মঙ্গলবার বেঙ্গালুরুতে বিরোধী শিবিরের বৈঠক এবং জোট ঘোষণা বিজেপি-র উপরে যে চাপ বাড়িয়েছিল, তা বলার অপেক্ষা রাখে না৷ অতীতে অবিজেপি দলগুলির এমন জোট খুব একটা সাফল্যের মুখ না দেখলেও গত একমাসে বিরোধী শিবিরে জোট বাঁধার তৎপরতা অনেকটাই সফল হয়েছে৷ বিশেষত বেঙ্গালুরুর বৈঠকের পর সেকথা বলাই যায়৷ তার উপরে কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূল, আপের মতো দলগুলির সংঘাতও আপাতত দূর হয়েছে৷ এই মুহূর্তে বিজেপি-কে হারাতে বিরোধীরা এককাট্টা৷ তবে পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্যে আসন রফার ফর্মুলা কী হবে, সেটা খুঁজে বের করাই এখন বিরোধী শিবিরের মূল পরীক্ষা৷
advertisement
বিরোধীদের জোট শেষ পর্যন্ত ফলপ্রসূ হোক না হোক, তৃতীয় বার ক্ষমতায় ফিরতে এখন থেকেই ঝাঁপাচ্ছেন নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহরা৷ বিরোধীদের জবাব দিতেই তাই দিল্লিতে মঙ্গলবার শক্তি জাহির করতে এনডিএ-র বৈঠক ডেকেছিল বিজেপি নেতৃত্ব৷ সেখানে গত বিধানসভা ভোটে বিহারে মুখ থুবড়ে পড়া লোক জনশক্তি দলের নেতা চিরাগ পাসওয়ানকেও আলিঙ্গন করতে দেখা গিয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে৷ বার্তাটা পরিষ্কার, বিরোধীদের ভোট কাটতে পারবে এ রকম ছোটখাটো দলকেও আপাতত দলে টেনে পাল্লা ভারী করার দিকে জোর দিচ্ছেন মোদি-শাহ-নাড্ডারা৷ বিশেষত যে রাজ্যগুলিতে বিজেপি শক্তিশালী নয়, সেখানে শরিকদের উপরই ভরসা করতে হবে মোদি-শাহদের৷
কর্ণাটকে ধাক্কা খাওয়ার পরই ২০২৪ নিয়ে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের কপালে চিন্তার ভাঁজ বেড়েছে৷ প্রত্যাশিত ভাবেই মুখে সেকথা স্বীকার করছেন না তাঁরা৷ আবার কর্ণাটকের বিজেপি বিরোধী হাওয়া এবার অন্যান্য রাজ্যেও তৈরি করা বিরোধীদের লক্ষ্য৷ বিজেপি বিরোধী ভোটকে এক জায়গায় নিয়ে আসাই এখন বিরোধীদের কাছে চ্যালেঞ্জ৷ একদিকে নরেন্দ্র মোদি যখন বিরোধীদের জোটকে দুর্নীতিগ্রস্তদের, পরিবারতন্ত্রের জোট বলে আক্রমণ করছেন তখন বিরোধীরা জোটের নাম ইন্ডিয়া দিয়ে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে দেশকে ভাঙার অভিযোগে সরব হয়েছেন৷
লোকসভা ভোটের আগামী কয়েক মাসে ছত্তীসগড়, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, তেলেঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশা সহ বেশ কয়েকটি রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে৷ ফলে এই রাজ্যগুলির ফলাফল কী হয়, সেদিকেও অধীর আগ্রহে তাকিয়ে রয়েছে রাজনৈতিক মহল৷ সবমিলিয়ে গতকালকের পর ২০২৪-কে পাখির চোখ করে শাসক- বিরোধী শিবিরের তৎপরতা যে আরও বাড়বে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না৷ মঙ্গলবারের পর যে লড়াইকে এনডিএ বনাম ইন্ডিয়ার লড়াই বললেও ভুল হবে না৷