গুজরাত হিংসা এবং নরেন্দ্র মোদি বিষয়ক তথ্যচিত্র, 'ইন্ডিয়া: দ্য মোদি কোয়েশ্চন'। এই একটা তথ্যচিত্র। আর তা ঘিরেই একের পর এক ঘটনা। তথ্যচিত্রটি প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই তা নিয়ে তীব্র নিন্দায় সরব হয়েছে বিজেপি। কেন্দ্রীয় সরকারের একাধিক নেতামন্ত্রী এই তথ্যচিত্রকে একপাক্ষিক, বিভ্রান্তিকর এবং দেশের সংহতি রক্ষার পক্ষে ক্ষতিকর হিসাবে উল্লেখ করেছেন। এমনকি, কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে ভারতের সমস্ত সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম থেকে সরিয়ে দিতে বলা হয়েছে এই তথ্যচিত্রের যাবতীয় লিঙ্ক।
advertisement
এরপরেই ভারত সরকারের বিরুদ্ধে কণ্ঠরোধের অভিযোগ তুলেছেন তৃণমূলের মহুয়া মৈত্র থেকে শুরু করে অন্য বিরোধী নেতারা।
ভারত সরকারের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও মঙ্গলবার রাত ৯টা নাগাদ জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিসির তথ্যচিত্র প্রদর্শিত হওয়ার কথা ছিল। তবে অভিযোগ, তার আগেই ক্যাম্পাসে বিদ্যুৎ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় ইন্টারনেট পরিষেবা।
এমনকি, JNUSU সভাপতি কাসিম দাবি করেন,বিদ্যুৎ এবং ইন্টারনেট পরিষেবা বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার প্রতিবাদে তাঁরা যখন ক্যাম্পাসের নর্থ গেট-এর কাছে বিক্ষোভ মিছিল করছিলেন, তখন তাঁদের দিকে পাথর ছোড়েন এভিবিপি-র সদস্যেরা। পাথর ছোড়া অভিযোগ উঠেছে পুলিশের উপরেও। পাথর ছোড়া নিয়ে অভিযোগ জানাতে রাতেই বসন্ত কুঞ্জ থানার বাইরে বিক্ষোভ দেখান ছাত্রছাত্রীরা। পরে তাঁরা এ নিয়ে থানায় লিখিত অভিযোগও দায়ের করে।
যদিও ছাত্রছাত্রীদের উপরে পাথর ছোড়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছে দিল্লি পুলিশ। ডিসিপি সাউথ ওয়েস্ট মনোজ সি-র দাবি, ক্যাম্পাসের মধ্যে এই ধরনের কোনও ঘটনাই ঘটেনি।
এই সবের পরেও অল স্টুডেন্টস অ্যসোসিয়েশন (AISA)-র সদস্যেরা মোবাইলে একটি অ্যাপ ডাউনলোড করে তথ্যচিত্রটি দেখেন ও লিঙ্ক শেয়ার করে প্রতিবাদ জানান।
অন্যদিকে, গত সোমবারই হায়দরাবাদ কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নর্থ ক্যাম্পাসে বিবিসির তথ্যচিত্র দেখানোর বন্দোবস্ত করেছিল ছাত্রছাত্রীদের একাংশ। অন্তত ৫০ জন পড়ুয়া তথ্যচিত্রটি দেখতে হাজির হয়েছিলেন। এবার সেই ঘটনা নিয়েও রিপোর্ট তলব করলেন বিশ্ববিদ্য়ালয় কর্তৃপক্ষ।
হায়দরাবাদ বিশ্ববিদ্য়ালয়ের রেজিস্ট্রারের তরফে একটি বিবৃতি জারি করে জানানো হয়, "খবর পেয়েই আমাদের নিরাপত্তারক্ষীদের নিয়ে ডিন অফ স্টেডেন্স ওয়েলফেয়ার সেখানে গিয়েছিলেন। কিন্তু, প্রদর্শনী বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হলেও তা মানা হয়নি।" তিনি জানিয়েছেন, তথ্যচিত্রটি প্রদর্শনীর সময় কোনও আপত্তিকর ঘটনা না ঘটলেও বিষয়টি নিয়ে রিপোর্ট তলব করা হয়েছে ছাত্র সংসদের কাছে।
এদিকে, মঙ্গলবার কেরলের একাধিক জায়গতেও মোদির বিতর্কিত ছবি দেখানো হয়েছে বলে সূত্রের খবর। একদিকে এসএফআই-এর মতো সংগঠনের নেতৃত্ব একের পর এক জায়গায় এই তথ্যচিত্র প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করেছে, অন্যদিকে, তা নিয়ে পথে নেমে বিক্ষোভ দেখিয়েছে এবিভিপি এবং বিজেপির যুব মোর্চার সদস্যেরা। এই টানাপোড়েন ঘিরে মঙ্গলবার দিনভর উত্তপ্ত ছিল তিরুঅনন্তপুরম, এরনাকুলামের মতো জায়গা। বিক্ষোভ হঠাতে জলকামানও ছুড়তে হয় পুলিশকে।
মোদির তথ্যচিত্র প্রসঙ্গে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধিকে বলতে শোনা গিয়েছে, "সত্য সব সময় সামনে আসে।"