এর আগে চলতি সপ্তাহেই নিরাপত্তাজনিত কারণ দেখিয়ে বাংলাদেশের খুলনা, রাজশাহী এবং চট্টগ্রামের মতো শহরে ভিসা পরিষেবাকেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ভারত৷ এমনকি, চট্টগ্রামের ভিসা অফিস কেন্দ্রের বাইরে বিক্ষোভকারীদের ভিড় জড়ো হয়েছিল বলেও ছবি, ভিডিও সামনে আসে৷ ভবন লক্ষ্য করে ছোঁড়া হয় ইট-পাটকেলও৷
advertisement
২০২৪ সালের যে জুলাই বিপ্লবে শেখ হাসিনার সরকারের পতন হয়েছিল, সেই ছাত্র আন্দোলনের প্রায় প্রথমসারিতে ছিলেন ছাত্রনেতা ওসমান হাদি৷ গত ১২ ডিসেম্বর ঢাকার পল্টন এলাকায় বক্স কালভার্ট রোডে নির্বাচনী প্রচারে গেলে তাঁকে সরাসরি গুলি করেন এক মুখোশধারী আততায়ী৷ ঢাকায় চিকিৎসা করানো হলেও অবস্থার অবনতি হওয়ায় এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে করে হাজিকে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হয়৷ কিন্তু, গত ১৮ ডিসেম্বর সেখানেই মারা যান তিনি৷
ওই কট্টরপন্থী ভারত বিরোধী ছাত্রনেতার মৃত্যুর পর থেকেই অশান্ত বাংলাদেশ৷ ঢাকা থেকে সরাসরি ভারতীয় দূতাবাসে হামলার হুমকি দিতে দেখা গিয়েছে ঢাকার এক কট্টরপন্থী নেতাকে৷ বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার আসার পর থেকেই বদলাতে শুরু করেছে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক৷ সম্প্রতি সেই টানাপড়েনের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন সে দেশের বৈদেশিক সম্পর্ক সংক্রান্ত উপদেষ্টা৷ তবে ওসমান হাদির মৃত্যু সেই সম্পর্কের টানাপড়েনকে আরও গুরুতর জায়গায় নিয়ে এসেছে৷
হাই কমিশনের কাজ বন্ধ রাখার কারণ হিসাবে নিরাপত্তার অভাববোধকেই দায়ী করেছে বাংলাদেশ৷ যদিও ভারত জানিয়েছে, এমন কোনও সম্ভাবনাই নেই৷
কেন্দ্রীয় বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জায়সওয়াল জানিয়েছেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু তরুণ দীপু চন্দ্র দাসের মৃত্যুর পরে গত ২০ ডিসেম্বর ২০-২৫ জন তরুণ বাংলাদেশ হাই কমিশনের বাইরে জড়ো হয়েছিলেন এবং বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন৷
আরও পডুন: বাংলাদেশে ফের নেতাকে গুলি! একেবারে কান ঘেঁষে…এবার তাঁর সঙ্গী নারীকে খুঁজছে পুলিশ
তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশে এই ঘটনা সম্পর্কে কিছু বিভ্রান্তিকর প্রচার করা হচ্ছে৷ আসল ঘটনা হল, গত ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখে প্রায় ২০-২৫ জন যুবক নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে জড়ো হয়ে ময়মনসিংহে দীপু চন্দ্র দাসের হত্যার প্রতিবাদে স্লোগান তুলেছিল, একই সাথে বাংলাদেশের সকল সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার আহ্বান জানিয়েছিল।’’
তিনি আরও বলেন যে, হাই কমিশনের সীমানা লঙ্ঘন করার বা কোনও নিরাপত্তা পরিস্থিতি তৈরি করার কোনও চেষ্টা করা হয়নি। মুখপাত্র বলেন, “ঘটনাস্থলে মোতায়েন পুলিশ কয়েক মিনিটের পরে দলটিকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এই ঘটনাগুলির দৃশ্যমান প্রমাণ সকলের জন্য জনসমক্ষে উপলব্ধ৷”
বিদেশ মন্ত্রক আরও জানিয়েছে যে, ভারতীয় কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশের ঘটনাবলি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, “আমাদের আধিকারিকেরা বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ রাখছেন এবং সংখ্যালঘুদের উপর হামলার বিষয়ে আমাদের তীব্র উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। আমরা দীপু চন্দ্র দাসের বর্বর হত্যাকাণ্ডের অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনার আহ্বানও জানিয়েছি।’’
