এই ঘটনা ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে৷ সেখানকার পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের সিভিল লাইনস শাখার গ্রাহক অবসরপ্রাপ্ত ওই স্কুল শিক্ষিকা৷ সাইবার প্রতারকদের ফাঁদে পড়েছিলেন তিনি৷ সম্ভবত তাঁকে ডিজিটাল অ্যারেস্ট-এর হুমকি দিয়ে ব্ল্যাকমেল করা হয়েছিল৷
জানা গিয়েছে, কয়েকদিন আগে পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের ওই শাখায় আসেন ওই বৃদ্ধা৷ ব্যাঙ্কের এক কর্মচারীকে তিনি বলেন, তিনি ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকা নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে অন্য একটি অ্যাকাউন্টে সরাতে চান৷ বৃদ্ধার এই অনুরোধ শুনেই সন্দেহ হয় ওই ব্যাঙ্ক কর্মীর৷
advertisement
সঙ্গে সঙ্গেই ওই ব্যাঙ্ক কর্মী ব্যাঙ্ক ম্যানেজারকে বিষয়টি জানান৷ এর পরই ব্যাঙ্কের আধিকারিকরা খতিয়ে দেখতে গিয়ে জানতে পারেন, যে অ্যাকাউন্টে ওই বৃদ্ধা টাকা সরাতে চাইছেন, সেটি একটি কারেন্ট অ্যাকাউন্ট৷ গত অক্টোবর মাসেই সেই অ্যাকাউন্টটি ঝাড়খণ্ডের রাঁচিতে খোলা হয়েছে৷ যা দেখেই সন্দেহ হয় ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের৷
সঙ্গে সঙ্গেই ব্যাঙ্কের ম্যানেজার সাইবার ক্রাইম পুলিশকে বিষয়টি জানান৷ ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশ মিলে ওই বৃদ্ধাকে নানা অছিলায় সন্ধে পর্যন্ত ব্যাঙ্কেই ব্যস্ত রাখেন৷ যাতে ওই বৃদ্ধা কোনওভাবেই নিজের টাকা অন্য কোনও অ্যাকাউন্টে সরাতে না পারেন৷
ওই বৃদ্ধার ছেলে বিদেশে থাকেন৷ ব্যাঙ্কের ম্যানেজার বৃদ্ধার ছেলের সঙ্গেও যোগাযোগ করে গোটা ঘটনার কথা জানান৷ ফলে বৃদ্ধা তাঁর ফিক্সড ডিপোজিট ভেঙে ফেললেও সেই টাকা তিনি আর প্রতারকদের অ্যাকাউন্টে পাঠাতে পারেননি৷
জানা গিয়েছে, ওই বৃদ্ধার নাম চঞ্চল শ্রীবাস্তব৷ সেভিংস, ফিক্সড ডিপোজিট, সিনিয়র সিটিজেন অ্যাকাউন্ট মিলিয়ে অবসরপ্রাপ্ত ওই স্কুল শিক্ষিকার মোট ১ কোটি ২৭ লক্ষ টাকার সঞ্চয় রয়েছে৷
ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সন্দেহ, সম্ভবত প্রতারকদের দল ওই বৃদ্ধাকে আয়কর সংক্রান্ত ভয় দেখিয়েই ডিজিটাল অ্যারেস্ট করার হুমকি দেয়৷ বৃদ্ধা যাতে তাঁর কষ্টার্জিত অর্থ তাদের অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করেন, সেই চাপও দেয় প্রতারকরা৷
ব্যাঙ্ক ম্যানেজার এবং কর্মীদের ভূমিকার প্রশংসা করেছেন পিএনবি-র জোনাল ম্যানেজার দীপক সিং৷ তিনি জানিয়েছেন, বড় অঙ্কের কোনও টাকা অ্যাকাউন্ট থেকে তোলার ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি কঠোর পদক্ষেপ মেনে চলার গাইডলাইন রয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এবং পিএনবি-র৷ সেই প্রোটোকল মেনেই এই প্রতারণার চেষ্টা আটকে দেওয়া সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছেন পিএনবি-র ওই শীর্ষ আধিকারিক৷
