সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, মিতিক্ষা শেঠ নামে বছর পঁচিশের ওই যুবতী পেশায় এক জন ফ্যাশন ডিজাইনার। তাঁর নামে একটি পার্সেল ছিল। সেটি রিসিভ করা বা নেওয়ার জন্য একটি লিঙ্কে ক্লিক করেছিলেন। সেই লিঙ্কে ক্লিক করতেই ফাঁকা হয়ে যায় অ্যাকাউন্ট। আসলে পালডিতে এক দর্জির কাছে কিছু জামাকাপড় সেলাই করাতে দিয়েছিলেন ওই যুবতী। ১১ মে নাগাদ দর্জি কাছে ফোন করে জানতে চান যে, তাঁর জামাকাপড় সেলাই করা হয়ে গিয়েছে কি না! দর্জি জানান, কাজ শেষ করে তিনি তা ডেলিভারির জন্য একটি ক্যুরিয়র ফার্মের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছেন।
advertisement
আরও পড়ুন: শান্তিপূর্ণ নির্বাচন পরিচালনা শিখতে ত্রিপুরায় আসা উচিত! তৃণমূল নেতাদের তোপ মানিক সাহার
মিতিক্ষার অভিযোগ, দর্জির ফোন আসার পরে ২-৩ দিন কেটে গেলেও তিনি ওই পার্সেল হাতে পাননি। এর ফলে তিনি গুগলে তা ট্র্যাক করতে শুরু করেন। এর কয়েক মিনিটের মধ্যেই একটি অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন পান ওই যুবতী। নিজেকে ক্যুরিয়র ফার্মের কর্মী হিসেবে পরিচয় দিয়ে ফোনের ও-পারের ব্যক্তি বলেন, তাঁর কাছেই মিতিক্ষার পার্সেল রয়েছে। তবে ডেলিভারি ফি দিলেই মিতিক্ষা পার্সেল হাতে পেয়ে যাবেন। সেই কারণে ওই ব্যক্তি মিতিক্ষাকে ৫ টাকা ডেলিভারি ফি হিসেবে পাঠাতে বলেন। এর পর ওই ব্যক্তি পেমেন্টের জন্য একটি লিঙ্ক পাঠান ওই যুবতীর কাছে। আর মিতিক্ষাও সেই লিঙ্কে ক্লিক করে টাকা পাঠিয়ে দেন। এর পর আরও এক বার লিঙ্কে ক্লিক করে অতিরিক্ত ফি হিসেবে ফের ৫ টাকা পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয় তাঁকে।
আরও পড়ুন: বর্ষায় ট্রেনের লাইনে বিপদের আশঙ্কা? এবার স্বস্তি, সুরক্ষার জন্য বড় পদক্ষেপ রেলের!
মিতিক্ষা জানান যে, দ্বিতীয় বার লেনদেনের পরে তাঁর মনে সন্দেহ দানা বাঁধে। অনলাইন জালিয়াতির কথা মনে হওয়ায় নিজের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টও ডিঅ্যাক্টিভেট করে দেন। এর পর ১৩-২১ মে পর্যন্ত বাইরে থাকায় নিজের ফোন ব্যবহার করেননি তিনি। এই ঘটনার বেশ কয়েক দিন কেটে যায়। মিতিক্ষা এক বন্ধুকে টাকা পাঠাতে গিয়ে দেখেন তাঁর অ্যাকাউন্টে পর্যাপ্ত টাকা নেই।
বিষয়টা খতিয়ে দেখার জন্য পরের দিনই নিজের ব্যাঙ্কের শাখায় গিয়েছিলেন ওই যুবতী। ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্টে দেখা যায় যে, ১২-১৩ মে-র মধ্যে তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে চার বারে মোট ১.৩৮ লক্ষ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। অনলাইন জালিয়াতির কথা বুঝতে পেরে সঙ্গে সঙ্গে তিনি সাইবারক্রাইম হেল্পলাইনে কল করে ভারতীয় দণ্ডবিধি এবং আইটি আইনের আওতায় প্রতারণার মামলা দায়ের করেন।
আপাতত এই ঘটনার তদন্ত চলছে। সাইবার তদন্তকারীদের মতে, আসলে মিতিক্ষা ওই দিন একটি ফিশিং লিঙ্কে ক্লিক করে ফেলেছিলেন। এই ঘটনার পরে বারবার করে মানুষকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছে সাইবার ক্রাইম বিভাগ। ওটিপি কিংবা পাসওয়ার্ডের মতো গোপন তথ্য যাতে মানুষ কারওর সঙ্গে শেয়ার না করে, তার জন্যও বারবার বলা হচ্ছে। এমনকী কোনও রকম লিঙ্কে ক্লিক করতেও নিষেধ করা হচ্ছে।