মাদক, ব্ল্যাকমেল, যৌন হেনস্তা আর রাজনীতির অন্ধকার যোগসূত্রে বোনা এই জাল কতদূর ছড়িয়ে আছে, আর কে সেই অদৃশ্য সুতো টানছে আড়াল থেকে—এখন সেই উত্তর খুঁজছে পুলিশ।
নিউ গড়িয়ার অভিজাত আবাসনে খুন! খাটের তলায় উঁকি দিতেই ভয়ঙ্কর দৃশ্য! গৃহকর্ত্রীর এ কী অবস্থা
রেলযাত্রীদের জন্য সুখবর! ২২ অগাস্ট থেকে চালু হচ্ছে নতুন লোকাল ট্রেন! কোন রুটে দেখে নিন
advertisement
ভোপালের কুখ্যাত ‘মছলি গ্যাং’-এর বিরুদ্ধে বড়সড় পদক্ষেপ নিল প্রশাসন। মাদক পাচার ও ধর্ষণের মামলায় অভিযুক্ত ইয়াসিন এবং শাহওয়ার মাছলির পরিবারের বিলাসবহুল তিনতলা প্রাসাদে বুলডোজার চালাল পুলিশ ও পৌর প্রশাসন। এর ফলে ফের প্রকাশ্যে এল মাছলি গ্যাংয়ের অপরাধ সাম্রাজ্য।
এই গ্যাং মূলত সোহেল, শহরিয়ার, শফিক, শাহিদ এবং শাবেজকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে। এরা যৌথভাবে গ্যাং পরিচালনা করে এবং তাদের বিরুদ্ধে একাধিক গুরুতর অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগের তালিকায় যৌন হেনস্তা, অপহরণ, মাদক পাচার এবং ব্ল্যাকমেলের মতো অভিযোগ রয়েছে। মাদক মামলায় শাহওয়ার মাছলি এবং তার ভাইপো ইয়াসিনকে ক্রাইম ব্রাঞ্চ ভোপালের গামন মলের কাছে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করে। তাদের কাছ থেকে তিন গ্রাম এমডি ড্রাগ এবং একটি দেশি পিস্তল উদ্ধার করা হয়। তদন্তে জানা যায়, তারা রাজস্থান থেকে মাদক এনে ভোপালের বিভিন্ন পাব ও লাউঞ্জে পুরনো এবং বিশ্বস্ত গ্রাহকদের কাছে সরবরাহ করত।
ইয়াসিনের মোবাইল ফোন থেকে একাধিক ভিডিও উদ্ধার হয়েছে, যেখানে তরুণদের কাপড় খুলিয়ে নির্মমভাবে মারধর করা হচ্ছে। এছাড়া তরুণীদের অশ্লীল ভিডিও-ও পাওয়া গিয়েছে। পুলিশি হেফাজতে তারা একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস করেছে।
গ্রেপ্তারের পর পুলিশ মাছলি পরিবারের নামে প্রায় একশো কোটি টাকার অবৈধ সম্পত্তি চিহ্নিত করেছে। এই সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে ফার্মহাউস, গুদামঘর, বিয়ের হল এবং মাদ্রাসা। সবকিছুই সরকারি জমি দখল করে তৈরি করা হয়েছিল। সম্প্রতি প্রশাসন একাধিক অবৈধ নির্মাণে বুলডোজার চালানো শুরু করেছে। আজই পৌরনিগম ও পুলিশের দল ছয়টি জেসিবি ও পক্লেন মেশিন নিয়ে ইয়াসিনের অবৈধ প্রাসাদ ভাঙার কাজে নামে। এই বাড়িটি তৈরি হয়েছিল পনেরো হাজার বর্গফুট সরকারি জমির উপর।
এই ‘ফিশ হাউস’ নামে পরিচিত বাড়িটি নির্মাণ করা হয়েছিল ১৯৯০ সালে। তিনতলা এই প্রাসাদে ছিল ত্রিশটিরও বেশি ঘর, সঙ্গে ছিল গ্যারেজ, পার্ক এবং দোলনা। বাড়িটির আনুমানিক বাজারমূল্য বিশ থেকে পঁচিশ কোটি টাকা হলেও পুরো নির্মাণই করা হয়েছিল দখলকৃত সরকারি জমির উপর।
এদিকে এই ঘটনায় রাজনৈতিক যোগসূত্রও সামনে এসেছে। পরিবারের সদস্য শফিক আহমেদ বিজেপি সংখ্যালঘু মোর্চার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। কিন্তু এই কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে আসার পর তাঁকে পদত্যাগ করতে হয়েছে। এখন পুলিশের তৎপরতা মূলত গ্যাংয়ের আসল ‘মাস্টারমাইন্ড’-কে খুঁজে বের করার দিকে, যিনি ইয়াসিনের থেকেও বড় মাথা বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।