এর একমাত্র কারণ অবশ্যই ত্রিপুরায় তৃণমূলের প্রভাব বিস্তার। বাংলায় তৃতীয় বার ক্ষমতা দখল করে এবার গোয়া, ত্রিপুরার মতো বিজেপি শাসিত রাজ্যকে টার্গেট করেছে তৃণমূল। আর ত্রিপুরাকে টার্গেট করার মূল কারণই হল রাজ্যটি বাঙালি অধ্যুষিত।
আর এই ত্রিপুরা পুরভোটই হতে চলেছে তৃণমূলের কাছে সেমিফাইনাল। কারণ পুরভোটে ভালো ফল করে যদি ত্রিপুরা বিধানসভা দখল করতে পারে তৃণমূল, তাহলে তা তাঁদের কাছে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ হবে।
advertisement
কারণ, প্রথমত, তখন তৃণমূলই হয়ে উঠবে ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির প্রধান প্রতিপক্ষ। দ্বিতীয়ত, বাম ও কংগ্রেসকে বোঝানো যাবে, তাঁরাই বিজেপির কট্টর বিরোধী আর তৃতীয়ত, এই ফলে তাঁরা তুলে ধরতে পারবে বিজেপি শাসিত রাজ্যের 'অপশাসন'।
আরও পড়ুন: ত্রিপুরা এয়ারপোর্টের বাইরে কালো ব্যাগ, সামনেই অভিষেকের কনভয়! মারাত্মক অভিযোগ
আর সেই সূত্রেই গত ৭২ ঘণ্টায় ত্রিপুরায় রাজনৈতিক উত্তাপ বেড়ে গিয়েছে কয়েকগুণ। শুরুটা হয়েছিল বাবুল সুপ্রিয়কে ঘিরে শুরু হওয়া বিতণ্ডা দিয়ে। যা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছায় রবিবার সকালে সায়নী ঘোষকে থানায় ডেকে নিয়ে গিয়ে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করে গ্রেফতার করার পর। পরিস্থিতি দেখে রবিবারই ত্রিপুরা যাওয়ার চেষ্টা করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু রাত হয়ে যাওয়ায় বিমান অবতরণের সুযোগ না থাকায় তা সম্ভব হয়নি।
শেষমেশ সোমবার সকালেই আগরতলার উদ্দেশ্য রওনা দেন অভিষেক। কিন্তু তিনি আগরতলা পৌঁছানোর আগেই বোমাতঙ্ক ছড়ায় বিমানবন্দরের বাইরে। যদিও বিজেপির অভিযোগ, ''ওখানে কোনও বোমা ছিল না। কলকাতার কেউ ওই ব্যাগটি রেখেছিলেন। এটা নাটক।'' পাল্টা আগরতলায় পা রেখেই অভিষেক বলেন, ''বিপ্লব দেবের রাজ্যে জঙ্গলরাজ চলছে। আমি এলেই এমন করছে বিজেপি। খেলা হবে স্লোগান দেওয়ার জন্য সায়নীকে গ্রেফতার করা হল। কিন্তু বলে রাখছি, ওরা যাই করুক, তৃণমূল এক ইঞ্চি জমি ছাড়বে না।''
অন্যদিকে, ত্রিপুরা ইস্যুকে ঘিরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মন্ত্রকের বাইরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন তৃণমূল সাংসদরা। আবার কলকাতায় বিজেপি-র রাজ্য দফতরের বাইরেও বিক্ষোভ দেখায় তৃণমূল।
আরও পড়ুন: 'ক্লাস এইটের স্তরে' নামতে চান না তথাগত রায়! ফের স্পষ্ট করে দিলেন নিশানা
তবে, এতকিছুর পরও ত্রিপুরা পুরভোটে ৩৩৪ আসনের মধ্যে ২২৪ আসনে ভোট হবে। বাকি আসনগুলি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় জিতে গিয়েছে বিজেপি। তৃণমূলের নজর অবশ্য আপাতত আগরতলা পুরসভা। সেই সূত্রে ৫১ আসনে প্রার্থী দিয়েছে তৃণমূল। আর এই নির্বাচনই এখন নজর কেড়ে নিয়েছে গোটা দেশের।