এই ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় যারা প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন, তাদের অভিজ্ঞতা ছিল মর্মান্তিক। স্থানীয় এক বাসিন্দা সংবাদমাধ্যমকে জানান, “আমরা ক্রিকেট খেলছিলাম, তখনই বিমানটি একদম আমাদের মাথার ওপর দিয়ে গর্জন করতে করতে চলে যায়। সাধারণত এত নিচু দিয়ে কোনো বিমান যায় না। আমরা ভয় পেয়ে যাই, কারণ সেটা খুবই কাছাকাছি এসে গিয়েছিল।”
advertisement
প্রত্যক্ষদর্শী আরও বলেন, “যদি বিমানটি ঘন জনবসতীপূর্ণ এলাকার ঠিক মাঝখানে পড়ত, তাহলে ১৫০০ থেকে ২০০০ জন মানুষ মারা যেতে পারতেন। আমরা সাইটে গিয়ে ১৫ থেকে ২০ জনকে উদ্ধার করতে পেরেছি। পাইলট সাহসিকতার সঙ্গে বিমানটিকে হোস্টেলের দিকে সরিয়ে নিয়ে যান, যাতে বসতিপূর্ণ এলাকায় পড়া এড়ানো যায়। সত্যিই পাইলটকে স্যালুট জানাতে হয়।”
ঘটনাস্থলের ভিডিও ফুটেজ ও বর্ণনায় দেখা গেছে, বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনারটি ওড়ার পর পরই উচ্চতা হারিয়ে ফেলে এবং কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই বিকট বিস্ফোরণে আগুন ধরে যায়।
আরও পড়ুন: কাজে ফেরা হল না! আহমেদাবাদ বিমান দুর্ঘটনায় পুড়ে ছাই মোদি পরিবারের ভাই-বোন, পরিবারে শোকের ছায়া…
বিমানটিতে মোট ২৩০ জন যাত্রী ও ১২ জন ক্রু ছিলেন। যাত্রীদের মধ্যে ১৬৯ জন ভারতীয়, ৫৩ জন ব্রিটিশ, ৭ জন পর্তুগিজ ও ১ জন কানাডিয়ান নাগরিক ছিলেন।
বিমান দুর্ঘটনায় সব যাত্রী ও ক্রু সদস্য প্রাণ হারালেও একজন ব্রিটিশ নাগরিক, ৪০ বছর বয়সি বিষ্ণু কুমার রমেশ, যিনি ১১A এক্সিট রোতে বসেছিলেন, তিনি গুরুতর আহত অবস্থায় জীবিত রয়েছেন।
বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ফলে মেঘানীনগরের একটি মেডিকেল হোস্টেলও সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং সেখানে অবস্থানরত বহু ছাত্রছাত্রী প্রাণ হারান। এই মৃত্যু সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, দুর্ঘটনার সময় তারা আকাশে বিকট শব্দ শুনতে পান এবং এক বিশাল আগুনের গোলা আকাশে ছুটে যেতে দেখেন। বিমানটি ৮২৫ ফুট উচ্চতায় ছিল এবং ওড়ার সময়ই সেটি উচ্চতা অর্জনে ব্যর্থ হয় বলে জানা গেছে।
এই ঘটনার পর গোটা এলাকায় শোক ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। প্রশাসন ও উদ্ধারকারী দল দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কার্য শুরু করে। রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও অসংখ্য রাজনৈতিক নেতারা এই মর্মান্তিক ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন।