মৃত এবং আহত: সরকারি রেকর্ড অনুযায়ী, এই দুর্ঘটনায় ৩,৭৮৭ জনের মৃত্যু হয়। ঘটনার সময়ই প্রাণ হারান ২,২৫৯ জন। ২০০৬ সালের একটি হলফনামা অনুসারে, সরকার ৪,৫৮,১২৫ জনের আহত হওয়ার কথা জানা যায়। এর মধ্যে ৩৮,৪৭৮ জন অল্পবিস্তর আহত হন। কিন্তু ৩,৯০০ জন চিরতরে পঙ্গু হয়ে যান।
ভয়ের রাত, মিথাইল লিকেজ: মাঝরাতে ইউসিআইএল কীটনাশক প্ল্যান্টের মধ্যে আচমকা রাসায়নিক বিক্রিয়া শুরু হয়, যার ফলে মিথাইল আইসোসায়ানেট (এমআইসি) গ্যাস নির্গত হয়। আধ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ এই বিষাক্ত গ্যাসের সংস্পর্শে এসেছিলেন। কারখানার স্টোরেজ ট্যাঙ্কগুলির একটি ফুটো হয়ে যায়। পুরো শহর গ্যাস চেম্বারে পরিণত হয়।
advertisement
লিকেজ মেকানিজম: প্ল্যান্টে তিনটি ভূগর্ভস্থ ৬৮,০০০-লিটারের তরল মিথাইল আইসোসায়ানেট গ্যাসের স্টোরেজ ট্যাঙ্ক ছিল। প্ল্যান্ট নম্বর সি-র একটি ট্যাঙ্ক ফুটো হয়ে যায়।
ছড়িয়ে পড়ে বিষ: প্রায় ৪০ টন মিথাইল আইসোসায়ানেট গ্যাস বাতাসে মিশে যায়। শুরু হয় ধ্বংসযজ্ঞ। মিথাইল আইসোসায়ানেট অত্যন্ত বিষাক্ত। শরীরে গেলে ফুসফুসের সমস্যা, ফুসফুসের শোথ, এম্ফিসেমা, রক্তক্ষরণ, ব্রঙ্কিয়াল নিউমোনিয়া হয়। সঙ্গে মৃত্যু।
পরিণতি: গ্যাস ছড়িয়ে পড়ার পর ভোপালের বাসিন্দাদের শুরু হয় শ্বাসকষ্ট। সঙ্গে ত্বক এবং চোখে জ্বালা। অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ, নিউমোনিয়া এবং মৃত্যুর খবর আসতে শুরু করে। প্ল্যান্টের কাছাকাছি যারা ছিলেন তাঁরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন।
কাজ করেনি অ্যালার্ম: আসল সময় ইউসিআইএল-এর অ্যালার্ম কাজ করেনি। ফলে পরিস্থিতি আরও বিগড়ে যায়। সাধারণ মানুষ জানতেই পারেনি তাঁরা কী ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে পড়েছেন। হাজার হাজার মানুষ হাসপাতালে ভর্তি হতে শুরু করে। পর্যাপ্ত চিকিৎসা সুবিধা না থাকায় সঙ্কট আরও বাড়ে।
স্বাস্থ্য ও পরিবেশের উপর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব: বিষাক্ত গ্যাস শরীরের অভ্যন্তরীন অঙ্গগুলির উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। ব্যাপক স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দেয়। ভয়াবহ হয়ে ওঠে ভোপালের চিত্র। গাছপালা কালো হয়ে যায়, মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায় রাস্তায়। মানুষ ও প্রাণীর উর্বরতাতেও স্থায়ী প্রভাব পড়ে।