তাঁদের মতে, যদি পাইলটদের মধ্যে শেষ কথোপকথন বাদ দেওয়া হয়, তা হলে বাকি রিপোর্ট যেন কোনও পণ্যের বিবরণ (product description) বলেই মনে হয়। বিবিসির একটি প্রতিবেদনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর সঙ্গে কথা বলা হয়েছে, যেখানে তাঁরা দুর্ঘটনার এক মাস পর প্রকাশিত রিপোর্ট নিয়ে নিজেদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
ইমতিয়াজ, যিনি তাঁর ভাই, বউদি এবং ভাগ্নে-ভাগ্নিকে এই দুর্ঘটনায় হারিয়েছেন, তিনি বলেছেন, এই রিপোর্টের জন্য তাঁরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন। তবে রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতেই তাঁরা হতাশ।
advertisement
আরও পড়ুন- ভুল নয়, ইচ্ছে করেই বিপদ ডেকে আনেন এয়ার ইন্ডিয়ার পাইলট? তদন্ত রিপোর্ট দেখে বিস্ফোরক দাবি
রিপোর্ট আসার পর তিনি বলেন, “আমরা খুব মনোযোগ দিয়ে পড়েছি। কিন্তু এর মধ্যে এমন কিছুই পাইনি যা আমাদের সন্তুষ্ট করতে পারে। যদি পাইলটদের শেষ কথোোপকথনের অংশ বাদ দিই, তা হলে বাকি সব কিছুই এমন মনে হয়েছে যা শুধুই তথ্যের উপস্থাপনা। এই রিপোর্টে
এমন কিছুই নেই যা প্রকৃতপক্ষে দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে জানায়।”
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আগামী মাসে হয়তো আরও কিছু প্রকৃত তথ্যসহ পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে।
আলি বলেন, “এই রিপোর্টটি আমাদের জন্য সত্যিইগুরুত্বপূর্ণ। আমরা জানতে চাই, আসলে সেদিন কী ঘটেছিল! এখন আমাদের জীবনে আর কিছু বদলাবে না। আমরা দুর্ঘটনার দিন থেকেই শোকের মধ্যে আছি। কিন্তু কিছু প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার আশা তো করতেই পারি।”
এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট AI-171 গত মাসের ১২ জুন ২৩০ জন যাত্রী ও ১২ জন ক্রু সদস্য নিয়ে আহমেদাবাদ থেকে লন্ডনের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। কিন্তু উড়ান তোলার ঠিক পরপরই বিমানটি ভয়াবহ দুর্ঘটনার শিকার হয়। ২৪২ জনের মধ্যে ২৪১ জনের ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়।
এই ফ্লাইটেই ছিলেন শ্বেতা পরিহারের স্বামী ৪৩ বছর বয়সী অভিনব পরিহার। তিনি লন্ডনে নিজের বাড়ি ফিরছিলেন। শ্বেতা বলেন, “ও জুনের শেষদিকে লন্ডন ফেরার কথা ভেবেছিল। কিন্তু একটি কারণে তাড়াতাড়ি ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেয়। দুর্ভাগ্যবশত সেই কারণেই ওই ফ্লাইটে উঠেছিলে।
তিনি আরও বলেন, “পৃথিবীর কোনও রিপোর্টই আমার স্বামীকে আর ফিরিয়ে আনতে পারবে না।”
৫৯ বছর বয়সী বদসাব সৈয়দ এই দুর্ঘটনায় তার ভাই-বউদি এবং তাদের দুই সন্তানকে হারিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “আমরা রিপোর্ট দেখছিলাম। আমাদেরও একই প্রশ্ন, এই দুর্ঘটনার আসল কারণ কী ছিল? রিপোর্টে পাইলটদের শেষ কথোপকথনের উল্লেখ আছে, ফুয়েল কন্ট্রোল সুইচের কথাও বলা হয়েছে। কিন্তু আমরা ঠিক বুঝতে পারছি না, এর মানে কী? এটা কীভাবে দুর্ঘটনা রোধ করতে পারত?”