ইতিমধ্যেই এমনই খবর প্রকাশ পেয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপত্র ‘জাগো বাংলায়।’ একাধিক বিজেপি নেতা যোগাযোগ রাখছেন তৃণমূলের সঙ্গে দাবি করা হচ্ছে তৃণমূল সূত্রে। যদিও বিজেপি নেত্রী, পাপিয়া দত্ত বলছেন, ‘‘সব মিথ্যা কথা। টিএমসির মুখপত্রে যা প্রকাশ পেয়েছে তা মিথ্যা। আমরা আমাদের দলকে চিনি। আমাদের রাজ্য সভাপতির সাথেই সকলের যোগাযোগ আছে। আগামী দিনে এক সাথে কাজ করবে সবাই। যা বলা হচ্ছে তা মিথ্যা সম্পূর্ণ।’’
advertisement
তৃণমূল মুখপত্র বলছে, বিজেপির এক ঝাঁক নেতা-মন্ত্রী তৃণমূলে আসার জন্য পা বাড়িয়েই রয়েছে। জাগো বাংলায় লেখা হয়েছে, শেষ ৭২ ঘণ্টায় যতজন বিজেপি বিধায়ক যোগাযোগ করেছেন বা গোপন বৈঠক করেছেন তৃণমূলের সঙ্গে তাতে বিপ্লব দেবের সরকার সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানোর দিকে যাচ্ছে। যদিও পাশাপাশি এমনও বলা হয়েছে, তৃণমূলের লক্ষ বিধায়কদের দলত্যাগ করিয়ে সরকার গঠন নয় বরং নির্বাচনে লড়াই করেই নতুন করে সরকার গড়তে চায় তৃণমূল।
তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ জানিয়েছেন, ‘‘ত্রিপুরায় সংখ্যা গরিষ্ঠতা হারাচ্ছে বিজেপি। দিনক্ষণ দেখে ফেলে দিতে পারা যায়। তবে মানুষের সমর্থন নিয়ে টিএমসি সরকার আসবে। একাধিক বিজেপি নেতা বার্তা নিয়ে ক্রমশ আসছেন। পরের পর যোগদান ও বৈঠক চলছে। ফলে বিজেপি গরিষ্ঠতা দাবি করার জায়গায় থাকবে না। ত্রিপুরায় সরকার চাইছেন না সরকারে থাকা অনেকেই।’’
তৃণমূলের দাবি, ত্রিপুরা বিজেপিতে এই মুহূর্তে দুই ধরনের বিধায়ক আছেন। একদল স্পষ্টই বিপ্লব দেবের বিরুদ্ধে। অন্য দল এখনও বিপ্লব দেবের সমর্থক। কিন্তু বুঝতে পারছেন মানুষের মন বিপ্লব দেব সরকারের উপর থেকে সরছে তাই দূত মারফত যোগাযোগ রাখছেন। জাগো বাংলার এ হেন দাবির পিছনে কিছু যুক্তিও রয়েছে। ত্রিপুরায় সম্প্রসারণের লক্ষ্যে তৃণমূল বেশ কয়েকটি স্ট্র্যাটেজি নিয়েছে। প্রতি সপ্তাহেই দলের শীর্ষ নেতারা ত্রিপুরা যাচ্ছেন। যোগাযোগ রাখছেন বিভিন্ন শিবিরের নেতাদের সঙ্গে। তা ছাড়া আগে থেকেই সুদীপ রায় বর্মনদের মতো নেতারা দলে থেকেও বেসুরো। রাজনীতি চর্চাকারীরা অনেকেই মনে করতে পারবেন, দিন কয়েক আগে কেন্দ্রীয় দল সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে এলে, বেশ কয়েকজন বিপ্লব দেবের উপর অনাস্থা প্রকাশ করেন।
তৃণমূল কি বিজেপির এই অন্তর্দ্বন্দ্বের ফয়দা তুলবে? রাজনৈতিক মহলের মত, ২০২৪-এর মহারণের আগে ত্রিপুরাকে অনেকটা ওয়ার্ম আপ ম্যাচের মতো দেখছে তৃণমূল। এখানে ভিত নাড়াতে পারলে দিল্লির মসনদও টলবে, এমনটাই মনে করে তৃণমূলের অন্দর। তাই ত্রিপুরার মন পেতে কোনও কৌশলই ছাড়বে না তৃণমূল। প্রতিদিনই পালা করে চলছে যোগদান। ভোট এখনও অনেকটাই দেরি তবু সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার চোখে পড়ার মতো। প্রতিদিন সব স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রথম পাতায় স্থান পাচ্ছে জোড়াফুলের খবর। সব মিলিয়ে ত্রিপুরায় কিস্তিমাতে নিত্যনতুন দান দিতে মরিয়া তৃণমূল। যদিও ত্রিপুরা বিজেপির নেতা সুব্রত চক্রবর্তী বলছেন, ‘‘ যা হবে সময়ে দেখা যাবে। আমাদের কাছে এরকম কোনও খবর নেই যে আমাদের বিধায়করা ওদিকে যাবার জন্যে পা বাড়িয়ে আছেন। প্রচারের জন্যে ওরা বলছে এসব। নাটকবাজি করছে ওরা। দলের কাছে কোনও খবর নেই। ওরা আগে যাদের নিয়ে ব্যর্থ হয়েছে তাদের নাম আবার নিচ্ছে। ওরা শূন্য থেকে শুরু করার চেষ্টা করেছিল। এখন মাইনাস থেকে শুরু করছে। আসলে আবার ওরা সেই শুন্যতেই ফিরে আসবে।’’
আবীর ঘোষাল