কিন্তু আটচল্লিশ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও এখনও শ্রীদেবীর মরদেহ এসে পৌঁছয়নি মুম্বইয়ে ৷ দুবাইয়ে দেহের ময়নাতদন্ত হলেও আরও একবার ময়নাতদন্তের জন্য মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডনবীশের কাছে আবেদন করলেন আইনজীবী ও সিনিয়র ক্রাইম রিপোর্টার এস.বালাকৃষ্ণণ ৷ মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ইমেল করে তিনি জানান, যে শ্রীদেবীর মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানে এক এক সময় এক একটি তথ্য উঠে এসেছে ৷ কখনও হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে আবার কখনও বা বাথটাবে জলে ডুবে অভিনেত্রীর মৃত্যু হয়েছে বলে দুবাই পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে ৷ তাই প্রশ্ন উঠছে যদি হৃদরোগে আক্রান্তই হন শ্রীদেবী তাহলে তাঁর ফুসফুসে জল ভরল কী করে ? এছা়ড়া রক্তে অ্যালকোহলও পাওয়া গিয়েছে ৷ তাই তিনি পুরপুরি নেশাগ্রস্ত ছিলেন না তো ? এর জন্য মহারাষ্ট্র সরকারের তরফে কোনও ডাক্তারকে দুবাইতে পাঠানো উচিৎ ছিল শ্রীদেবীর ময়নাতদন্ত হওয়ার সময় ৷ কিন্তু সেটা যখন হয়নি তখন শ্রীদেবীর মরদেহ মুম্বইয়ে পৌঁছনোর পর যেন অন্ত্যেষ্টি ক্রিয়ার আগে আরও একবার দেহ ময়নাতদন্ত করা হয় ৷ তাহলেই মৃত্যুর আসল কারণ পরিষ্কার হবে ৷
advertisement
‘‘ শ্রীদেবীর মৃত্যু ঘিরে জল্পনা ছড়াবেন না...’’, অনুরোধ UAE-তে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূতের
ভাগ্নে মোহিত মারওয়ার বিয়েতে ছোট মেয়ে খুশিকে নিয়ে দুবাইতে গিয়েছিলেন বনি কাপুর এবং শ্রীদেবী। বিয়ে মিটে যাওয়ার পর ছোট মেয়েকে নিয়ে মুম্বই ফিরে আসেন বনি কাপুর। দুবাইয়ের জুমেইরাহ এমিরেটস টাওয়ার্স হোটেলেই থেকে গিয়েছিলেন শ্রীদেবী। কিন্তু স্ত্রীকে সারপ্রাইজ দিতে শনিবার ফের দুবাই ফেরেন বনি কাপুর।
দুবাইয়ের স্থানীয় সময় সাড়ে পাঁচটা নাগাদ হোটেলে শ্রীদেবীর ঘরে পৌঁছন বনি কাপুর। দু-জনের মধ্যে মিনিট পনেরো কথা হয়। এই সময়ই শ্রীদেবীকে সারপ্রাইজ ডিনারের কথা বলেন বনি। রাজি হয়ে যান শ্রীদেবীও। এজন্য বাথরুমে ফ্রেশও হতে যান। কিন্তু অনেকটা সময় কেটে গেলেও শ্রীদেবী না বেরোনোয় আশঙ্কিত হয়ে পডে়ন বনি। ডাকাডাকি করেও সাড়া না পেয়ে বাধ্য হয়েই বাথরুমের দরজা ভেঙে ফেলেন বনি কাপুর। বাথরুমে ঢুকে তিনি দেখেন, বাথটবে অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে রয়েছেন শ্রীদেবী। শ্রীদেবীর জ্ঞান ফেরানোর চেষ্টাও করেন বনি। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। এরপর দুবাইয়ে এক বন্ধুকে ফোন করেন বনি। স্থানীয় সময় রাত ন-টা নাগাদ পুলিশকে ফোন করেন। শ্রীদেবীকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
কিংবদন্তী অভিনেত্রীর এমন আকস্মিক মৃত্যুর পর তাঁর গুণমুগ্ধদের মনে বেশকিছু প্রশ্ন উঁকি দিতে শুরু করে। কিন্তু ময়নাতদন্ত এবং ফরেনসিক পরীক্ষার রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতেই সব কৌতূহলের অবসান। দুবাই পুলিশের দাবি, শ্রীদেবীর মৃত্যু নিছক একটি দুর্ঘটনা। ফরেনসিক রিপোর্টে জানানো হয়েছে,
- হৃদরোগে আক্রান্ত হননি শ্রীদেবী
- অত্যধিক মদ্যপান করেছিলেন তিনি
- নেশাগ্রস্ত অবস্থায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাথটবে পড়ে যান
- জলে ডুবে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়
- শ্রীদেবীর রক্তেও মিলেছে অ্যালকোহল
অভিনেত্রীর মৃত্যু কীভাবে ঘটেছিল ? তা নিশ্চিত করতে ফরেনসিক পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষায় দেরির কারণে কাপুর পরিবারের প্রয়াত অভিনেত্রীর দেহ পেতে দেরি হচ্ছিল। কিন্তু ফরেনসিক পরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়ার পরেও শ্রীদেবীর মরদেহ ভারতে পৌঁছতে কেন এত দেরি হচ্ছে, তা নিয়ে স্বভাবতই উদ্বেগ তৈরি হয়েছে ৷