গল্প নয়, সত্যি ঘটনা৷ বিহারের একটি গ্রামে এমনই হয়ে আছে৷ আজ বা কালের গল্প নয়৷ এই ঘটনা হয়ে আসছে বছরের পর বছর৷ সেই স্বাধীনতার পর থেকেই৷ গ্রামের প্রতিটি মানুষই দিনমজুর। আরও একটা ব্যাপার রয়েছে৷ রাজ্যের এই অংশে প্রচুর পরিমাণে আখের চাষ হয়৷ কিন্তু গ্রামের একজনের কাছেও এক টুকরো জমি নেই। সবাই মাঠে কাজ করে, দিন আনে দিন খায়, কিন্তু মাথা গোঁজার জায়গাটুকুও নেই৷
advertisement
আরও পড়ুন : লাঠির আঘাতে চোখ নষ্ট খুদে শিক্ষার্থীর, পরিবারকে জাল চেক দিল অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক!
এতটা কষ্ট করে দিনযাপন৷ এরপরেও গ্রামবাসীদের কোনও অভিযোগ নেই৷ হয়তো জীবনের প্রতি হতাশা থেকেই একবারে চুপ হয়ে গিয়েছে সবাই৷ গ্রামের পুরুষদের পাশাপাশি মহিলারাও দিনমজুরের কাজ করতে বাধ্য হয় এখানে। আরও একটি তথ্য রয়েছে এই গ্রামের৷ আজ পর্যন্ত গ্রামে কেউ সরকারি চাকরি পায়নি। পশ্চিম চম্পারন জেলার অন্তর্গত গ্রামটির নাম “হারকা”৷ যেখানে জনসংখ্যাও নেহাৎ কম নয়৷ সংখ্যাটা প্রায় ৮০০। গ্রামের বাসিন্দা রাজকুমার সাহনি বলেন, গোটা গ্রামে মাত্র দু’জন লোক আছে যারা দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা শেষ করেছে।
আরও পড়ুন : ‘উগ্রপন্থার সমস্যা থেকে এখন মুক্ত ত্রিপুরা…’ দাবি মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহার
যেখানে মানুষের মাথা গোঁজার জায়গা নেই, সেখানে স্কুল থাকবে না সেটাই বাস্তব৷ কোনও সরকারি স্কুল নেই গ্রামে। স্বাধীনতার ৭৮ বছর পরও এখানে কোনো স্কুল বা পঞ্চায়েত তৈরি হয়নি। গ্রাম থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে একটি সরকারি বিদ্যালয় থাকলে শিশুরা সেখানে পড়তে যায় না।
বাড়ির করুণ অবস্থা দেখে, রাজকুমার দশম শ্রেণী শেষ করার পর একটি অস্থায়ী বেসরকারি চাকরিতে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। লীলাবতী গ্রামের বাইরে তিনি অন্যদের বাড়িতে ঝাড়ু দেওয়ার কাজও করেন।
একটা গ্রাম যেখানে সাধারণ মানুষ বেঁচে আছে কোনও আশা-আকাঙ্খা ছাড়াই৷ জমি নেই, মাথায় ছাদ নেই৷ এরপরেও তাদের কোনও অভিযোগ নেই! প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে হারকার গ্রামবাসীদের কাছে এটাই জীবন, পালাবার পথ নেই, পাল্টানোর ইচ্ছাও নেই৷