারণ যাই হোক না কেন, এতে কিছুটা হলেও ধাক্কা খেল দলের নিচু তলার কর্মীদের মনোবল।